×

সরকার

অর্থ উপদেষ্টা

ভারতীয় এলওসির প্রকল্পগুলো বড় ও গুরুত্বপূর্ণ, বন্ধ হবে না

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

 ভারতীয় এলওসির প্রকল্পগুলো বড় ও গুরুত্বপূর্ণ, বন্ধ হবে না

ছবি : পিআইডি

   

ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) আওতায় চলমান প্রকল্পগুলো গুরুত্বপূর্ণ। প্রকল্পগুলো বড়; সেগুলোর কাজ চলবে। শুধু তাই নয়, উভয় দেশের স্বার্থের কথা বিবেচনায় আরো প্রকল্প গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। গতকাল মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার সঙ্গে অনুষ্ঠিত সৌজন্য বৈঠকের পর এসব কথা বলেন তিনি।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রথম এলওসি চুক্তি হয় ২০১০ সালের আগস্ট মাসে; অর্থের পরিমাণ ছিল ৮৬ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার। দ্বিতীয় এলওসি চুক্তি ছিল ২০০ কোটি ডলারের; ২০১৬ সালের মার্চ মাসে তা সই হয়। ২০১৭ সালের মার্চে ভারতের সঙ্গে চুক্তি হয় ৪৫০ কোটি ডলারের। সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ভারত বড় প্রতিবেশী দেশ। বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ যে একটা ভালো জায়গা, তাকে (প্রণয় ভার্মা) সে কথা জানানো হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জন্য তাদের সহযোগিতা অক্ষুণ্ন থাকবে। বৈঠকে এলওসির তিনটি প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের অনেক ক্ষেত্র আছে। এগুলো কীভাবে আরো বাড়ানো যায়, সে বিষয়গুলো আলোচনায় উঠে এসেছে। অর্থ উপদেষ্টা আরো বলেন, এলওসির প্রকল্পগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ; দেশের স্বার্থের কথা বিবেচনায় রেখেই সেগুলো হাতে নেয়া হয়েছিল। এসব প্রকল্প বন্ধ হবে না। ভারতীয় হাইকমিশনার আশ্বাস দিয়েছেন, বাংলাদেশ থেকে ভারত আরো গুণগত মানসম্পন্ন পণ্য নেবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা খাতেও ভারত বাংলাদেশকে সহায়তা করবে বলে জানিয়েছে অর্থ উপদেষ্টা।

অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলার পর সাংবাদিকরা ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মার কাছে বৈঠকের বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানতে চান। প্রণয় ভার্মা অর্থ উপদেষ্টার মতোই বলেন, এলওসির প্রকল্পগুলো বড় এবং সেগুলো বন্ধ হবে না। তিনি আরো বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আমরা যে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চাই, আজকের বৈঠকই তার প্রমাণ। দুই পক্ষের পারস্পরিক সম্মতিতে প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়িত হবে এবং ভারত এ ব্যাপারে ইতিবাচক। তিনি বলেন, বাংলাদেশে চলমান কোনো ভারতীয় প্রকল্প স্থগিত হয়নি। চলমান কিছু প্রকল্পের ঠিকাদার ভারতে চলে গেলেও দ্রুতই ফিরে এসে কাজ শুরু করবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। হাইকমিশনার বলেন, আগের মতোই একসঙ্গে কাজ করছে ঢাকা ও দিল্লি। অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বেশ কিছু বড় প্রকল্পে কাজ করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি। আশুগঞ্জ ও আখাউড়া সড়কের মতো কিছু প্রকল্পের ঠিকাদার ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর ভারতে চলে যান। তারা দ্রুতই ফিরে আসবেন এবং প্রকল্পের কাজে হাত দেবেন বলে মন্তব্য করেন ভার্মা। এই সরকারের সঙ্গেও ভারত আগের মতোই দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এগিয়ে নেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারত থেকে বাংলাদেশের ঋণের অর্থ ছাড় করার বিষয়েও সমস্যা নেই।

বহুমুখী সম্পর্ক এগিয়ে নিতে সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখব : বাংলাদেশের সঙ্গে বহুমুখী সম্পর্ক এগিয়ে নিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। মঙ্গলবার দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, যে কথা আমি আগেও বলেছি, দুদেশের জনগণের অভিন্ন আকাক্সক্ষা, শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্য আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত আছি। বহুমুখী খাতের এই সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে, আমরা আমাদের সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখব। আপনারা জানেন, আমাদের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। আগামী দিনগুলোতে সেটাকে এগিয়ে নেয়ার প্রতীক্ষায় আছি। নতুন পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পাশাপাশি বিস্তৃত পরিসরে আলোচনা হওয়ার কথা বলেন প্রণয় ভার্মা। তবে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহতের ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন তিনি এড়িয়ে যান। এ বিষয়ে এক প্রশ্নে প্রণয় ভার্মা শুধু বলেন, এ নিয়ে ইতোমধ্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা কথা বলেছেন। এরপর তিনি ডায়াস ছেড়ে চলে যান। প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটনার পর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে নতুন করে অস্বস্তি দানা বেঁধেছে। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। অন্যদিকে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়টি নিয়ে ভাবার কথা বলছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা।

গত শনিবার হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি মাসের চতুর্থ সপ্তাহে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছে ঢাকা। তবে এখনো সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানায়নি ভারত সরকার। দুদেশের মধ্যে যোগাযোগের বিষয়ে জানাশোনা আছে, এমন ব্যক্তিদের বরাতে ভারতীয় গণমাধ্যমটি লিখেছে, এ সপ্তাহে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাৎকারে ইউনূসের বিভিন্ন মন্তব্যের প্রেক্ষাপটে মনে হচ্ছে, বৈঠকটি হবে না। ইউনূসের বক্তব্যগুলো নয়াদিল্লি ভালোভাবে নেয়নি। সম্প্রতি পিটিআইকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ইউনূস। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ফেরত না চাওয়া পর্যন্ত ভারতে অবস্থানকালে সাবেক ওই প্রধানমন্ত্রীর চুপ থাকা উচিত। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন গত সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিষয়টা হলো, তারা যদি চায় যে, আমাদের সঙ্গে দেখা করবে না, আমাদের জোর করে দেখা করার তো কিছু নাই, তাই না?’

টাইমলাইন: অন্তর্বর্তীকালীন সরকার

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App