×

অর্থনীতি

চিনি ও পেঁয়াজে কাটেনি অস্থিরতা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ জুন ২০২৩, ০৬:৪৮ পিএম

চিনি ও পেঁয়াজে কাটেনি অস্থিরতা
   

স্বস্তি নেই মাছ-মুরগি-সবজিতে

আমদানির পরও স্থিতিশীলতা আসেনি উত্তপ্ত হওয়া পেঁয়াজের বাজারে। একই সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ দামে স্থীর থাকা চিনির দামেও কাটেনি অস্থিরতা। স্বস্তি নেই মাছ, মুরগি ও সবজিতেও। এমন পরিস্থিতিতে বিশেষত নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের মাত্রাতিরিক্ত দামে নাভিশ্বাস উঠেছে সীমিত আয়ের মানুষের। অনেকে প্রয়োজনের তুলনায় কম পণ্য কিনে ঘরে ফিরছেন। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঘোড়া যেন থামছেই না।

শুক্রবার (১৬ জুন) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, দেশি পেঁয়াজের কেজি ৭০, কোথাও ৭৫, আবার কোথাও ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহেও একই দর ছিল। এছাড়া, ভারতীয় ভালো মানের পেঁয়াজ ৪০-৫৫ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৫৫-৬০ টাকা। তবে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের মান খুব একটা ভালো দেখা যায়নি। বিক্রেতারা এ ধরনের পেঁয়াজের কেজি ৩৩-৩৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন। মাত্র দুই মাস আমদানি বন্ধ থাকায় পেঁয়াজের বাজার বেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠে। তবে আমদানির অনুমতি দেয়ার পর প্রতিদিনই কমবেশি পেঁয়াজ আসছে ভারত থেকে। তবু কমেনি দেশি পেঁয়াজের দাম। কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ-রসুন বিক্রেতা মোতালেব বলেন, ভারতীয় পেঁয়াজের বেশিরভাগই পচা। সেগুলো কম দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে দেশি পেঁয়াজের চাহিদা বেশি। এ কারণে খুব একটা কমেনি দেশি পেঁয়াজের দর।

এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে চলা চিনির দামে অস্থিরতা কাটাতে মাস খানেক আগে সরকার খোলা চিনি ১২০ ও প্যাকেটজাত চিনির কেজি ১২৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছিল। আমদানিকারক থেকে খুচরা ব্যবসায়ী কেউই মানেনি সেই দাম। আমদানি করা প্রতি কেজি সাদা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৪০ টাকা দরে। এর মধ্যে আবারো দাম বাড়ানোর জন্য চিঠি দিয়েছে আমদানিকারকরা। গত সপ্তাহে তারা খোলা চিনি কেজিতে ২০ টাকা ও প্যাকেট চিনি কেজিতে ২৫ টাকা বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনে চিঠি দিয়েছে। যদিও এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি কমিশন। এরই মধ্যে কেজিতে ৫ টাকা বাড়িয়ে দেশি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৫৫-১৬০ টাকা দরে। যা গত সপ্তাহে ছিল ১৫০-১৫৫ টাকা। দাম বেশি হওয়ায় খুচরা বিক্রেতাদের কেউ কেউ চিনি বিক্রি করছেন না। কারওয়ান বাজারের সোনারগাঁও স্টোরের স্বত্বাধিকারী মহসিন হোসেন বলেন, প্যাকেট চিনির দর লেখা আছে ১২৫ টাকা। ডিলারদের থেকে ১২৫ টাকা দরেই কিনতে হয়। এর সঙ্গে বাধ্যতামূলক হাফ কেজি গুঁড়া দুধ বা অন্য কিছু কিনতে হয়। এ কারণে চিনি বিক্রি বাদ দিয়েছি।

চিনি-পেঁয়াজের যখন এই অবস্থা, তখন স্বস্তি নেই ব্রয়লার মুরগিতেও। রোজা শুরু হওয়ার পর ধাপে ধাপে বেড়ে ২০০-২১০ টাকায় উঠেছিল ব্রয়লারের দাম। ধীরে ধীরে কমে গত সপ্তাহে ব্রয়লারের কেজি বিক্রি হয়েছিল ১৮০-১৯০ টাকা। যা গতকাল আবার ২০০-২১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। সোনালি জাতের মুরগির দামে তেমন পরিবর্তন নেই। আগের মতোই কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৭০-২৯০ টাকায়। গত সপ্তাহের মতো ডিমের ডজনও ১৪০ টাকায় বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। আর গরু-খাসির মাংস আগের দামেই যথাক্রমে ৮৫০ টাকা ও ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাংসের অতিরিক্ত দামের কারণে সীমিত আয়ের মানুষেরা তেলাপিয়া বা পাঙাশের মতো সস্তা দামের মাছের দিকে যখন ঝুঁকছিলেন। ঠিক তখন থেকেই মাছের দামও বাড়তে শুরু করে। এরই মধ্যে তেলাপিয়া ও পাঙাসের দামও কেজিপ্রতি ৪০-৬০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর ভালো চাহিদার মাছের দাম বেড়েছে কেজিতে ২০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত। গতকাল সকালে রাজধানীর মালিবাগ বাজারে মাছ কিনতে এসে বেসরকারি চাকুরিজীবী আজাদ বলেন, আগে হাফ কেজি কাচকি মাছ ২০০ টাকায় হয়ে যেত। না হয় এই টাকায় এক কেজি সাইজের তেলাপিয়া বা পাঙাশ কিনতাম। এখন সেটাও হচ্ছে না। এতো দাম হলে তো আমাদের পক্ষে মাছ কিনে খাওয়া কঠিন। বাজারে তেলাপিয়া ও পাঙাশ মাছের দাম এখন প্রতি কেজি ২৫০-২৮০ টাকা। এক সপ্তাহ আগেও যা ছিল ২২০-২৩০ টাকার মধ্যে। অন্য মাছের মধ্যে মাঝারি ও বড় আকারের চাষের রুই, কাতলা ও মৃগেল মাছের দাম প্রতি কেজি ৩৪০-৪০০ টাকা। এসব মাছের দামও সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর উন্মুক্ত জলাশয়ের (নদ-নদীর) মাছ কিনতে ক্রেতাকে কেজিপ্রতি গুনতে হচ্ছে আরো ১০০-১৫০ টাকা বেশি। বাজারে পাবদা, টেংরা, কই, বোয়াল, চিতল, আইড় ও ইলিশ মাছের যে দাম, তা নিম্নবিত্ত তো বটেই, মধ্যবিত্তেরও নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মাছের দামও কেজিতে ৫০-২০০ পর্যন্ত টাকা বেড়েছে।

চড়া দামের বাজারে মাছ-মাংস বাদ দিয়ে যারা সবজির দিকে ঝুঁকছেন, তাদের জন্যও কোনো সুখবর নেই। টানা অস্থিতিশীল সবজির দাম গত সপ্তাহে কিছুটা কমলেও তা আবার বেড়েছে। ৫০ টাকার মধ্যে শুধু গ্রীষ্মকালীন পটল-ঢেঁড়স মিলছে। অন্য সব বারোমাসি সবজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি দরে। এদিকে, গত রবিবার বাজারে ভোজ্যতেল লিটারপ্রতি ১০ টাকা কমিয়ে দাম নির্ধারণ করা হলেও নতুন দামে তেল পাচ্ছেন না ভোক্তারা। ফলে আগের দামে অর্থাৎ প্রতি লিটার ১৯৯ টাকায় কিনতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন দামের তেল এখনো বাজারে আসেনি। ফলে আগের কেনা দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App