বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজারে এলেম আল ফায়দি এক শিক্ষানবিশ টেকনিশিয়ানকে গুলি করে হত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৩৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বুধবার (২২ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামের আদালতে বাদী হয়ে সামসুল আরেফিন নামে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের এক শিক্ষার্থী এ মামলা দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দী গ্রহণ করে সূত্রাপুর থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন ঢাকা বারের সভাপতি খোরশেদ আলম ভূঁইয়া। 

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার বাদী সামসুল আরেফিন বলেন, ‘ইতিহাসে একবিংশ শতাব্দীতে এমন নিষ্ঠুরতম ফ্যাসিস্ট, হত্যাকারী, অত্যাচারী, স্বৈরাচার আর আসেনি। যার নিষ্ঠুরতায় পুরো দেশ আজ ট্রমায় ভুগছে। যদিও সে পালিয়ে গেছে। আশা করি সুবিচারের মাধ্যমে সব অনাচারের অবসান ঘটবে। সমাজে ও রাষ্ট্রে সুবিচার আর মানবতা প্রতিষ্ঠায় বিচারের সংস্কৃতি নিশ্চিত করতে হবে।’

আরো পড়ুন : শেখ হাসিনাসহ ১৭৮ জনের বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় মামলা

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, গত ১৯ জুলাই লক্ষ্মীবাজার এলাকায় জুম্মা নামাজ আদায়ের পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি কবি নজরুল কলেজ, সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও সিটি করপোরেশন মহিলা কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরাসহ আপামর জনগণ সাথে নিয়ে বৈষম্যবিরোধী মিছিল শুরু হয়। বৈষম্যমুক্ত একটি মানবিক সমাজ গড়ার লক্ষ্যে স্লোগান দিয়ে রাজপথে অবস্থান করে। আসামিরা গণভবনে বসে তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের এবং আইন শৃংখলা বাহিনীকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রতিহত করার জন্য নির্দেশ দেয়। এরপর নামীয় আসামিরাসহ আরো ৫০/৬০ জন অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসী ও ফ্যাসিবাদী গ্রুপ হেলমেট পরে দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ পুলিশ বাহিনীর মাঠস্তরের ৬০/৭০ জন সশস্ত্র পুলিশ একযোগে শান্তিপ্রিয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে প্রতিহত করার লক্ষ্যে নিরীহ ছাত্র জনতার উপর এলোপাথারি গুলিবর্ষণ করে। এই গুলিতে দুপুর ২ টা ৫০ মিনিটের দিকে এলেম আল ফায়দি নামে একজন শিক্ষানবিশ টেকনিশিয়ান সরকারি কবি নজরুল কলেজের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়। গুলি লেগে মাথার মগজ বের হয়ে যায়।

মামলার এজাহারে আরো বলা হয়, বাদী একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র এবং ছাত্রদের অধিকার নিয়ে সবসময় সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে। বাদী চলমান ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে অন্যতম হলেন, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক কমিশনার ডিএমপি হাবিবুর রহমান, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ, অতিরিক্ত যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার, ওয়ারীর ডিসি ইকবাল হোসেন, ঢকা-৬ আসনের সাবেক এমপি আবু সাইদ খোকন, ঢাকা-৭ এর সাবেক এমপি সোলাইমান সেলিম, ৩৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুর রহমান মিয়াজী, ৩৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রঞ্জন বিশ্বাস, ৪৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আরিফ হোসেন ছোটন।