পাঠকের ভালোবাসায় জীবন্ত হুমায়ূন আহমেদ

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২২, ০৯:২৪ এএম

ছবি: ভোরের কাগজ
কথার জাদুকর হুমায়ূন আহমেদ। কালের সীমানা অতিক্রম করে অনিবার্য উপস্থিতিতে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে জনপ্রিয়তার এক নজিরবিহীন প্রতীক তিনি। জীবন ও মৃত্যুতে নিমগ্ন সাহিত্য সাধনার দৃষ্টান্ত। মৃত্যুর পরও পাঠকের নন্দিত ভালোবাসায় জীবন্ত বাংলাভাষীদের কাছে। তিনি সার্বভৌম অস্তিত্বে বিরাজমান বৃহত্তর বাংলা সাহিত্যের প্রবহমানতার মূলস্রোতে। হুমায়ূন আহমেদ এক প্রকার অকালেই প্রয়াত হয়েছেন। কিন্তু বাংলার জ্যোৎস্নাময় আকাশে তিনি চিরদিনই থেকে যাবেন তার সৃষ্টির বৈভবে।
বাঙালির হৃদয়নন্দিত এই কথাশিল্পীর ৭৪তম জন্মদিন আগামী ১৩ নভেম্বর রবিবার। এ উপলক্ষে বাংলা একাডেমি গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে এই কথাসাহিত্যিকের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে একক বক্তৃতানুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে ‘জোছনার কবি হুমায়ূন আহমেদ: মানুষ ও লেখক’ শীর্ষক একক বক্তৃতা এবং ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনা করেন লেখক, নাট্যকার ও চলচ্চিত্রকার শাকুর মজিদ। বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির সচিব এএইচএম লোকমান।
একক বক্তা শাকুর মজিদ বলেন, হুমায়ূন আহমেদ শুধু একজন লেখকই নন, তিনি একাধারে শিক্ষাবিদ, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক, গীতিকার, নাট্যকার এবং সর্বোপরি একজন স্বপ্নবান মানুষ। তিনি জীবনের বৈচিত্র্যকে সাহিত্যে সার্থক রূপ দিয়েছেন। দশকের পর দশক তার এক একটি বইয়ে তিনি নিজেকে অতিক্রম করে গেছেন। সাহিত্যের সমান্তরালে হুমায়ূন আহমেদ টেলিভিশন নাটক এবং চলচ্চিত্রে নিজের দক্ষতা এবং নতুনত্বের প্রমাণ রেখেছেন।
তিনি আরো বলেন, বাংলার চিরায়ত প্রকৃতির শাশ্বত আলো, ছায়া, মেঘ, বৃষ্টি আর জ্যোৎস্নার মতোই বাংলার, বাঙালির একজন হুমায়ূন আহমেদ আছেন। মৃত্যুর পরও তিনি অতীত কাল ছুঁয়ে ‘ছিলেন’ হয়ে যাননি। ঘটমান বর্তমানের নিরিখে ‘আছেন’ হয়েই আছেন বহুমাত্রিক অনন্যতায়। তার কথার জাদুতে মোহিত হননি এমন বাঙালি পাঠক পাওয়া যাবে না।
কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, হুমায়ূন আহমেদের বৈচিত্র্যময় সাহিত্যকর্মে আমরা মানবমঙ্গলের সুর শুনতে পাই। তার গল্প ও উপন্যাসে এ দেশের মানুষের অসাধারণ মুখচ্ছবি অঙ্কন করেছেন তিনি, যা কখনো মলিন হওয়ার নয়। এএইচএম লোকমান বলেন, হুমায়ূন আহমেদ আমাদের সবার প্রিয় কথাশিল্পী। তার কথাসাহিত্যে এ দেশের মধ্যবিত্ত মানুষের চিরায়ত জীবন অসামান্য শিল্পব্যঞ্জনায় ভাস্বর হয়েছে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা একাডেমির উপপরিচালক ও গবেষক ড. সাইমন জাকারিয়া।