সাবেক বিচারপতি মানিকের ওপর ডিম ও জুতা নিক্ষেপ

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৫৪ পিএম

সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। ছবি: সংগৃহীত
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে গ্রেপ্তারের পর আদালতে নেয়া হয়েছে। শনিবার (২৪ আগস্ট) বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে সিলেটের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-১ আলমগীর হোসেনের আদালতে তাকে হাজির করা হয়। এ সময় সেখানে কয়েকজন লোক মানিকের ওপর ডিম ও জুতা ছুড়ে মারেন। পরে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাকে আদালতের ভেতর নেয়া হয়।
সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবীর শামীম জানান, সাবেক বিচারপতি মানিককে আদালতে তোলার সময় অনেকেই উত্তেজিত হয়ে তার দিকে ডিম ও জুতা ছুড়ে মারেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে কয়েকজন হামলারও চেষ্টা করেন। তবে দ্রুতই তাকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে আদালতের ভেতরে নিয়ে যায় পুলিশ।
কোর্ট ইন্সপেক্টর জামসেদ আলম জানান, ৫৪ ধারায় সাবেক বিচারপতি মানিককে আটক দেখিয়ে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার দনা সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন সাবেক এই বিচারপতি। স্থানীয় একজন তার পালানোর চেষ্টা দেখে বিজিবিকে খবর দেন। শনিবার ভোরে দনা সীমান্তের বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা তাকে আটক করে কানাইঘাট থানার পুলিশের হাতে তুলে দেন।
এ ঘটনায় সিলেট কোতোয়ালি থানার ওসি এসএম নুনু মিয়া জানান, সাবেক বিচারপতি মানিককে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বিজিবির ১৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আসাদুন নবী বলেন, অবৈধভাবে ভারতে পালানোর সময় দনা সীমান্ত থেকে তাকে আটক করা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে সাবেক বিচারপতি মানিককে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ১৯ আগস্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করায় নোয়াখালী আদালতে বিচারপতি মানিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলার অভিযোগে বলা হয়, তিনি জিয়াউর রহমানকে পাকিস্তানের চর হিসেবে আখ্যা দিয়ে মিথ্যাচার ও মানহানিকর বক্তব্য দেন, যা পরে প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক, এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত হয়।
আরো পড়ুন: ভারতে পালানোর সময় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পান্নার মৃত্যু
শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ১৯৭৮ সালে হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি হাইকোর্টে পুনর্বহাল হন এবং ২০১৩ সালে আপিল বিভাগের বিচারক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।
অবসরের পর তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে টেলিভিশন টকশো ও বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।