যে কারণে সাবান বিক্রি করতেন গুলশান গ্রোভার

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৩:৫০ পিএম

যে কারণে সাবান বিক্রি করতেন গুলশান গ্রোভার। ছবি: সংগৃহীত
আশির দশকে অভিনয় জীবন শুরু করেন গুলশান গ্রোভার। ১০০টিরও বেশি ছবিতে করেছেন অভিনয়। হিন্দি ছবির পাশাপাশি অভিনয় করেছেন তামিল, তেলুগু, মরাঠি, পঞ্জাবি, এমনকি ইংরেজি ভাষার ছবিতেও। বেশিরভাগ সময় খলনায়ক চরিত্রে অভিনয় করেছেন গুলশান। বলিউডে তকমা পেয়েছেন ‘ব্যাড ম্যান’ হিসেবে।
সর্বশেষ ২০২৩ সালে ‘চার্লি চোপড়া অ্যান্ড দ্য মিস্ট্রি অফ সোলাং ভ্যালি’ সিরিজে অভিনয় করতে দেখা গেছে গুলশানকে। শোনা যাচ্ছে, কমল হাসানের ‘ইন্ডিয়ান-২’ নামের একটি তামিল ছবিতে অভিনয় করছেন তিনি।
১৯৫৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লীতে জন্ম গুলশানের। সেখানে বাবা-মা, ভাই এবং বোনের সঙ্গে থাকতেন তিনি। দিল্লিতে স্কুল এবং কলেজের পাঠ চুকিয়ে দিল্লির একটি কলেজ থেকে বাণিজ্য নিয়ে করেন স্নাতকোত্তর।
স্কুলে পড়াকালীন অভিনয়ের প্রতি তার ছিল আগ্রহ। পরবর্তীতে কলেজে পড়াকালীন একটি নাটকের দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পেশাগত জীবনে অভিনয় শুরু করেন। অর্থাভাবে শৈশব কেটেছে গুলশনের। এমন বহু দিন কাটিয়েছেন, যখন সারা দিন কিছু না খেয়ে তাকে ঘুমোতে যেতে হয়েছে।
সাক্ষাৎকারে গুলশান বলেন- ‘ ছোটবেলায় আমি স্কুলের জামা পরে সকাল সকাল বেরিয়ে পড়তাম। কাঁধে থাকত একটি ভারী ব্যাগ। সেই ব্যাগে ভর্তি থাকত কাপড় কাচার এবং বাসন মাজার সাবান। স্কুল যাওয়ার পথে এই সাবান বিক্রি করতাম আমি।’
তিনি আরো বলেন, স্কুলে পড়ানোর মতো আর্থিক সামর্থ্য ছিল না বাবার। সাবান বিক্রি করে সেই টাকা জমিয়ে স্কুলের বেতন দিতে হতো।
দারিদ্রের সঙ্গে লড়াই করে কলেজের পড়াশোনা শেষ করেন গুলশন। অভিনয় শিখবেন বলে মুম্বাইয়ের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি হন। সেখানে অনিল কাপুর এবং সঞ্জয় দত্তের সঙ্গে অভিনয় শিখেছেন গুলশান। পরে সেই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রেই অভিনয় শেখাতে শুরু করেন তিনি।
১৯৮০ সালে ‘হাম পাঁচ’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে কেরিয়ার শুরু হয় গুলশনের। পরে একে একে ‘রকি’, ‘সদমা’, ‘রাম লক্ষ্মণ’, ‘সওদাগর’, ‘শোলা অওর শবনম’, ‘দিলওয়ালে’, ‘মোহরা’, ‘আগ’, ‘দ্য গ্যাম্বলার’, ‘রাম জানে’, ‘ইয়েস বস্’, ‘ডুপ্লিকেট’, ‘হেরা ফেরি’, ‘লজ্জা’, ‘জিস্ম’, ‘যযন্তরম মমন্তরম’, ‘টারজান দ্য ওয়ান্ডার কার’, ‘গ্যাংস্টার’, ‘এজেন্ট বিনোদ’, ‘ক্রুক’, ‘হেট স্টোরি ৪’-এর মতো বহু হিন্দি ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান তিনি।
‘রাম লক্ষ্মণ’ ছবিতে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করে বলিউডে পান ‘ব্যাড ম্যান’-এর তকমা। ভারতীয় ছবির পাশাপাশি ইরান, মালয়েশিয়া এবং কানাডার ছবিতেও অভিনয় করেছেন গুলশন।
আমেরিকার জনপ্রিয় সিরিজ ‘ব্রেকিং ব্যাড’-এর হিন্দি ডাবিংয়ের সময় হেক্টরের চরিত্রে কণ্ঠ দেন গুলশন। তা ছাড়া ‘প্রিজনার্স অফ দ্য সান’, ‘আমেরিকান ডেলাইট’, ‘এয়ার প্যানিক’, ‘বিপার’-এর মতো একাধিক ইংরেজি ভাষার ছবিতে অভিনয় করেছেন গুলশান।
গুঞ্জন আছে, সালমান খানের সাবেক প্রেমিকা সোমি আলির সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন গুলশান। পরে অবশ্য সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়। ১৯৯৮ সালে ফিলোমিনার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন গুলশান। ২০০১ সালে বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাদের। বিচ্ছেদের কয়েক মাস পরে কশিশ নামে আরেকজনকে বিয়ে করেন গুলশন। সেই সম্পর্কও বেশি দিন টেকেনি। ২০০২ সালে দ্বিতীয় বার বিবাহবিচ্ছেদের পথে হাঁটেন তিনি।
কানাঘুষা শোনা যায়, ‘স্লামডগ মিলিয়নেয়র’ ছবিতে পুলিশ কর্মকর্তারর চরিত্রে নির্মাতাদের প্রথম পছন্দ ছিলেন গুলশান। কিন্তু অভিনেতা সে প্রস্তাব খারিজ করে দেয়ায় ইরফান খানকে দেয়া হয় প্রস্তাব।
গুলশানের ব্যক্তিগত সহকারি ছিলেন বলিউডের খ্যাতনামা অভিনেত্রী মন্দাকিনির ভাই ভানু। ফিলোমিনার সঙ্গে গুলশনের বিচ্ছেদের পর তাকে বিয়ে করেন ভানু। বিয়ের পর ফিলোমিনাকে নিয়ে লন্ডনে চলে যান তিনি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ সক্রিয় গুলশান। ইতোমধ্যেই ইন্সটাগ্রামে তার অনুসারীর সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১৯ লাখ।
আরো পড়ুন: মুক্তি পেয়েছে ‘মা কালি’র টিজার