পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
পলিথিন শপিং ব্যাগের উৎপাদন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত চলবে অভিযান

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ছবি : ভোরের কাগজ
পলিথিনের শপিং ব্যাগ উৎপাদন যতদিন পর্যন্ত পুরোপুরি বন্ধ না হবে ততদিন পর্যন্ত অভিযান চলবে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, আমরা সুপার শপ দিয়ে শুরু করেছি। ক্রমে ক্রমে আমরা ঢাকার বাইরে যাব। যত দ্রুত সম্ভব দেশ থেকে পলিথিনের ব্যাগ সরিয়ে দিতে চান বলেও জানান তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর জিগাতলায় সুপার শপে নিষিদ্ধ পলিথিন শপিং ব্যাগের ব্যবহার বর্জন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, একটা বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞার বাস্তব প্রয়োগ শুরু করেছি। একবার বছর দুয়েকের জন্য প্রয়োগ হয়েছিল। মার্কেট মনিটরিংয়ের মাধ্যমে পলিথিন প্রায় উঠে গিয়েছিল। তারপর আর মার্কেট মনিটরিং ছিল না, এটা আবার ফেরত এসেছে। তিনি আরো বলেন, সুপার শপের মালিক অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা খুব খুশি মনে পাটের ব্যাগের ব্যবহার করতে রাজি হয়েছেন। কারণ পলিথিনের বিপদটা তারা বোঝেন। নিজেদের সন্তানদের জন্য এটা একটা ভালো কাজ।
এ বিষয়ে পাট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে উল্লেখ করে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা যৌথভাবে এই ক্যাম্পেইনটা করছি। যাতে পলিথিন শপিং ব্যাগ উঠে যায়। আস্তে আস্তে পাট এবং কাপড় বা পুরনো কাপড় যেগুলো আমরা ফেলে দিই সেগুলোর পুনঃব্যবহার (রি-ইউজ) করে ব্যাগ হিসেবে ব্যবহার করতে পারি। মোট কথা হচ্ছে, পলিথিন শপিং ব্যাগের ওপর বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের দিকে যাওয়া।
তিনি বলেন, কাঁচাবাজারের কাজ শুরু হবে ১ নভেম্বর থেকে। সুস্পষ্টভাবে বলা যে সব ধরনের প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে আমাদের এই যুদ্ধ না। আমাদের কাজটা হচ্ছে শুধুমাত্র পলিথিনের শপিং ব্যাগের বিরুদ্ধে। অনেকে প্রশ্ন করেন। ময়লার বিনের জন্য এখান থেকে যে পলিথিন তারা কিনে নেন সেটার উপরেও আপাতত আমাদের কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। কারণ আমরা এখনো বিকল্পে যেতে পারিনি। এখান থেকে কিছু কিনে নেয়ার সময় তারা পলিথিনের ব্যাগ নেবেন না এবং বাসা থেকেও কোনো পলিথিনের ব্যাগ আনবেন না। যত দ্রুত সম্ভব পলিথিনের ব্যাগ আমরা দেশ থেকে সরিয়ে দিতে চাই।
তিনি বলেন, পলিথিনের ব্যবহার রাতারাতি বন্ধ করতে পারব না। তবে কিছু পলিথিন যেগুলো একবার ব্যবহার করে আমরা ফেলে দিই সেগুলো খালে, নর্দমা, সমুদ্রে গিয়ে পড়ে। এগুলো যেন সংবেদনশীল জায়গায় না যায়। আমরা সেন্ট মার্টিন থেকে কাজটি শুরু করতে যাচ্ছি। সেন্ট মার্টিনের হোটেল মোটেলগুলো একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক থেকে মুক্ত করা।
বাজার মনিটরিংয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, অনেক বছর ধরে মনিটরিং হয় না। ২০০৪ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত একবার মার্কেট মনিটরিং হয়েছিল। যার ফলে পলিথিনের ব্যবহার কমে এসেছিল। আমাদের লোকবলের অভাব আছে। সে জন্য আমরা সুপার শপে শুরু করেছি। এখানে মনিটরিং করা আমাদের জন্য সুবিধার।
প্রসঙ্গত; এর আগে ২১ আগস্ট সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের সারাদেশে পলিথিনের বিরুদ্ধে অভিযান কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছিলেন। এরপর গত ৯ সেপ্টেম্বর ১ অক্টোবর থেকে সুপারশপে পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তের কথা জানান তিনি। এদিকে ১ নভেম্বর থেকে কাঁচাবাজারেও নিষিদ্ধ হচ্ছে পলিথিন ব্যাগ। ওই দিন থেকেই পলিথিন উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধেও অভিযান শুরু হবে। পলিথিনের বিকল্প পণ্যে উদ্বুদ্ধ করতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর পরিবেশ অধিদপ্তরে অনুষ্ঠিত হয় পলিথিনের বিকল্প পণ্য মেলা।