যে কারণে মোদির বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন ক্ষুব্ধ মমতা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৮ জুলাই ২০২৪, ০২:১৩ পিএম

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও নরেন্দ্র মোদী
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আবার বিরোধ বেঁধে গেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের। গত ২৭ জুলাই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে রাষ্ট্রপতি ভবনে ‘নীতি আয়োগ বৈঠক’ চলাকালীন বৈঠক ছেড়ে বের হয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠক শেষ হওয়ার আগেই বেরিয়ে এসে ক্ষুব্ধ মমতা বলেন, আমাকে পাঁচ মিনিটও বলতে দেয়া হয়নি। মাইক বন্ধ করে আমাকে অপমান করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার প্রতিবাদে আমি বৈঠক ছেড়ে চলে এসেছি।
মমতা দাবি করেন, ওই বৈঠকে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু ২০ মিনিট বলার সুযোগ পেয়েছেন। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা, গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত, ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণুদেও সাইও নিজেদের বক্তব্য রাখার যথেষ্ট সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু তার বেলায় মাইক বন্ধের ঘটনাকে সরাসরি ‘অপমান’ বলে চিহ্নিত করেছেন মমতা।
মমতা ক্ষোভের সঙ্গে জানিয়েছেন, বিরোধীদের মধ্যে একমাত্র আমি বৈঠকে হাজির ছিলাম। কিন্তু আমাকে বলতে দেয়া হলো না। আমি আরো বেশি কিছু বলতে চেয়েছিলাম। তার আগে মাইক বন্ধ করে আমাকে অপমান করা হলো। এরপর থেকে নীতি আয়োগের আর কোনো বৈঠকে তিনি আর থাকবেন না।
যদিও বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মাইক বন্ধ করা বিষয়টিকে ‘মিসলিড’ (বিভ্রান্তি) বলে জানিয়েছে প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি)।
মমতার এই অভিযোগে জবাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা আমরা সবাই শুনছিলাম। প্রত্যেক মুখ্যমন্ত্রীকে বক্তব্য রাখার নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল। শুধু তাই নয়, সেই সময় প্রতিটি টেবিলের ওপর রাখা স্ক্রিনে ডিসপ্লে করা হয়েছিল। ফলে তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ওনার মাইক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এমন অসত্য দাবি করেছেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক। ওনার সত্যিটা বলা উচিত। তবে বৈঠক চলাকালীন ঘটনা কী ঘটেছে, তা স্পষ্ট নয়। কারণ দুই পক্ষ তাদের নিজের বক্তব্য রাখলেও, বৈঠকের ফুটেজ প্রকাশ্যে আসেনি।
এর আগে বাংলাদেশের কোট সংস্কারের দাবিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা এক মন্তব্য ঘিরে চলছে বিতর্ক। বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার মমতাও পাল্টা কড়া জবাব দেন।
প্রসঙ্গত, বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র ৮ মুখ্যমন্ত্রী শনিবারের বৈঠকে গণহাজির থাকলেও মমতা শনিবারের বৈঠক যোগ দিয়েছিলেন। মমতা জানিয়েছেন, এরপর এ ধরনের আর কোনো বৈঠকে তিনি থাকবেন না। কংগ্রেস শাসিত তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কর্নাটকের সিদ্দারামাইয়া, তেলঙ্গানার রেবন্ত রেড্ডি, হিমাচল প্রদেশের সুখবিন্দর সিংহ সুখু আগেই কেন্দ্রীয় বাজেটে বঞ্চনায় প্রতিবাদে নীতি আয়োগের বৈঠক বয়কটের ঘোষণা করেছিলেন।
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিন, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী আম আদমি পার্টির নেতা ভগবন্ত মান, সিপিএম নেতা কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও বৈঠক বয়কট করেন একই অভিযোগে। অতীতে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী একাধিকবার লোকসভায় তার মাইক বন্ধের অভিযোগ তুলেছেন।