×

অর্থনীতি

বাজেট বাস্তবায়নে গতানুগতিকতা থেকে বেরিয়ে আসার বিকল্প নেই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৩, ১০:১৫ পিএম

https://www.youtube.com/watch?v=yOHIfagcfNo
   

প্রস্তাবিত বাজেটে সচরাচর যে পরিমাণ রাজস্ব আদায় করা সম্ভব হয় তার তুলনায় অনেক বেশি রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে ধরে রাখার যে লক্ষ্য নির্ধারিত হয়েছে সেটি বাস্তবায়নও বাজেটের বড় চ্যালেঞ্জ। কেননা মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন আর অভ্যন্তরীণ ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণ নেয়ার ফলেও মূল্যস্ফীতির চাপ অব্যাহত থাকতে পারে। তাই চ্যালেঞ্জিং এই বাজেট বাস্তবায়নে আগের যে কোন সময়ের তুলনায় বেশি নিষ্ঠা দেখাতে হবে।

শনিবার (১৭ জুন) সকালে রাজধানীর বাংলামটরে উন্নয়ন সমন্বয় আয়োজিত প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়ের খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ কনফারেন্স কক্ষে ‘বাজেট প্রতিক্রিয়া’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এমন মতামত দিয়েছেন দেশের শীর্ষ অর্থনীতিবিদ ও উন্নয়ন গবেষকরা।

উন্নয়ন সমন্বয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমানের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অর্থনীতির অধ্যাপক ড. এমএম আকাশ, বিআইজিডির সিনিয়র ফেলো অব প্র্যাকটিস ড. মাহীন সুলতান, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. একে এনামুলক হক, বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. এসএম জুলফিকার আলী, ইউএনডিপির কান্ট্রি ইকোনমিস্ট ড. নাজনীন আহম্মেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়নের অধ্যাপক ড. এম. আবু ইউসুফ, একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ড. রুমানা হক, বিআইজিডির ভিজিটিং ফেলো খন্দকার সাখাওয়াত আলী, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব এবং বিআইআইএসএসের গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবীর।

সভাপতির বক্তব্যে ড. আতিউর রহমান বলেন, আপৎকালিন বাস্তবতার নিরিখে আসছে অর্থবছরের জন্য সরকারি আয়-ব্যয়ের একটি চ্যালেঞ্জিং পরিকল্পনা হিসেবেই প্রস্তাবিত বাজেটকে দেখতে হবে। একই সঙ্গে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক কালের সামষ্টিক অর্থনৈতিক অর্জনগুলো যে শক্তি যোগাবে সেটিও মনে রাখতে হবে।

আতিউর রহমান বলেন, এক বছরের বাজেটটি যদিও আপৎকালীন পরিবেশে চ্যালেঞ্জিং বাজেট, কিন্তু এর মধ্যে ভবিষ্যৎমুখী বেশ কিছু দিকও আছে। সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য মনিটরিং পলিসির অংশটা পালন করলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

একটি বাজেট দিয়েই একটি দেশের পরিবর্তন হয় না উল্লেখ করে এই অর্থনীতিবিদ আরো বলেন, ইটের পর ইট গেথেই বিল্ডিং গড়তে হয়। গত ১৪-১৫ বছরে আমরা খারাপ যে করিনি তার প্রমাণ হলো ২০০৬ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে আমাদের কৃষি উৎপাদন ২৬ মিলিয়ন টন থেকে ৪ গুণ বেড়ে ৯১ মিলিয়ন টনে উন্নীত হয়েছে। এই সময়ে বার্ষিক রপ্তানী ৫ গুণ বেড়েছে, রেমিটেন্স ৬ গুণ বেড়েছে। রপ্তানি ৫২ বিলিয়ন ডলারের উপরে উঠে গেছে, রেমিটেন্স ২২ থেকে ২৪ বিলিয়নের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে।

এমএম আকাশ বলেন, এই বাজেটকে আপৎকালীন বাজেট না বলে রিকভারি ও চ্যালেঞ্জের বাজেট বলা যায়। কারণ আপৎকালীন যখন ছিল তখন ইউক্রেন যুদ্ধ ছিল, করোনা ছিল।

সামাজিক সুরক্ষা প্রসঙ্গে ড. একে এনামুল হক বলেন, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জনের একটি শর্ত হলো সার্বজনীন পেনশন স্কিম। কিন্তু এটি পরিকল্পনায় থাকলেও বাস্তবায়নে ধীর গতি হতাশাজনক।

ড. রুমানা হক বলেন, বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ ৫ শতাংশের আশেপাশে আটকে আছে বহুদিন। এর ফলে স্বাস্থ্যসেবা বাবদ ব্যয়ের চাপ বাড়ছে জনগণের ওপর।

ড. ইকবাল হাবিব বলেন, এবারের বাজেটে আমার গ্রাম আমার শহর প্রকল্প সরকার বিশাল করে ঘোষণা দিয়েছে। অসাধারন উদ্যোগ। কিন্তু গণপরিসরভিত্তিক বা গ্রামীন বাস্তুসংস্থানভিত্তিক কোনো বরাদ্দই দেখলাম না। কিন্তু প্রতিবছর উনসত্তর হাজার হেক্টর কৃষি জমি চলে যাচ্ছে। কারণ নতুন নতুন বাড়ি বানানো হচ্ছে। কৃষি জমি যদি সংরক্ষণ করা না হয় কৃষি খাতে বাজেট বাড়িয়ে কোনো লাভ নেই। যদি জমিই না থাকে! অন্তর্ভূক্তিতার ক্ষেত্রে প্রণোদনা ও শাস্তি জরুরি ভিত্তিতে দিতে হবে।

ড. জুলফিকার আলী বলেন, সমাজে যারা বিত্তবান তাদের কাছ থেকে বেশি কর আহরণের পরিবর্তে করযোগ্য নন এমন মানুষের কাছ থেকে আয়কর রিটার্ন বাবদ টাকা আদায়ের চেষ্টা ও প্রত্যক্ষ করের চেয়ে পরোক্ষ করের ওপর বেশি নির্ভরতার কারণে বাজেটের কর প্রস্তাবগুলোকে জনবান্ধব করা সম্ভব হচ্ছে না।

জলবায়ু সহিষ্ণু উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বাজেট বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়ে ড. নাজনীন আহম্মেদ বলেন, দেশে যে পরিমাণ অন্যদের আয় বাড়ছে, দরিদ্র মানুষেররা সেই তুলনায় জোরে দৌঁড়াতে পারছে না।

গোলটেবিল আলোচনায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের প্রস্তাবনার বিশ্লেষন, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য অর্জনে চ্যালেঞ্জ ও সামাজিক সুরক্ষাসহ সামাজিক খাতে বরাদ্দের যৌক্তিকতার পাশাপাশি আলোচকরা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক সুরক্ষায় মোট বাজেটের ১৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলা হলেও এই বরাদ্দ থেকে সরকারি পেনশন ও উন্নয়ন প্রকল্প বাবদ বরাদ্দ বাদ দিলে সামাজিক সুরক্ষার অংশ কমে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৬ শতাংশ। বিদ্যমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় বাজেটে নগর অঞ্চলের দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য নতুন কোনো সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি না থাকাটা অস্বাভাবিক বলে মনে হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App