বিশ্বে প্রথম ফুসফুস ক্যান্সারের টিকার পরীক্ষা শুরু

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২৪, ০৪:৫৩ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
ফুসফুসের ক্যানসার বিশ্বে মৃত্যুর প্রধান কারণ। এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে রোগিদের মধ্যে বিশ্বের প্রথম ফুসফুস ক্যানসারে এমআরএনএ টিকার পরীক্ষা শুরু করেছেন চিকিৎসকরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকাটির পরীক্ষা সফল হলে তা হবে এক যুগান্তকারী উদ্ভাবন। এতে ক্যানসারে থেকে লাখ লাখ মানুষের জীবন রক্ষা পাবে। দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
প্রতি বছর এই ক্যানসারে রোগে প্রায় ১.৮ মিলিয়ন (১৮ লাখ) মৃত্যু হয়। কারণ ফুসফুস ক্যানসার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেলে এবং টিউমার বেশি ছড়িয়ে পড়লে রোগীদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কমে যায়। বিশেষজ্ঞরা এই নতুন টিকার মাধ্যমে শরীরকে নির্দেশ দেয়, ক্যানসার কোষগুলোকে খুঁজে বের করে মেরে ফেলতে। এছাড়া তা আবার ফিরে আসতেও বাধা দেয়।
বিএনটি১১৬ নামের এই টিকা বানিয়েছে বায়োএনটেক। নন-স্মল সেল লাং ক্যানসারের (এনএসসিএলসি) চিকিৎসার জন্য এই টিকা বানানো হয়েছে। ফুসফুসের এই ধরনের ক্যানসারেই সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়। বিএনটি১১৬-এর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রথম ধাপের ক্লিনিকাল ট্রায়াল ৭টি দেশের ৩৪টি গবেষণা কেন্দ্রে চালানো হবে।
দেশগুলো হলো-যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, স্পেন ও তুরস্ক। যুক্তরাজ্যের ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে রয়েছে ৬টি গবেষণা কেন্দ্র। গত মঙ্গলবার প্রথম যুক্তরাজ্যের একজন রোগী তার প্রথম ডোজের টিকা গ্রহণ করেছেন। যুক্তরাজ্য থেকে ২০ জন রোগীর ওপর এই পরীক্ষা চালানো হবে। সামগ্রিকভাবে সর্বমোট প্রায় ১৩০ জন রোগীকে এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করানো হবে।
সার্জারি বা রেডিওথেরাপির আগের প্রাথমিক পর্যায় থেকে শুরু করে শেষ পর্যায়ের রোগীদের ওপর এই পরীক্ষা চালানো হবে। ইমিউনোথেরাপির পাশাপাশি তাদের এই টিকাটিও দেওয়া হবে। টিকাটি কোভিড-১৯ টিকার মতোই মেসেঞ্জার আরএনএ (এমআরএনএ) ব্যবহার করে কাজ করবে। টিকাটি ক্যানসারের কোষগুলোকে শনাক্ত করে সেগুলোকে নির্মূলের জন্য শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করবে। এটি কেমোথেরাপির মতো স্বাস্থ্যকর কোনও কোষের ক্ষতি করবে না। ভালো কোষগুলোকে স্পর্শ না করেই ক্যানসার রোগীর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করাই এর মূল লক্ষ্য।
লন্ডনের ৬৭ বছর বয়সী জ্যানুসজ্ র্যাকজ্ যুক্তরাজ্যের প্রথম ব্যক্তি যিনি প্রথম টিকাটি পেয়েছেন। গত মে মাসে প্রথম তার ফুসফুস ক্যানসার ধরা পড়ার পর থেকেই তিনি কেমোথেরাপি এবং রেডিওথেরাপি নেয়া শুরু করেছিলেন।