আলিফ হত্যা
আদালত চত্বরে পুলিশের ওপর হামলা, ১১ জন শ্যোন অ্যারেস্ট

চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:২৯ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১১ আসামিকে আরো একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মো. আবু বকর সিদ্দিক এ আদেশ দেন।
গ্রেপ্তার ১১ আসামি হলেন- প্রেমনন্দন দাশ (১৯), রনব দাশ (২৪), বিধান দাশ (২৯), বিকাশ দাশ (২৪), রুমিত দাশ, রাজ কাপুর (৫৫), সামির দাশ (২৫), শিব কুমার দাশ (২৩), ওম দাশ (২৬), অজয় দাশ (৩০) ও দেবী চরণ (৩৬)।
গ্রেপ্তার ১১ জনই আইনজীবী সাইফুল ইসলাম খুনের মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। তারা সবাই নগরীর বান্ডেল রোডের সেবক কলোনি এলাকার বাসিন্দা। গত ২৬ জানুয়ারি বিকেলে তাদেরকে সেবক কলোনি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সেদিন রাতেই আইনজীবী আলিফ খুনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী জানান, সনাতনী জাগরণ মঞ্চের সংগঠক চিম্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুরকে কেন্দ্র করে আইনজীবী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১১ আসামিকে আদালতে আনা হয়। তারা সবাই পুলিশের ওপর হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে হওয়া আরেকটি মামলার এজাহারনামীয় আসামি। ওই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করলে শুনানি শেষে আদালত মঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদেশের পর তাদের কড়া নিরাপত্তায় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, এদিন নিরাপত্তার স্বার্থে সকাল সকাল ওই ১১ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। প্রিজন ভ্যান থেকে নামিয়ে তাদেরকে এজলাসে নেয়ার সময় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা লক্ষ্য করা গেছে। শুনানি শেষে একইভাবে তাদের আবার কারাগারে নেয়া হয়।
গত ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রামে ফেরার পথে শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় ব্রক্ষ্মচারীকে তুলে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরদিন তাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। কোতোয়ালী থানায় হওয়া একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে তোলা হলে জামিন নামঞ্জুর করেন আদালত। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজনভ্যানে তোলা হয়। তখন চিন্ময়ের অনুসারীরা প্রিজন ভ্যান আটকে দেন। তারা এ সময় প্রায় তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) লাঠিপেটা করে ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়। পরে চট্টগ্রাম আদালত ভবনে প্রবেশপথের বিপরীতে রঙ্গম সিনেমা হলের গলিতে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় তার বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে নগরের কোতোয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। একইদিন আলিফের ভাই খানে আলম বাদী হয়ে ১১৬ জনকে এজাহারনামীয় করে বিস্ফোরণ আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করেন।
এর বাইরে আদালত এলাকায় সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করে। এসব মামলায় ৭৬ জনের নামসহ অজ্ঞাত ১ হাজার ৪০০ জনকে আসামি করা হয়। আইনজীবী খুনের ঘটনায় এ পর্যন্ত ২১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।