পরীমণিকাণ্ডে চাকরি হারানো কে এই সাকলায়েন?

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৪, ০২:৪৫ পিএম

পুলিশ কর্মকর্তা গোলাম সাকলায়েন শিথিল ও চিত্রনায়িকা পরীমণি। ছবি: সংগৃহীত
সাভারের বোট ক্লাবে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তের তদারকি কর্মকর্তা গোলাম সাকলায়েনের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে চিত্রনায়িকা পরীমণির। সেই কারণে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বাসায় একাধিকবার যাতায়াতও করেছেন তিনি।একই বাসায় রাত্রিযাপন করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া তারা বিভিন্ন সময় গাড়িতে করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরাও করেছেন। অবৈধ সম্পর্কের প্রমাণ প্রমাণিত হওয়ায় পুলিশের পদ থেকে তাকে প্রত্যাহার করা হচ্ছে।
আলোচিত এই পুলিশ কর্মকর্তার নাম গোলাম সাকলায়েন শিথিল। তিনি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার হিসেবে কর্মরত। ছাত্র ও কর্মজীবনে বেশ সফল এক ব্যক্তি ছিলেন সাকলায়েন। কিন্ত এক পরিকাণ্ডে তছনছ তার জীবন।
জানা গেছে, ৩০তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে প্রথম হয়েছিলেন সাকলায়েন। যোগ দেওয়ার পর পুলিশ একাডেমিতে বুনিয়াদী প্রশিক্ষণেও হয়েছিলেন সেরা। পেয়েছিলেন বেস্ট প্রবিশনারি অ্যাওয়ার্ড, বেস্ট একাডেমিক এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড। পেশাগত দক্ষতা বাড়িয়ে নিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মাস্টার্স অব পুলিশ সায়েন্সেও হয়েছিলেন প্রথম।
পেশাগত দক্ষতার জন্য সাকলায়েন যে আরও অনেক পুরস্কারই পাবেন, সেটিও ছিল অনুমিত। সর্বশেষ সাহসিকতা ও দক্ষতার স্বীকৃতি হিসেবে পুলিশ সদস্যদের মধ্যে যে পদক বিতরণ করেছেন, তাতেও তাই স্বাভাবিকভাবেই ছিল তার নাম। পেয়েছেন রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (পিপিএম)।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে পিপিএম পদক গ্রহণ করা এই পুলিশ কর্মকর্তাই হলেন গোলাম সাকলায়েন শিথিল। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (উত্তর) শাখার অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) সূত্রে জানা গেছে, দেশের শীর্ষ সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও বন্দুকযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ কাজ ও অসীম সাহসিকতার জন্যই তাকে এই পদক দেওয়া হয়।
সাকলায়েনের স্ত্রীও প্রশাসন ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। ঢাকার পার্শ্ববর্তী একটি জেলায় তার স্ত্রী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তাদের একটি সন্তানও রয়েছে।
জীবনের একটা পর্যায়ে এসে এমন সাফল্য আর স্বীকৃতি একের পর এক ধরা দিলেও সাকলায়েনের জীবনের উত্থানের পথ এতটা মসৃণ ছিল না। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় পদ্মার পাড়ে মোক্তারপুর গ্রামে জন্ম নেওয়া বেড়ে ওঠার গল্পটাও ছিল সংগ্রাম মুখর। মেধা আর পরিশ্রমে অবশ্য সব প্রতিকূলতা জয় করেই আজকের এই অবস্থানে এসে পৌঁছেছেন সাকলায়েন।
বেস্ট প্রবেশনারি অ্যাওয়ার্ডের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করে পরে পেয়েছেন বেস্ট একাডেমিক এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড। বিভাগের সবার পরামর্শে পেশাগত দক্ষতার তাত্ত্বিক জ্ঞান বাড়িয়ে নিতেই একসময় ফের ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে, পুলিশ সায়েন্সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিতে। এবার তাতেও প্রথম হন সাকলায়েন।