সিএমএসএফ ফান্ড কখনো কমবে না: বিএসইসি চেয়ারম্যান

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:৪০ পিএম

সিএমএসএফ আয়োজিত ‘আউটকাম অব রেজাল্ট অরিয়েন্টেড আইসিটি ওয়ার্কসপ অ্যান্ড অ্যানুগ্রেশন অব গোল্ডেন জুবিলি মিউচ্যুয়াল ফান্ড (জিজেএমএফ ‘ প্রোগ্রামে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ। ছবি: ভোরের কাগজ
ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন (সিএমএসএফ) ফান্ডকে পরিচালনার জন্য এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যা কখনোই কমবে না। এটা দিনে দিনে বাড়বে। তাই বিনিয়োগকারীদের উচিৎ এই ফান্ডে বিনিয়োগ করে ভালো রিটার্ণ নেয়া। এই ফান্ড থেকে বিনিয়োগকারীরা ডাবল গেইন পাবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত-উল-ইসলাম।
ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড (সিএমএসএফ) আয়োজিত ‘আউটকাম অব রেজাল্ট অরিয়েন্টেড আইসিটি ওয়ার্কসপ অ্যান্ড অ্যানুগ্রেশন অব গোল্ডেন জুবিলি মিউচ্যুয়াল ফান্ড (জিজেএমএফ)’ নামক প্রোগ্রামে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার। অনুষ্ঠানে কী নোট স্পিকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডা. মো. তারেক।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গোল্ডেন জুবিলি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের চেয়্যারম্যান মো. নজিবুর রহমান।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ, ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান, সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত প্রমুখ।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ২০২০ সালের মে মাসে করোনা মহামারির সময় আমরা বিএসইসির দায়িত্ব নিয়েছি। তখন শেয়ার মার্কেট বন্ধ ছিলো। ইনডেক্স ছয় হাজার থেকে কমে অবস্থান করছিল ৩ হাজারের ঘরে। সেখান থেকে আমরা গুড গভর্নেন্সকে গুরুত্ব দিয়ে কাজ শুরু করি।
সে ক্ষেত্রে আমাদেরকে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ পর্যন্ত যত বিষয় নিয়ে তার কাছে গিয়েছি কোনো বিষয়েই তার কাছ থেকে খালি হাতে ফিরে আসতে হয়নি বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে শেয়ারবাজারের কোনো বিষয় নিয়ে যখনই যাই, তিনি আন্তরিকতা নিয়ে সহযোগিতা করেন। আজ পর্যন্ত কোনো বিষয়ে খালি হাতে ফিরিয়ে দেননি। শেয়ারবাজারে আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বিষয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ভারতে যেমন মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রতি মানুষের আগ্রহ রয়েছে, বাংলাদেশেও ঠিক সেভাবেই মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রতি সাধারণ মানুষকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। যার ফলে তৈরী হয়েছে গোল্ডেন জুবিলি ফান্ড।
আমাদের দায়িত্বের প্রথমেই অভিযোগ আসে বিনিয়োগকারীরা ডিভিডেন্ড পায় না। তাহলে ডিভিডেন্ড কোথায় যায়, এটা জানতে সবগুলো কোম্পানিকে চিঠি দেওয়া হয়। কোম্পানিগুলো বলে ডিভিডেন্ড নেওয়ার জন্য সঠিক ঠিকানা পাওয়া যায় না। কিন্তু ডিভিডেন্ডগুলো কোম্পানিগুলোর কাছে রয়ে গেছে। যার পরিমাণ প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা।
কোম্পানিগুলোর জমে থাকা এই ডিভিডেন্ডের টাকা দিয়ে আইসিবির কাস্টডিও অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ফান্ড গঠন করা হয়। যার নাম ক্যাপিটাল মার্কেট স্টাবিলাইজেশন ফান্ড। এখন পর্যন্ত এই ফান্ডে ৫০০ কোটি টাকার মতো জমা পড়েছে। এই টাকাগুলো সরকারের একটি সংস্থার কাছে রেখে যদি ব্যবহার করা যায়, তাহলে শেয়ার মার্কেটে তারল্য সংকট কিছুটা দূর হবে।
তিনি বলেন, এই ফান্ডকে পরিচালনার জন্য এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যা কখনোই কমবে না। এটা দিনে দিনে বাড়বে। তাই বিনিয়োগকারীদের উচিৎ এই ফান্ডে বিনিয়োগ করে ভালো রিটার্ণ নেওয়া। এই ফান্ডে থেকে বিনিয়োগকারীরা ডাবল গেইন পাবে বলে জানান তিনি।
শিবলী রুবায়েত উল ইসলাম বলেন, এই ফান্ড অনেক ভালো করবে। কারণ এই ফান্ডের পরিচালনায় যারা রয়েছেন, তারা সকলে খুবই দক্ষ ও অভিজ্ঞ।
প্রসঙ্গত, গত আগস্টে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানকে প্রধান করে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়। ১০ সদস্যবিশিষ্ট এ পর্ষদের অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বিএসইসি।
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বিভিন্ন কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের বিতরণ না হওয়া লভ্যাংশ দিয়ে এ ফান্ড গঠন করা হয়েছে। গত ২৭ জুন এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। বিএসইসির ডেপুটি ডিরেক্টর সিরাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় বলা হয়, ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড রুলস অনুসারে পরিচালনার জন্য ১০ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান এই পর্ষদের চেয়ারম্যান।
পর্ষদের অন্য সদস্যরা হলেন- বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. তানজীল দিপ্ত, দৈনিক ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারেক আমিন ভূঁইয়া, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, সিডিবিএলের ভাইস চেয়ারম্যান নূরুল ফজল বুলবুল, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তারেক, বাংলাদেশ পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানির চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরী, দি ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) সদস্য এ কে এম দেলোয়ার হোসেন। এই পর্ষদ আগামী তিন বছরের জন্য গঠন করা হয়েছে।