×

অর্থনীতি

সোনালী ব্যাংকের সাফল্য ধরে রাখার বছর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১২:২৪ পিএম

সোনালী ব্যাংকের সাফল্য ধরে রাখার বছর
   

ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ। সোনালী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবং সিইওর দায়িত্বে রয়েছেন। এর আগে তিনি রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত কর্মস্থান ব্যাংকের এমডির দায়িত্ব পালন করেন। তার আগে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবেও কর্মরত ছিলেন।

গত অর্থবছরে সোনালী ব্যাংকে আমূল পরিবর্তন এসেছে। দেশের সবচেয়ে বড় সরকারি ব্যাংক, সোনালী ব্যাংকের খেলাপিঋণের আদায় রেকর্ড পরিমাণ ছাড়িয়েছে। পাশাপাশি রেকর্ড পরিমাণ মুনাফা হয়েছে। সোনালী ব্যাংকের চলতি বছরের স্লো গান হচ্ছে সংহত করা বা সাফল্য ধরে রাখার বছর। আগামী বছর হবে ধারাবাহিকতা শক্তি অর্জনের বছর। তার এ টার্গেট বাস্তবায়নে সাফল্য অর্জন করবেন বলে মনে করেন তিনি। ভোরের কাগজের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি সোনালী ব্যাংকের বর্তমান সমৃদ্ধি ও আগামীর স্বপ্ন নিয়ে কথা বলেছেন। সঙ্গে ছিলেন স্টাফ রিপোর্টার মরিয়ম সেঁজুতি। বিস্তারিত-

ভোরের কাগজ : গত বছর প্রায় সব সূচকেই সোনালী ব্যাংক অনেক এগিয়েছে। কীভাবে সম্ভব হয়েছে? ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ : আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর বছর শেষ করে আমরা সামনে এগিয়ে গিয়েছি। গত বছরে আমাদের খেলাপিঋণের আদায় রেকর্ড পরিমাণ ছাড়িয়েছে। পাশাপাশি রেকর্ড পরিমাণ মুনাফা হয়েছে। আমানত সংগ্রহ, শাখা বিস্তার, বিনিয়োগ, ঋণ প্রদানসহ নানা সূচকে উন্নয়নের ধারা বজায় রেখে তা আরো উন্নত করাই আমার প্রধান লক্ষ্য। কয়েক বছর ধরেই হল-মার্ক, বিসমিল্লাহ গ্রুপের সমস্যাগুলো পর্যবেক্ষণ করেছি। এ থেকে উত্তরণের একটি স্বচ্ছ ধারণাও আমার হয়েছে। এজন্য এ ব্যাংকে যোগদানের পর পরই সব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। ব্যাংকটিতে কী ধরনের দুর্বলতা রয়েছে, সেগুলো বাছাই করা হয়েছে। শুধু দুর্বলতাই নয়, আমাদের অনেক সক্ষমতা ও সম্ভাবনাও রয়েছে। সেগুলো বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করা হবে। এ দুটি ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের সহযোগিতা প্রয়োজন। ভোরের কাগজ : বর্তমানে আপনাদের ব্যাংকের সূচকগুলো কোন পর্যায়ে আছে? ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ : বিদায়ী ২০১৮ সালে সোনালী ব্যাংক মুনাফা হয়েছে ২ হাজার ৫৮ কোটি টাকা। আগের বছর ২০১৭ সালে হয়েছিল ১ হাজার ১৯৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে ২০১৮ সালে মুনাফা বেড়েছে ১ হাজার ১৮০ কোটি ১২ লাখ টাকা। বিদায়ী বছরের রেকর্ড পরিমাণ খেলাপিঋণ আদায় হয়েছে। বিদায়ী বছরের খেলাপিঋণ আদায় হয়েছে ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। সোনালী ব্যাংকের ১ হাজার ২১৪টি শাখা রয়েছে সবগুলো শাখা অনলাইনে আওতায় এসেছে। আমি যখন সোনালী ব্যাংকের দায়িত্ব নেই তখন ব্যাংকটির লোকশান ছিল প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। জুলাই ২০১৬ সালে লোকসানি শাখা ছিল ৩০৫টি বর্তমানে কমে ৯৩টি শাখা লোকসানি। ব্যাংকটির আমানত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৬৮৮ কোটি ৩৬ টাকা। ব্যাংকিং খাতের বিভিন্ন সূচকে এখনো শীর্ষে অবস্থান করছে সোনালী ব্যাংক। ভোরের কাগজ : খেলাপি আদায়ের ক্ষেত্রে যে সাফল্য অর্জন করেছেন তাতে কি ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন? ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ : খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে অসতর্কভাবে শুধু সংখ্যাটা উল্লেখ করলেও সঠিক মাত্রায় পরিমাপ করা যায় না। সব খেলাপিঋণ এক জাতীয় নয়। খেলাপিঋণকে শ্রেণি বিন্যাস করতে হবে এবং নির্ধারণ করতে হবে, কী কারণে ঋণগুলো খেলাপি হয়েছে। এদিকে ব্যাংকটির কর্মকর্তারা বলছেন, হল-মার্ক কেলেঙ্কারি থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন পথে হাঁটছেন তারা। লাগাম টেনেছেন বড় ঋণের। আমানতের টাকা বিনিয়োগ করছেন বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে। অন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সেই টাকা দিয়ে ব্যবসা করছে। সোনালী ব্যাংক সেই সুদের ওপর ভর করেই বড় হচ্ছে। সেই সুদে মুনাফাও করছে এই ব্যাংক। এখন কথা হলো এই খেলাপিঋণ আদায় হয়েছে মূলত ছোট ছোট ঋণগ্রহীতার কাছ থেকে। এদিকে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সোনালী ব্যাংকের মতো অন্য ব্যাংকগুলোও যদি খেলাপিঋণ আদায়ে উদ্যোগী হয়, তাহলে হয়ত শিগগিরই ব্যাংক খাত আবার জেগে উঠবে। তবে সেই পুনর্জাগরণকে যাতে আবার লুটপাটকারী মহল সুযোগ হিসেবে দেখতে না পারে, সে জন্য টেকসই রক্ষাকবচ দরকার। ভোরের কাগজ : সোনালী ব্যাংক নতুন প্রজন্মকে কি হিসেবে দেখে? ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ : সোনালী ব্যাংকের ৪০ থেকে ৫০ ভাগ লোকবল নতুন প্রজন্ম। সোনালী ব্যাংকের সব শাখায় তারা কর্মরত। স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে মোটিভেশন দিয়েই ঐক্যবদ্ধ করে জাগিয়ে তুলেছিলেন। তার এ আহবানে মৃত্যু জেনেও স্বাধীনতা যুদ্ধে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। নয় মাস যুদ্ধে দেশ স্বাধীনও হয়েছে। তার মোটিভেশনে (প্রেরণা) বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। ১৯৭৫ সালে একদল বিপথগামী তাকে মেরে ফেললেও তার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশে এখন জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশের ওপরে আসা সম্ভব হয়েছে। আমি সোনালী ব্যাংকে এসে সেই আদর্শকে ধারণ করে নতুন করে চিন্তা করি, কীভাবে এগিয়ে যাওয়া যায়। যুদ্ধে অভিনয় চলে না। তাই নতুন প্রজন্মকে নিয়েই আমি চিন্তা করতে থাকি কীভাবে তাদের কাজে লাগানো যায়। ব্যাংকের যারা নতুন প্রজন্মের তারা মিথ্যে কথা বলেন না। ম্যানেজমেন্ট ঠিক রেখে সবাই রানার হিসেবে গুড ম্যানেজারের (ভালো ব্যবস্থাপক) ভূমিকা পালন করছেন। তাদের গায়ে হাত বুলিয়ে আদর করে এ অবস্থায় আসা সম্ভব হয়েছে। এভাবে তারা অনুপ্রাণিত হয়ে নিজ নিজ টার্গেট পূরণ করতে সক্ষম হয়েছেন। বিনিময়ে তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। প্রতি দিনই বিভিন্ন শাখার স্টেটমেন্ট নেয়া হচ্ছে। তাতে ব্যাংকের বাস্তব চিত্র দেখা যাচ্ছে। শাখা ম্যনেজারদের ফোন করা হয়। তারা হতবাক হয়ে যান। একই সঙ্গে অনুপ্রেরণাও পান কাজে। অফিস সময়ের পরও তারা রাত ৮টা পর্যন্ত পাগলের মতো কাজ করেন। যা পৃথিবীর কোথাও নেই। ভোরের কাগজ : বর্তমানে ব্যাংক ঋণের ক্ষেত্রে কোন বিষয়টাকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন? ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ : বিভিন্ন কারণে সোনালী ব্যাংকে বড় বড় ঋণে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। সারা দেশে নারী উদ্যোক্তা লোন ও এসএমই ঋণ বাড়ানোর দিকেই বেশি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কারণ এটা হচ্ছে অগ্রাধিকার খাত। দেশের উন্নয়নে এসএমই ঋণই হচ্ছে প্রধান। এতে সারা দেশের মানুষ উপকৃত হবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App