২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধের দাবি জানাল যুক্তরাষ্ট্রের ইউনাইটেড হিন্দুস

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০ আগস্ট ২০২৪, ০৯:০৭ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশে অব্যাহত হিন্দু নির্যাতন শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের কাছে দাবি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনাইটেড হিন্দুস।
তারা বলেন, দাবি পূরণ না হলে বৃহত্তর অন্দোলনের ডাক দেবেন, যেমনটা করেছিলেন ২০২১ সালের পুজোর সময়কার নির্যাতনকালে, আর তাতে যদি দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় তাহলে এর দায় বহন করতে হবে সরকারকে। বাংলাদেশে চলমান সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে এবং ওইদিনই বিকেল সাড়ে ৫টায় টাইম স্কয়ারে ইউনাইটেড হিন্দুস অফ ইউ.এস.এ’র উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে তারা এসব দাবি করেন।
প্রসঙ্গত, আন্দোলনের মুখে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর থেকে দেশের ৫২টি জেলায় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চলছে। সংগঠনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিক্ষোভ সমাবেশের পর তারা জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেলের কাছে একটি স্মারকলিপি পৌঁছে দেন, যাতে গত কয়েকদিনে দেশে হিন্দু নির্যাতনের দেশি বিদেশি মিডিয়ায় প্রকাশিত সকল বীভৎস নির্যাতনের সচিত্র সংবাদ সংযুক্ত করা হয়। তাতে বলা হয়, সেনাবাহিনী চাইলেই এই নির্যাতন বন্ধ করতে পারত কিন্তু করেনি এবং একইভাবে প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর ইউনূস একটিবার যদি এই মর্মে হুশিয়ারি দিয়ে বলতেন, সকল সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচার হবে তাহলেও সেটা বন্ধ হয়ে যেত, কিন্ত তিনিও সেটা করেননি, যা নির্যাতকদের প্রশ্রয় দেয়ার নামান্তর।
স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তারা যদি বিদেশে সুনামের সঙ্গে শান্তিরক্ষী হিসেবে কাজ করতে পারেন নিজের দেশে তারা সেটা করছেন না কেন? জাতিসংঘের সেক্রেটারি-জেনারেল তাদের সেই দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিলেই তারা সেটা নিজেদের স্বার্থেই করবেন।
এর আগে বিক্ষোভ সমাবেশে কয়েকজন বক্তা বলেন, ছাত্র নেতারা দেশে শুধু শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সংঘটিত সব অপরাধের বিচার করার কথা বলেননি, তারা ২০০১ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত সকল সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারের কথাও বলছেন।
তারা বলেন, সাবেক জজ (বর্তমানে রাষ্ট্রপতি) সাহাবুদ্দীন কমিশন সরকারের কাছে সরাসরি বিচারযোগ্য কয়েক হাজার সংখ্যালঘু নির্যাতকের যে তালিকা ২০১১ সালে জমা দিয়েছিলেন তাদের বিচার অবিলম্বে শুরু করা হোক।
ইউনাইটেড হিন্দুস অফ ইউ.এস.এ’র সাধারণ সম্পাদক রামদাস ঘরামীর সঞ্চালনায়, পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ডাক্তার প্রভাত দাস কর্তৃক গীতা পাঠের মাধ্যমে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হয়। সভায় নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি ও কানেটিকাট থেকে ৪০টি হিন্দু ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান এবং মানবাধিকার সংগঠন যোগ দেয়।
সংগঠনের সভাপতি ভজন সরকারের উদ্বোধনী বক্তব্যের পর সমাবেশে ইউনাইটেড হিন্দুস অফ ইউ.এস,এ’র সহসভাপতি ভবতোষ মিত্র, কোষাধ্যক্ষ সঞ্জিত ঘোষ, পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান ডাক্তার প্রভাত দাস ও সদস্য সচিব সুশীল সিনহা, যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে ডিরেক্টর শিতাংশু গুহ ও সুশীল সাহা, সাধারণ সম্পাদক ডক্টর দ্বিজেন ভট্টাচার্য ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিষ্ণু গোপ বক্তব্য দেন।
আরো পড়ুন: দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের ঘোষণা দিলেন শিল্প উপদেষ্টা
এছাড়া বিভিন্ন মন্দির ও সংগঠনের পক্ষে গোপাল সাহা, সুমিতা বিশ্বাস, রণজিৎ সাহা, গৌরাঙ্গ দেব, অশীষ ভৌমিক, অজিত চন্দ, সুমন সূত্রধর, অধীর চন্দ্র, চম্পা নন্দী, দেবব্রত ঘোষ, ভজন সরকার প্রমুখ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।