‘সম্পূর্ণ বিজয়’ না হওয়া পর্যন্ত গাজায় যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘে দেয়া এক ভাষণে এ ঘোষণা দিয়েছন তিনি। খবর তাসের।

ভাষণে নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসকে চলে যেতে হবে এবং গাজার পুনর্গঠনে তাদের কোনো ভূমিকা থাকবে না। হামাস যদি ক্ষমতায় থাকে, তবে এটি আবার সংগঠিত হবে এবং বারবার ইসরায়েল আক্রমণ করবে। তাই হামাসকে চলে যেতে হবে।

তিনি বলেন, ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী গাজায় হামাসের ৪০ হাজার সদস্যের অর্ধেকেরও বেশি হত্যা বা বন্দী করেছে, তাদের রকেট অস্ত্রাগারের প্রায় ৯০% ধ্বংস করেছে এবং হামাসের ২৪ ব্যাটালিয়নের মধ্যে ২৩টি নির্মূল করেছে।

বিশ্ব নেতৃবৃন্দের উদ্দেশে তিন বলেন, লেবানন সীমান্তে তাদের লক্ষ্য অর্জন না করা পর্যন্ত হামলা অব্যাহত থাকবে। তার কথায়, ইসরায়েলের এই হুমকি (হামাস ও হিজবুল্লাহ‍‍`র হামলা) দূর করার এবং আমাদের নাগরিকদের নিরাপদে বাড়িতে ফেরত দেয়ার অধিকার রয়েছে এবং আমরা ঠিক এটিই করছি ... আমাদের সব উদ্দেশ পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা হিজবুল্লাহ প্রতিরোধ করে যাবো।

আরো পড়ুন : ইসরায়েলের বিমান হামলা, বেঁচে আছেন হিজবুল্লাহ প্রধান

এর আগে ইসরায়েলর প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেয়া শুরু করে ওয়াক আউট করেন তুর্কি প্রতিনিধিসহ অনেক দেশের প্রতিনিধিরা।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। এ হামলার জবাবে পাল্টা হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এরপর থেকে এ যুদ্ধ শুরু হয়। এরপর থেকে গাজার ওপর বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে বর্বর ইসরায়েল। এমনকি তাদের হামলা থেকে রেহাই পায়নি হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদসহ ধর্মীয় স্থাপনাও।

জাতিসংঘের সংস্থাগুলো বলছে, ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে গাজার ৯০ শতাংশ বাসিন্দা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এ ছাড়া সেখানকার কয়েক লাখ মানুষ বিপর্যকর ক্ষুধার সম্মুখীন। এমনকি উপত্যকাটির বেশির ভাগ হাসপাতালও বন্ধ।

সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে গাজার ২০ লাখ বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। দেশটির হামলার কারণে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা।

জাতিসংঘের তথ্যমতে, ইসরায়েলে হামলায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন গাজার ৮৫ শতাংশ বাসিন্দা। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি আর ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাচ্ছেন তারা। এ ছাড়া ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক আদালতে গাজায় গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে দেশটি।