সবসময় কেন নির্বাচনের কথা বলেন বিএনপি নেতারা, জানালেন মির্জা ফখরুল

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৪৪ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে আবারো দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সেই কেন বিএনপি নেতারা সবসময় নির্বাচনের কথা বলেন, সেটার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি। মির্জা ফখরুল মনে করেন, বর্তমান সমস্যাগুলো সমাধানে অন্তর্বর্তী সরকারের আত্মবিশ্বাস কম। তাই নির্বাচিত সরকার দরকার। কারণ জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে বসবে তারা। তাদের আত্মবিশ্বাস থাকবে। ফলে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান সহজ হবে।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়া স্মৃতি পাঠাগার আয়োজিত ‘গ্রন্থ আড্ডা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাকে অনেকে ভুল বুঝতে পারেন। কেউ কেউ বলতে পারেন, আপনি এত নির্বাচন নির্বাচন করেন কেন? বিশেষ করে ছাত্ররা তো বলেই। নির্বাচন তাড়াতাড়ি করার কথা এজন্যই বলি যে হয়ে গেলে সমস্যাগুলো চলে যাবে। একটা নির্বাচিত সরকার জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে বসবে। তাদের মধ্যে সেই আত্মবিশ্বাসটা থাকবে। এখন ওদের (অন্তর্বর্তী সরকার) মধ্যে সেই কনফিডেন্সটা নাই। জনগণের ভাষাটা তো বুঝতে হবে।
তিনি বলেন, দ্রুত নির্বাচন মানে এখনই তা করে ফেলতে হবে বিষয়টা তেমন নয়। ন্যূনতম যে সংস্কার প্রয়োজন, সেটা করে ভোট আয়োজন করলে সমস্যা অনেকটা সমাধান হবে। আমি জানি না, আমার বিশ্বাস ভুল কিনা। তবে মনে হয়, যেকোনো নির্বাচিত সরকার একটা অনির্বাচিত সরকারের চেয়ে ভালো। আমি যেতে পারি, কথা বলতে পারি-এখন সেই অবস্থা নেই।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন একটা ভালো কিছু করার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। সংস্কারের প্রস্তাব আসতে শুরু করেছে। আমার বিশ্বাস, প্রধান উপদেষ্টা শিগগিরই সমাধানের দিকে আসবেন, আলোচনা হবে। ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরা একটা জায়গায় পৌঁছাবো।
বিরাজমান পরিস্থিতিতে সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি নেতা বলেন, এই মুহূর্তে আমরা সব পাল্টে দেবো, সব দখল করবো-এটা হয় না। আমাদের ধাপে ধাপে যেতে হবে। এখানে যে অস্থিরতা বিরাজ করছে, সেই অস্থিরতাকে যদি আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে চাই, তাহলে আমাদের ধৈর্য ধরে পা ফেলতে হবে। এমন কিছু আমরা করবো না, যাতে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়, কোনো বিপদ আমরা যেন না ডেকে আনি-বিষয়গুলো আমাদের মনে রাখতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, একটা কথাই শুধু বলতে চাই, কখনো ধৈর্য, আশা হারাবেন না। আমাদের প্রত্যাশা অনেক, কিন্তু ধৈর্য একেবারেই কম। এই তো মাত্র কয়েক মাস হয়েছে। এর মধ্যেই অনেকে পাগল হয়ে গেছে। এ সরকার অনেক ভুলত্রুটি করছে। ভুল তো করবেই। তারা তো আর সরকারে ছিল না। ওরা তো রাজনীতি করেনি, সেটা বোঝেও না। তাদের তো সেই সময়টুকু দিতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে তো কেউ একটা কথা বলার সুযোগ, সাহস পায়নি। এখন একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে, সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ছে। এতে লাভ কার? এদেশের, এই সমাজের, মানুষের কোনো লাভ হবে না।
জিয়া স্মৃতি পাঠাগাররের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আবদুস সালামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. জহির দিপ্তীর সঞ্চালনায় এসময় আরো বক্তব্য রাখেন শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, পলিসি গবেষক মাহাদী আমিন, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, শিক্ষানুরাগী আফরোজা খানম রীতা, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী, শিক্ষক নেতা জাকির হোসেন প্রমুখ।