অবশেষে লোকালয়ে আসা বাঘিনী ধরা পড়ল

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০২ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার জঙ্গলে দিন সাতেকের অভিযানের পর রবিবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে বনকর্মীদের হাতে ধরা পড়েছে ওড়িশা থেকে আসা বাঘিনী জিনাত।
শনিবার থেকে বাঘিনীকে আটকের জন্য চলছিল ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়ার একের পর এক চেষ্টা। শনিবার রাতভর বনকর্মীরা খাঁচাবন্দি করার পরিকল্পনা করলেও কোনোভাবেই বাগে আনা যাচ্ছিল না।
রবিবার বিকেল ৪টার দিকে বনকর্মীরা পুনরায় জিনাতকে লক্ষ্য করে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়েন। গুলি বাঘিনির গায়ে লাগলে সে কাবু হয় এবং তাকে বন্দি করে নিয়ে আসা সম্ভব হয়।
বাঘিনির পথচলা: ওড়িশা থেকে বাঁকুড়া
গত ১৫ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের তাডোবা-আন্ধারি বাঘ প্রকল্প থেকে তিন বছরের জিনাতকে নিয়ে আসা হয়েছিল ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার সিমলিপাল বাঘ প্রকল্পে। সেখানে কয়েকদিন পর্যবেক্ষণের পর, ২৪ নভেম্বর রেডিও কলার পরিয়ে তাকে প্রকল্পের জঙ্গলে ছেড়ে দেয়া হয়।
জঙ্গলে ছাড়ার পর জিনাত ওড়িশা থেকে ঝাড়খণ্ড হয়ে পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়ায় পৌঁছায়। ঝাড়খণ্ডের চাকুলিয়া রেঞ্জ থেকে শুরু করে রাজাবাসার জঙ্গল ও চিয়াবান্ধি এলাকা হয়ে ঝাড়গ্রামের কাটুচুয়া জঙ্গল পেরিয়ে সে পুরুলিয়ার জঙ্গলে আশ্রয় নেয়।
গ্রামবাসীদের আতঙ্ক এবং বন দপ্তরের কৌশল
শনিবার সকালে জিনাতের গর্জন শুনে বাঁকুড়ার রানিবাঁধ থানার গোঁসাইডিহি গ্রামের বাসিন্দারা নিশ্চিত হন যে, বাঘিনী তাদের কাছাকাছি রয়েছে। তার পায়ের ছাপও নজরে আসে।
বন দপ্তরের কর্মকর্তারা জিনাতের রেডিও কলারের সিগন্যাল ট্র্যাক করে জানতে পারেন, মুকুটমণিপুর জলাধার লাগোয়া ছোট একটি জঙ্গলে সে লুকিয়ে আছে। সঙ্গে সঙ্গে গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে নাইলন দড়ি দিয়ে ব্যারিকেড তৈরি করা হয়।
গ্রামবাসীদের নিরাপত্তায় গ্রামের রাস্তা পর্যন্ত জাল দিয়ে ঘেরা হয়। জঙ্গলে একাধিক খাঁচা পাতা হয় এবং টোপ হিসেবে দুটি মহিষ রাখা হয়।
শেষ পর্যন্ত সফল অভিযান
শনিবার রাতভর চেষ্টা চালানোর পরও বাঘিনী ধরা না পড়ায় বনকর্মীরা জঙ্গলের বিভিন্ন স্থানে আগুন লাগিয়ে তাকে বের করার কৌশল নেন। রোববার বিকেলে ঘুমপাড়ানি গুলি জিনাতের গায়ে লাগার পরই তাকে খাঁচায় বন্দি করা সম্ভব হয়।
সাত দিনের উত্তেজনা, বনকর্মীদের নিরলস প্রচেষ্টা এবং গ্রামবাসীদের সহযোগিতার পর জিনাতকে অবশেষে ধরা সম্ভব হয়েছে। এখন তাকে আবার সুরক্ষিত স্থানে স্থানান্তর করা হবে।