ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন নিয়ে যে ভয়ঙ্কর ‘নীলনকশা’ সাজাচ্ছে রিপাবলিকানরা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৪, ১১:০২ এএম
চলতি বছরের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এই নির্বাচনে রিপাবলিকান শিবির থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আসন্ন নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তন হলে দেশটির অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক নীতি কাঠামো ভেঙে এক নতুন ব্যবস্থা প্রবর্তনের ‘নীলনকশা’ কষে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে রক্ষণশীল রিপাবলিকান শিবির।
আলজাজিরা বলছে, দ্বিতীয় মেয়াদে ট্রাম্পের সম্ভাব্য ক্ষমতাকাল কেমন হতে পারে, এরই মধ্যে তার একটি খসড়া তৈরি করেছেন রিপাবলিকান চিন্তাবিদ ও ট্রাম্পের অনুগামী বিশেষজ্ঞরা। এ খসড়া ‘নীতি পরিকল্পনা’-কে বলা হচ্ছে ‘প্রোজেক্ট টু থাউজ্যান্ড টোয়েন্টিফাইভ’ বা ‘প্রকল্প ২০২৫’।
প্রশাসনে ডানপন্থিদের আধিপত্য সৃষ্টি, প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা সম্প্রসারণ, পারমাণবিক অস্ত্র ভাণ্ডার বৃদ্ধি, চীনের বৈশ্বিক উত্থান রুখে দেওয়া, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার তহবিলে অর্থ জোগান বন্ধ করাসহ পররাষ্ট্রনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের রূপরেখা বর্ণনা করে ‘প্রজেক্ট ২০২৫’ প্রণয়ন করেছে রিপাবলিকান পরিবার।
যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ নেতা হিসেবে এই মুহূর্তে জনপ্রিয়তা জরিপে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ট্রাম্প। আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের আভাসও মিলছে। এক জরিপ অনুযায়ী, জনপ্রিয়তার বর্তমান হার ধরে এগোলে ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউজে আবারও অধিষ্ঠান হবে ট্রাম্প। তা যদি হয়, তাহলে কেমন হতে পারে তার দ্বিতীয় মেয়াদের ক্ষমতাকাল? এ নিয়ে শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, কৌতূহল রয়েছে বিশ্বজুড়েই।
সেই কৌতূহল নিরসনের খানিক সুযোগ তৈরি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান থিঙ্ক ট্যাংক হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের প্রণয়ন করা ‘প্রকল্প ২০২৫’ এর মাধ্যমে, যা মূলত ডানপন্থি-রক্ষণশীলদের ‘নীতি প্রস্তাব সমগ্র’। এই ‘প্রকল্প প্রস্তাব সমগ্র’ রিপাবলিকানদের কাছে ‘পলিসি বাইবেল’ হিসেবে সামদৃত।প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে হেরিটেজ প্রণীত এবারের ৯২২ পৃষ্ঠার প্রকল্পটি ট্রাম্পের জন্য নিদের্শিকা পুস্তিকা হিসেবে কাজ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
‘প্রজেক্ট ২০২৫’ নিয়ে একটি পর্যালোচনা হাজির করেছে আলজাজিরা, যেখানে ট্রাম্পবিরোধীরা বলছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘ভয়ঙ্কর বিপর্যয়’ ডেকে আনবে। ট্রাম্প ক্ষমতায় গেলে কেন্দ্রীয় প্রশাসনে বিপুলসংখ্যক উদারপন্থি কর্মকর্তাদের ছাটাই করে ডানপন্থিদের জায়গা করে দেওয়া, ‘ডিপ স্টেট’ খ্যাত যুক্তরাষ্ট্রের সামারিক-অসামরিক আমলাদের ক্ষমতা কাঠামো ভেঙে দেওয়ার মতোও প্রস্তাব রয়েছে প্রকল্পটিতে।
আলজাজিরা বলছে, প্রকল্প প্রস্তাবের বেশিরভাগই ডনাল্ড ট্রাম্পের পরিচিত নীতিগত প্রবণতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ট্রাম্প যেমন চান- যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ১ কোটি ১০ লাখের বেশি কাগজপত্রহীন অভিবাসীকে গণহারে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো বা অন্য কোনো স্থানে নির্বাসনে পাঠানো, ‘প্রজেক্ট ২০২৫’ এর প্রস্তাবেও তেমনটি বলা হয়েছে।
আলজাজিরা লিখেছে, প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে বাইডেনের নড়বড়ে অবস্থানের কারণে ডেমোক্র্যাট শিবির এখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়-পরাজয় নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন। এই ফাঁকে নির্বাচনী প্রচারে ‘প্রকল্প ২০২৫’ নিয়ে কথা বলার দ্বিগুণ সুযোগ পাচ্ছেন ট্রাম্প।তবে, ডনাল্ড ট্রাম্প দাবি করছেন, এই প্রকল্পে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।