যুক্তরাজ্যে লেবার পার্টির নিরঙ্কুশ জয়, প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন স্টারমার

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ জুলাই ২০২৪, ১০:৫৪ এএম

প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন কিয়ার স্টারমার।
অবশেষে বুথফেরত জরিপকে সত্যি করে যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেল লেবার পার্টি। ৩৮১টি আসনে জয় পেয়েছে দলটি। অন্যদিকে নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের দল কনজারভেটিভ পার্টির। এই পার্টি পেয়েছে ৭১টি আসন।
এ জয়ের মধ্য দিয়েই লেবার পার্টির নেতা স্যার কিয়ার স্টারমার দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। নিজের আসনে জয়ের পর স্টারমার বলেছেন, ‘পরিবর্তনের সূচনা হলো এখান থেকেই.. এটা আমাদের জন্য দেয়ার সময়’।
যুক্তরাজ্যে টানা ১৪ বছর পর ক্ষমতা থেকে সরে গেল কনজারভেটিভ পার্টি। এরইমধ্যে যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টির জয় স্বীকার করে নিয়ে দলটির নেতা কিয়ার স্টারমারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ঋষি সুনাক।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, নিজ আসন থেকে সদ্য নির্বাচিত হওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সুনাক। তিনি বলেন, এটি তার দলের জন্য একটি ‘কঠিন রাত’ ছিল।
শুক্রবার (৫ জুলাই) বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বিরোধী দল লেবার পার্টি ৩৮১ আসনে জয়ী হয়েছে। আর কনজারভেটিভ পার্টি ৮৩টি আসনে জয় পেয়েছে। আর লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি জয় পেয়েছে ৫১টি আসনে। সরকার গঠনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ অন্তত ৩২৬টি আসনে জয় পেতে হবে। লেবার পার্টি ইতোমধ্যেই সেই ম্যাজিক ফিগার পার করেছে। আশা করা হচ্ছে, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠার দিকে এগিয়ে যাওয়া লেবার পার্টি ৪১০টি আসনে জয় পাবে। আর কনজারভেটিভ পার্টি জয় পেতে পারে ১৩১ আসনে।
আরো পড়ুন : টানা চারবার নির্বাচনে বিজয়ী বঙ্গবন্ধুর নাতনি টিউলিপ
এদিকে ২০১০ সালের পর আবারো ডাউনিং স্ট্রীটে একজন লেবার প্রধানমন্ত্রী আসতে চলেছেন। অন্যদিকে কনজারভেটিভদের মধ্যে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়ে লড়াই হবে কারণ ঋষি সুনাক নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়াবেন বলে মনে হচ্ছে। কনজারভেটিভ অর্থাৎ টোরিরা লিবারেল ডেমোক্র্যাট ও নাইজেল ফারাজের রিফর্ম ইউকে পার্টির দিক থেকেও চ্যালেঞ্জের মুখে আছে। কারণ এই দল দুটি আগের চেয়ে বেশি আসন পাচ্ছে বলে দেখা যাচ্ছে।
এবারের নির্বাচনে ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত ৯৮টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। ৩৫টি রাজনৈতিক দল মাত্র একজন করে প্রার্থী দেয়। রেকর্ড ভেঙে এবার ৪ হাজার ৫১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। একেকটি আসনে গড়ে ৭ জন করে প্রার্থী। ৩১৭টি আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ৪৫৯ জন।
যুক্তরাজ্যে এবারের সাধারণ নির্বাচনে বিভিন্ন দলের মনোনয়নে প্রার্থী হন বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক। এর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কেউ কেউ। সব মিলিয়ে অন্তত ৩৪ জন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই গণনা শুরু হয়। নিয়ম অনুযায়ী, সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাওয়া দলকে সরকার গঠন ও দলের নেতাকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আহ্বান জানাবেন যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লস। দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পাওয়া দল পার্লামেন্টে প্রধান বিরোধী দল হবে। আর দলটির নেতা প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা হবেন।
৯ জুলাই নতুন পার্লামেন্ট সদস্যদের শপথ গ্রহণ ও স্পিকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ১৭ জুলাই রাজা তৃতীয় চার্লসের উদ্বোধনী বক্তব্যের মাধ্যমে নতুন সরকারের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে।