বিচারপতির কথা নিয়ে আপত্তি–হট্টগোল, বেঞ্চ পুনর্গঠন করলেন প্রধান বিচারপতি

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

ছবি: সংগৃহীত
হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চে বিচারপতির সঙ্গে আইনজীবীদের হট্টগোলের পর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বেঞ্চ পুনর্গঠন করেছেন। এই ঘটনার পর আইনজীবীদের পক্ষ থেকে প্রধান বিচারপতির কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়।
এদিন, আদালতে আইনজীবীরা তাদের নিজ নিজ মামলার কার্যতালিকা উত্থাপন করছিলেন। আদালতে শতাধিক আসামির আগাম জামিনের আবেদন শুনানির জন্য অপেক্ষা করছিল। এরই মধ্যে, ব্যারিস্টার আশরাফ রহমান মামলার কার্যতালিকায় অনিয়মের অভিযোগ তোলেন। অভিযোগটি শোনার পর বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খান রেগে যান এবং অশালীন মন্তব্য করেন। তার পরই দুই বিচারপতি বেঞ্চ থেকে বেরিয়ে যান, কোনো শুনানি না করেই।
আইনজীবীরা পরে প্রধান বিচারপতির কাছে একটি লিখিত অভিযোগ পাঠান। এতে বলা হয়, হাইকোর্ট বিভাগের মূল ভবনের ৭ নম্বর বেঞ্চে (ভ্যাকেশন এখতিয়ারাধীন) শুরু থেকেই মামলার কার্যতালিকা তৈরিতে ও শুনানিতে ব্যাপক অনিয়ম দেখা গেছে। এই বিষয়ে আইনজীবী সমিতির প্রতিনিধিরা আদালতকে অবহিত করলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
অভিযোগে বলা হয়, আজ (মঙ্গলবার) মেনশনের সময় আইনজীবীরা বিষয়টি আদালতের দৃষ্টিতে আনেন। ব্যারিস্টার আশরাফ রহমান আদালতকে জানান, আপনার আদালতের বেঞ্চ অফিসাররা অনিয়ম করে সকল জমাকৃত মামলা ঠিকমতো দৈনিক কার্যতালিকায় দেয়নি, যার ফলে অসংখ্য আইনজীবী বঞ্চিত হয়েছেন। এর পরেই বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খান ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং আইনজীবীকে বলেন, আমি বারের নেতা ছিলাম। তোমাকে কে সাহস দিছে আমার আদালতের বিরুদ্ধে কথা বলতে? আমার এজলাস থেকে বের হও, বেয়াদব, তোকে থাপ্পড় দিয়ে পুলিশে দিব।
এই ঘটনায় হট্টগোল সৃষ্টি হয় এবং অন্যান্য আইনজীবীরা বিষয়টি প্রতিবাদ করেন। বেঞ্চের দায়িত্বে থাকা ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (মাসুদ) এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, কোর্ট বসার পর সিনিয়র আইনজীবীরা মামলা মেনশন করছিলেন। এক আইনজীবী (ব্যারিস্টার আশরাফ) বলেন, অনেক মামলাই টাকার বিনিময়ে তালিকায় এসেছে। এই অভিযোগে আদালত রেগে যান এবং তার ব্যবহৃত ভাষা অনুচিত ছিল। এরপর অন্য আইনজীবীরা প্রতিবাদ করেন এবং হট্টগোল শুরু হয়। পরে আদালত কোনো মামলা না শুনে এজলাস ত্যাগ করেন।
আদালতে উপস্থিত আইনজীবী মো. উজ্জ্বল হোসেনও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিচারপতি আইনজীবীকে থাপ্পড় দেওয়ার কথা বলেন। তখন আইনজীবীরা তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান। পরে আদালত কোনো মামলা না শুনেই এজলাস ত্যাগ করেন।
আরো পড়ুন: বাংলাদেশের সংস্কারে সহায়তায় প্রস্তুত ইউরোপীয় ইউনিয়ন
এ ঘটনার পর প্রধান বিচারপতি বেঞ্চ পুনর্গঠন করেন এবং আইনজীবীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে পর্যালোচনা করার আশ্বাস দেন।