বিজেপির বিজ্ঞাপনে নিষেধাজ্ঞা বহাল

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ মে ২০২৪, ০৪:২২ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
যেকোনো বিজ্ঞাপনের লক্ষ্মণরেখা থাকা উচিত। বিজেপির নির্বাচনী বিজ্ঞাপন মামলার শুনানি চলাকালীন তেমনটাই মন্তব্য করলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম। নির্বাচনী বিজ্ঞাপন বন্ধ করা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপি।
বুধবার (২২ মে) ছিল সেই মামলার শুনানি। শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, বিজেপির নির্বাচনী বিজ্ঞাপন নিয়ে সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশে হস্তক্ষেপ করবে না তারা। তবে সিঙ্গেল বেঞ্চে গিয়ে নির্দেশ প্রত্যাহার বা পুনর্বিবেচনার আর্জি করতে পারবে বিজেপি।
ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানির সময় প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, যে কোনো বিজ্ঞাপনের একটা লক্ষ্মণরেখা থাকা উচিত। তিনি বলেন, ‘‘আমার মনে হয় আদর্শ আচরণবিধি অনুযায়ী সম্পূর্ণ ভাবে পোস্টার, ব্যানার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি, বিমানবন্দরে যদি যান, দেখবেন সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর ছবিও সরিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে রাষ্ট্রপতির ছবি থাকতে পারে।’’
একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানমের পর্যবেক্ষণ, তিনি কলকাতায় এসে দেখেছেন যে, তার বাড়ির বিপরীত দিকে তৃণমূলের বিদায়ী সাংসদ মালা রায়ের দেওয়াল লিখন এক বছরেরও বেশি সময় ধরে রয়ে গিয়েছে। মোছা হয়নি। তা দেখে তিনি খুব অবাক হয়েছেন বলেও প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন।
আরো পড়ুন: জম্মু ও কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা বাতিলের সিদ্ধান্তে যা বলছে দেশটির সুপ্রিমকোর্ট
উল্লেখ্য, সোমবারই বিজেপির নির্বাচনী বিজ্ঞাপনের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যের সিঙ্গেল বেঞ্চ। সিঙ্গেল বেঞ্চ জানিয়েছিল, বিতর্কিত বিজ্ঞাপন আর কোনো সংবাদমাধ্যমে দেয়া যাবে না। আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘিত হতে পারে, এমন বিজ্ঞাপন দিতে পারবে না বিজেপি। এই মামলায় কমিশনের ভূমিকা নিয়েও সমালোচনা করেন বিচারপতি ভট্টাচার্য। তার মন্তব্য ছিল, বিজ্ঞাপন নিয়ে তৃণমূলের অভিযোগের ভিত্তিতে আরো আগে পদক্ষেপ নেয়া উচিত ছিল কমিশনের। বিজ্ঞাপন প্রসঙ্গে ‘আনভেরিফায়েড’ শব্দটিও ব্যবহার করে আদালত। যার অর্থ, ভাল করে যাচাই না করা বিজ্ঞাপনের উপর এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।
সংবাদপত্র এবং সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিজেপির জোড়া বিজ্ঞাপনে আপত্তি তুলে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল তৃণমূল। বিজেপির যে দুই বিজ্ঞাপনে তৃণমূল আপত্তি করেছে, তার একটিতে ‘দুর্নীতির মূল মানেই তৃণমূল’ এবং অন্যটিতে ‘সনাতন বিরোধী তৃণমূল’ স্লোগান ছিল। এই স্লোগানেই রাজ্যের শাসকদলের প্রধান আপত্তি।
জোড়াফুল শিবিরের বক্তব্য, যে ভাবে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে ‘সনাতন বিরোধী’ হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে, তা নিয়মবিরুদ্ধ এবং সাধারণ মানুষের মনে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। শুধু তা-ই নয়, রাজ্য সরকারকে যেভাবে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলে দাবি করা হচ্ছে, তা বিভ্রান্তিকর, বেঠিক এবং অবমাননামূলক বলেই মনে করছে তৃণমূল। বিজেপির নির্বাচনী বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলাও করে। সোমবার আদালতের সিঙ্গেল বেঞ্চ ওই বিজ্ঞাপনের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে। যার ফলে আপাতত বিজ্ঞাপন দু’টি কোনো সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করতে পারবে না বিজেপি। বিজ্ঞাপন বন্ধের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশের সেই নির্দেশকেই চ্যালেঞ্জ করে মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপি। তবে সিঙ্গেল বেঞ্চের সেই নির্দেশে হস্তক্ষেপ করল না কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।