‘খেয়ে’ ফেলেছিল গরু, ৫০ বছর পর পাওয়া গেল রোলেক্স ঘড়ি

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৪, ০৬:৫৪ পিএম

বিশ্বে বিলাসবহুল হাতঘড়ির জগতে অন্যতম নাম রোলেক্স। ফাইল ছবি
ধরুন, ৫০ বছর আগে কোনও জিনিস হারিয়ে ফেলেছিলেন। এত দিন পর তা ফিরে পেলেন। বলুন তো, সেই অনুভূতি কেমন লাগবে? নিশ্চয় তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। তেমনই হয়েছে ব্রিটেনের ওসওয়েস্ট্রির এক বৃদ্ধের। ৫ দশক আগে হারিয়ে যাওয়া রোলেক্স ঘড়ি ফিরে পেয়েছেন তিনি। স্বাভাবিকভাবেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েছেন ৯৫ বছরের জেমস স্টিল।
তিনি বলেন, সাতের দশকের শুরুতে ঘড়িটি হারিয়ে ফেলেছিলাম আমি। সম্ভবত গরুকে খাস খাওয়ানোর সময় সেটি নিখোঁজ হয়। আমার ধারণা, ঘাসের সঙ্গে ঘড়িটি খেয়ে ফেলেছিল গরু।
সেটি হারিয়ে মুষড়ে পড়েছিলেন পেশায় কৃষক জেমস। অনেক খোঁজাখুঁজি করেছিলেন। কিন্তু কোথাও পাননি। একসময় সেই ঘড়ি ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়ে দেন। কিন্তু ৫০ বছর পর আচমকা সেটি ফিরে পেলেন।
জেমসের ছেলে মেটাল ডিকেক্টরকে তাদের জমিতে পুরোনো কয়েন খোঁজার কাজে লাগিয়েছিলেন। তিনিই হারানো রোলেক্স ঘড়িটি খুঁজে বের করেন।
এই ঘটনাকে ‘সৌভাগ্য’ বলে অভিহিত করেছেন জেমস। তিনি বলেন, এটা দারুণ ব্যাপার। বিশেষ করে এসময়ে। আমি খুবই খুশি। কখনো ভাবিনি ঘড়িটিকে আবার দেখতে পাব। কিন্তু এখন এটি আমার হাতে। যদিও সেটির অর্ধেক চেইন আছে। বাকিটা ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
জেমস জানান, তার জমিতে আরও মূল্যবান জিনিস পাওয়া যাবে। তাই ওই ব্যক্তিকে তাতে ধাতুর খোঁজ চালিয়ে যেতে বলেছেন। ঘড়িটি স্মারক হিসেবে রেখে দেবেন জানিয়ে তিনি বলেন, এটি এখন ‘অমূল্য’।
বিশ্বে বিলাসবহুল হাতঘড়ির জগতে অন্যতম নাম রোলেক্স। ১৯০৫ সালে যাত্রা শুরু করে কোম্পানিটি। বিশ্বে প্রথম ওয়াটারপ্রুফ বা পানিরোধী ঘড়ি প্রস্তুত করে তারাই। রোলেক্সের সবচেয়ে দামি ঘড়ির দর বাংলাদেশি মুদ্রায় কোটি টাকার ওপরে। আর সবচেয়ে কম মূল্যের দামও ২ লাখ টাকার বেশি।
রোলেক্সের সদরদপ্তর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়। তবে বর্তমানে বিশ্বের ১০০টির বেশি দেশে তাদের ৪ হাজারের বেশি ঘড়ির কারিগর এবং ১ হাজার ৮০০-এর বেশি অনুমোদিত খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ধনী ও অভিজাত পরিবারের সদস্য, ক্রীড়াবিদ ও বিনোদনজগতের তারকারা রোলেক্সের ঘড়ি ব্যাপক ব্যবহার করেন।
নিয়ন্ত্রিত উৎপাদন ও বিতরণ প্রক্রিয়ার জন্য পরিচিত রোলেক্স। অর্থাৎ ঘড়ি উৎপাদনের ক্ষেত্রে চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে ভারসাম্য রাখে তারা। তা সত্ত্বেও প্রতিবছর প্রায় ৮ লাখ ঘড়ি তৈরি হয়। সবমিলিয়ে বর্তমানে ব্র্যান্ডটির সম্পদ মূল্য ৭৯০ কোটি মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৮৫ হাজার ৩২০ কোটি টাকা।
আইকনিক নকশা ও উন্নতমানের উপকরণ দিয়ে তৈরি রোলেক্স ঘড়ি। এসব শুধু দেখতেই সুন্দর নয়, একইসঙ্গে টেকসইও। এগুলোতে স্বর্ণ, হিরা, তামা ও প্ল্যাটিনামের মতো মূল্যবান বিভিন্ন ধাতু ব্যবহৃত হয়।
বর্তমানে রোলেক্সের সবচেয়ে ব্যয়বহুল মডেলের ঘড়ি জিএমটি মাস্টার টু আইস। এটি ১৮-ক্যারেট সাদা স্বর্ণ এবং প্রায় ৩০ ক্যারেটের হিরা দিয়ে তৈরি। যার দাম ৫ কোটি টাকার ওপরে। সার্বিকভাবে আভিজাত্য প্রকাশের পরিপূরক হিসেবে বিবেচিত হয় রোলেক্স ঘড়ি। যেসব কারণেেএর দামও আকাশছোঁয়া।