ইন্টারপোলের রেড নোটিসে নেই শেখ হাসিনা, আছে যেসব বাংলাদেশির নাম

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪০ এএম

ছবি : সংগৃহীত
সম্প্রতি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি হতে পারে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। তবে শেষ পর্যন্ত ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে শেখ হাসিনার নাম দেখা যায়নি। এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার ভারতকে একটি কূটনৈতিক চিঠি পাঠিয়েছে, যার মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। চিঠি ইতোমধ্যে নয়াদিল্লি পৌঁছেছে।
ইন্টারপোলের রেড নোটিস তালিকায় বাংলাদেশিদের অবস্থান
ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে সারা বিশ্বের ৬ হাজার ৬৫৮ জনের তালিকা রয়েছে। এই সাড়ে ছয় হাজারের মধ্যে ৬৩ জন বাংলাদেশি। দেশে বিদেশে অপরাধের অভিযোগে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের কর্তৃপক্ষ তাদের খুঁজছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ, আফ্রিকা ও বেলজিয়াম উল্লেখযোগ্য।
বাংলাদেশিদের বিরুদ্ধে বিদেশি রাষ্ট্রের অভিযোগ
সিঙ্গাপুর : চাঁদপুর সদরের রাজু ঢালীকে খুনের মামলায় খুঁজছে।
ইসতাওয়ানি (আফ্রিকা) : ঢাকার মো. মিলন ও লিটন ব্যাপারীকে খুনের অভিযোগে খুঁজছে।
দক্ষিণ আফ্রিকা : নোয়াখালীর মিজান মিয়াকে খুনের অভিযোগে খুঁজছে।
ভারত : মুদ্রা জালিয়াতির অভিযোগে খুলনার আজিজুর রহমান, অজয় বিশ্বাস ও তরিকুল ইসলামসহ আরও কয়েকজনকে খুঁজছে।
বেলজিয়াম : লক্ষ্মীপুরের খোরশেদ আলমকে খুনের মামলায় খুঁজছে।
মালয়েশিয়া : চোরাচালানির অভিযোগে নাটোরের সিরাজ মোস্তফা ও খুনের অভিযোগে ফেনীর আলা উদ্দিনকে খুঁজছে।
যুক্তরাষ্ট্র : যৌন নির্যাতনের অভিযোগে জাহিদুল ইসলাম এবং অস্ত্র মামলায় ফজলুল আমীন জাভেদকে খুঁজছে।
বাংলাদেশ যাদের খুঁজছে
বাংলাদেশ সরকার খুন, মানবপাচার, মুদ্রা জালিয়াতি, এবং অন্যান্য অপরাধে অভিযুক্ত ৬৩ জনকে খুঁজছে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য নামগুলো হলো:
হত্যার অভিযোগে ঢাকার নুর চৌধুরী, শরীফুল হক ডালিম, বরিশালের গোলাম ফারুক অভি, এবং মুন্সীগঞ্জের রফিকুল ইসলাম। মানবপাচার অপরাধে কিশোরগঞ্জের জাফর ইকবাল, স্বপন, মিন্টু মিয়া, এবং মাদারীপুরের মোল্লা নজরুল ইসলাম।
অস্ত্র মামলায় চট্টগ্রামের গিয়াস উদ্দিন। জালিয়াতির অভিযোগের জামালপুরের আমানুল্লাহ এবং আতাউর রহমান।
ইন্টারপোলের কার্যক্রম
ইন্টারপোল, ১৯২৩ সালে প্রতিষ্ঠিত, বর্তমানে ১৯৬টি দেশের সদস্য নিয়ে গঠিত। এই সংস্থা আন্তর্জাতিক অপরাধ তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যখন কোনো দেশের আসামি অপরাধের পর অন্য দেশে পালিয়ে যায়, তখন ইন্টারপোল সেই ব্যক্তিকে ধরতে সহায়তা করে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের কর্তৃপক্ষকে অপরাধীর যাবতীয় তথ্যসহ রেড নোটিসের জন্য আবেদন করতে হয়। ইন্টারপোল সদর দপ্তর সেই তথ্য যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়।
অতীতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে আসামি প্রত্যাবাসন
গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ইন্টারপোলের সহায়তায় ১৭ জন অভিযুক্ত আসামিকে বাংলাদেশে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে।
ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারির প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল এবং এটি সংশ্লিষ্ট দেশের সরবরাহকৃত তথ্যের উপর নির্ভর করে। শেখ হাসিনার বিষয়ে বিতর্ক চলমান থাকলেও, ইন্টারপোলের তালিকায় তার নাম নেই। বাংলাদেশ সরকার কূটনৈতিকভাবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছে।