রাশিয়ায় ১ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ন্ত্রণের দাবি করছে ইউক্রেন

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৩০ এএম

কুরস্ক এলাকায় ইউক্রেনের হামলা। ছবি: সংগৃহীত
রাশিয়ার অন্তত ১ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ন্ত্রণের দাবি করেছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের শীর্ষ কমান্ডার অলেক্সান্ডার সিরস্কি সোমবার (১২ আগস্ট) বিবিসিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গত আড়াই বছরের যুদ্ধে এটি ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় অর্জন। রাশিয়ার সীমান্ত অভ্যন্তরে আমাদের সেনাদের অভিযান ৭ দিন অতিবাহিত হয়েছে, তারা স্পষ্টতই এখন চাপে আছে। কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেন তার হামলা অব্যাহত রেখেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়া আমাদের ওপরে যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিলো এখন আমরা তাদেরকে সেটি ফিরিয়ে দিচ্ছি। পুতিন যতই যুদ্ধ করতে চাক না কেন আমরা রাশিয়াকে শান্তি স্থাপনে বাধ্য করবো।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এই হামলাকে উসকানি হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি রুশ বাহিনীকে বলেন, আমাদের ভূখণ্ড থেকে শত্রুকে লাথি মেরে তাড়িয়ে দেয়ার সময় এসেছে।
ইউক্রেনের দখলে থাকা অঞ্চলটির গভর্নর ব্যাচেস্লাভ গ্ল্যাডকভ বলেছেন, আমরা আক্রান্ত এলাকাটি থেকে অন্তত ৫৯ হাজার লোককে সরিয়ে নিয়েছি। ২৮টি গ্রাম ইতোমধ্যে ইউক্রেনীয় বাহিনীর হাতে চলে গেছে, এতে অন্তত ১২ বেসামরিক রুশ নাগরিক নিহত হয়েছেন। এখানে পরিস্থিতি খুবই কঠিন অবস্থায় রয়েছে।
ব্যাচেস্লাভ গ্ল্যাডকভ বলেন, আমরা অঞ্চলটি থেকে আরো ১ লাক ২১ হাজার লোককে নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। যদিও অধিকৃত অঞ্চলটিতে এখনো ২ হাজারের মত রুশ নাগরিক আটকা পড়ে আছেন।
তিনি বলেন, আমরা স্থানীয়দের ইউক্রেনের মিসাইল হামলা থেকে রক্ষা করতে ক্ষেপণাস্ত্র সতর্কতা জারি করেছি। তাদেরকে বলা হয়েছে হামলা থেকে রক্ষা পেতে বেজমেন্টে আশ্রয় নিতে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্রিটিশ সামরিক সূত্র বিবিসিকে বলেছে মঙ্গলবার রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা শুরুর পর তারা নতুন করে বিপদ ডেকে এনেছে। এর ফলে মস্কো এতোটাই ক্ষুব্ধ হবে যে বেসামরিক জনসংখ্যা এবং অবকাঠামোর উপর তার নিজস্ব হামলা দ্বিগুণ করতে পারে।
রুশ প্রেসিডেন্ট সোমবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত মন্তব্যে বলেন, আমাদের শত্রুদের স্পষ্ট লক্ষগুলো হলো বিভেদ ও কলহ সৃষ্টির মাধ্যমে সাধারণ রুশ নাগরিকদের ভয় দেখানো। রাশিয়ার সমাজব্যবস্থার ঐক্য ও সংহতি নষ্ট করা।
রুশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি বলেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্দেশ্য হবে আমাদের ভূমি থেকে শত্রুদের বিতাড়িত করা।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন সিনেটর লিন্ডকে গ্রাহাম ইউক্রেনের এই হামলাকে সাহসী পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেছেন। এসময় তিনি বাইডেন প্রশাসনের প্রতি ইউক্রেনকে সহায়তার আহ্বান জানান।
ইতোমধ্যে রাশিয়ার অভ্যন্তর থেকে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইউক্রেন কিভাবে কুরস্ক অঞ্চলে প্রবেশ করলো।
আরো পড়ুন: বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে রাশিয়া
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী সময়মতই তার কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখাবে। আমরা এখনো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।
এদিকে, রাশিয়ার মিত্র বেলারুশ তার আকাশসীমায় রুশ ড্রোন প্রবেশের অভিযোগ করেছে। এ দাবির পরপরই তারা সীমান্তে সেনা সংখ্যা বাড়ানো শুরু করেছে।