প্রতিটি মেয়ে যেন তার স্বপ্ন অনুসরণ করতে পারে: করভি রাকসান্দ

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:১১ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান করভি রাকসান্দ বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা যেখানে প্রতিটি মেয়ে তার স্বপ্ন অনুসরণ করতে পারে এবং সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।
তিনি বলেন ‘জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট বিশ্বাস করে যে শিক্ষা পৃথিবী পরিবর্তনের সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার। মালালা ফান্ডের 'অদম্য' প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা কন্যাশিশুদের শিক্ষার মান উন্নয়নে কাজ করছি।’
কিশোরগঞ্জ বৈচিত্র্যময় ভূ-প্রকৃতির এক সমৃদ্ধ জেলা হলেও নারী শিক্ষা, বাল্যবিবাহ, নারী ও শিশু নির্যাতন ও সহিংসতা এবং সামাজিক বৈষম্যের সূচকে পিছিয়ে আছে। এই বিষয়গুলোকেই সামনে রেখেই মালালা ফান্ডের অর্থায়নে এবং জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট কর্তৃক পরিচালিত ‘অদম্য (অপারেটিং ডাইভারসিফাইড অপারচুনিটিস ইন ম্যাস-মিটিগেশন অব অবস্ট্যাকলস অফ গার্লস এডুকেশন)’ প্রকল্পের আওতায়, কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলায় শিক্ষা ক্ষেত্রে মেয়েদের প্রতিবন্ধকতা এবং উত্তরণের উপায় শীর্ষক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
‘অদম্য’ প্রকল্পের আওতায়, বিদ্যালয়ে কন্যাশিশুদের ভর্তি বৃদ্ধি, নারী শিক্ষা ও জেন্ডার ভিত্তিক বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে কমিউনিটি ভিত্তিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং গার্লস ক্লাব গঠন করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের এসটিইএম, এসইএল এবং কমপিটেন্স বেইজড লার্নিং এর মাধ্যমে শিক্ষাগত সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া, বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং এসএমসি সদস্যদের জেন্ডারবান্ধব শিক্ষার পরিবেশ ও মনিটরিংয়ে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কর্মশালা ও প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে। প্রকল্পের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ, যৌন হয়রানি এবং জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে শিক্ষার্থীদের সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি, স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রদান এবং মাসিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে সচেতনতা তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
সভার মূল আলোচনায় মেয়েদের শিক্ষার প্রতিবন্ধকতা এবং উত্তরণের উপায় নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়। এছাড়াও প্রকল্পের লক্ষ্য ও কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হয়।
জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মামুন অর রশিদ বলেন, ‘সমাজে প্রকৃত পরিবর্তন আনতে আমাদের শিক্ষার প্রসার এবং নারীদের অধিকারকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। যদিও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, নারীদের এবং শিশুদের কল্যাণ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের অঙ্গীকারবদ্ধ থাকতে হবে। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর নারীদের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ ও সেবা নিশ্চিত করতে এবং সঠিক সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের স্থানীয় কমিউনিটিগুলোর সঙ্গে আরো বেশি সম্পৃক্ত হতে হবে এবং নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। সঠিক প্রচারণার মাধ্যমে আমরা সহিংসতা কমাতে এবং সবার জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করতে পারব।’
জাগো ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের এডুকেশন চ্যাম্পিয়ন কামরুল কিবরিয়া অয়ন বলেন ‘মিঠামইনের মতো প্রত্যান্ত অঞ্চলে যেখানে উন্নত মানের শিক্ষার সুযোগ খুবই সীমিত, অদম্য প্রকল্পটি মেয়েদের শিক্ষা সহায়ক নীতির পক্ষে প্রচার, নিরাপদ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করা এবং মেয়েদের শিক্ষার গুরুত্ব বাড়ানোর জন্য একটি শক্তিশালী অনুঘটক হিসেবে কাজ করছে।’
অদম্য প্রকল্পের একজন উপকারভোগী তাসমিয়া মিম বলেন, ‘গার্লস ক্লাবের সদস্য হয়ে আমি আত্মবিশ্বাসী ও সচেতন হতে পেরেছি। এখন আমি আমার স্কুলের অন্য মেয়েদের মধ্যেও সচেতনতা ছড়াতে সাহায্য করছি। গার্লস ক্লাবের কার্যক্রম আমাকে নিজেকে আরো দক্ষ করে তুলেছে, যা আমার চারপাশের মানুষদের জন্যও উপকারি।’
অদম্য প্রকল্পের মাধ্যমে কন্যাশিশুদের শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি এবং বাল্যবিবাহসহ বিভিন্ন সামাজিক বাধা দূর করার লক্ষ্যে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়ন ও সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তন সাধন সম্ভব হবে।