ত্রিভূজ প্রেমের বলি
কলেজ ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৩

খোরশেদ আলম, শেরপুর থেকে
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৩২ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
নিখোঁজের ৭ দিনপর ত্রিভুজ প্রেমের বলি শেরপুর সরকারী কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমন মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। সোমবার (১১ নভেম্বর) রাতে শহরের সজবরখিলা এলাকার রবিনের বাড়ি থেকে সুমনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, আন্নি আক্তার (১৯) নামে এক কলেজ ছাত্রী প্রেম করতো রবিন ও সুমনের সঙ্গে। কিন্তু একজনকে তো ছাড়তে হবে তাই প্রেমিকা আন্নি আক্তার রবিনের সহযোগিতায় গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় সুমনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে রবিন তার নিজ বাসায় নিয়ে আন্নি আক্তার ও রবিনের কতিপয় সহযোগীর সহযোগীতায় সুমনকে হত্যা করে রবিনের বাড়ির আঙ্গিনায় মাটিতে পুঁতে রাখে।
অপহরণের ৭ দিন পর সোমবার গভীর রাতে ওই মরদেহ মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করে পুলিশ। সুমন শহরের কসবা বারাকপাড়া নিমতলা এলাকার কৃষক নজরুল ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় প্রেমিকা আন্নি আক্তার, প্রেমিকার বাবা আজিম উদ্দিন ও অপর প্রেমিক রবিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় ওই দিন সুমনের বাবা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। কয়েক দিনেও সুমনের সন্ধান না পেয়ে রবিবার তার মা-বাবা, স্থানীয় এলাকাবাসী ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কয়েকজন শিক্ষার্থী পুলিশ সুপারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সুমনকে উদ্ধার ও ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
আরো পড়ুন: গাছের সঙ্গে প্রাইভেটকারের ধাক্কা, চালকসহ নিহত দুই
পরে রাতেই অভিযোগটি এজাহারভুক্ত করে শহরের বাগরাকসা কাজীবাড়ি পুকুরপাড় এলাকা থেকে আন্নির পিতা শিক্ষক আজিম উদ্দিন ও প্রেমিকা আন্নি আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আন্নির দেয়া তথ্যে ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ময়মনসিংহ থেকে আন্নির অপর প্রেমিক পুলিশ সদস্য ফোরকান আলীর ছেলে রবিনকে আটক করে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ঘটনার জট খুলে যায়।
পরে সোমবার গভীর রাতে শেরপুর শহরের সজবরখিলাস্থ রবিনের বাড়ির উঠানে তার দেখানো জায়গা থেকে সুমন মিয়ার লাশ মাটি খুঁড়ে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নিহত সুমনের স্বজনরা আন্নি ও রবিনসহ জড়িতদের ফাঁসি দাবি করেন।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, সুমন ও আন্নির মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং অপহরণের পর আন্নি সুমনকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিয়ে যায় রবিনের বাড়িতে। অন্যদিকে রবিনের সঙ্গেও প্রেমের সম্পর্ক ছিল আন্নি আক্তারের। ত্রিভূজ এ প্রেমের বলি বানাতেই সুমনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়।
শেরপুরের পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে রবিনের ফোনের সর্বশেষ অবস্থান ময়মনসিংহ থেকে অভিযুক্ত রবিনকে আটক করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যমতে তাদেরই বাসার আঙিনা থেকে মাটিচাপা অবস্থায় সুমনের লাশ উদ্ধার করা হয়।