বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান কমালো মুডিস

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২০ পিএম

ছবি : সংগৃহীত
মার্কিন রেটিং এজেন্সি মুডিস বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি ঋণমান 'বি-ওয়ান' থেকে কমিয়ে 'বি-টু'তে নামিয়ে দিয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশের ঋণমানের পূর্বাভাসও 'স্থিতিশীল' থেকে 'নেতিবাচক' অবস্থায় চলে গেছে।
মুডিস জানায়, বাংলাদেশের ঋণমান অবনমনের কারণ হিসেবে দেশটির উচ্চ রাজনৈতিক ঝুঁকি ও নিম্ন প্রবৃদ্ধি তুলে ধরেছে। এসব কারণে সরকারের নগদ অর্থ সংকট তৈরি হতে পারে, যা ব্যাংকখাত এবং বাহ্যিক লেনদেনের ক্ষেত্রে দুর্বলতা সৃষ্টি করবে।
মুডিসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে সরকার পরিবর্তনের পর রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা বেড়ে যাওয়ার কারণে এসব ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। চলমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও দুর্বল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশ সরকারকে তার অর্থায়নের ঘাটতি পূরণ করতে স্বল্পমেয়াদি অভ্যন্তরীণ ঋণের ওপর বেশি নির্ভর করতে হচ্ছে, যা দেশের তারল্য ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
এছাড়া, বাংলাদেশের ব্যাংকখাতে ঋণ সম্পদের উচ্চ ঝুঁকি এবং মূলধন ও তারল্য কম থাকায় সরকারকে জরুরি অবস্থায় সহায়তা প্রদান বা আকস্মিক দায়বদ্ধতার ঝুঁকিও বহাল রয়েছে। গত কয়েক বছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ ও উন্নয়ন সহযোগীদের ঋণ ছাড় সত্ত্বেও বাংলাদেশ তার রিজার্ভের ক্ষয় পেয়েছে, যা বাহ্যিক ঝুঁকিগুলো মোকাবিলার ক্ষেত্রে দুর্বলতা সৃষ্টি করছে।
মুডিস আরো জানায়, দেশে সামাজিক ঝুঁকি বৃদ্ধি, নির্বাচনকালীন অনিশ্চয়তা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার বিষয়টি দেশটির রাজনৈতিক ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
এছাড়া, মুডিস সতর্ক করে বলেছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর যে বর্তমান প্রত্যাশা করা হয়েছে, তার বাইরে কিছু ঝুঁকি রয়েছে, যা পূর্বাভাস নেতিবাচক করার মাধ্যমে স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এই পরিবর্তন বাংলাদেশের ইতোমধ্যেই চাপের মধ্যে থাকা আর্থিক সক্ষমতাকে আরও দুর্বল করতে পারে এবং বাহ্যিক দুর্বলতাগুলোকে তীব্র করবে।
মুডিস মন্তব্য করেছে, যদিও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার বৃহত্তর সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তবে তা বাস্তবায়ন করতে পারবে কিনা তা অনিশ্চিত। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং উচ্চ বেকারত্ব দূর করার জন্য যদি সরকার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে না পারে, তবে রাজনৈতিকভাবে সরকারের সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।