ফোরকানের বাবার অভিযোগ
মিথ্যা তথ্য দিয়ে শেখ হাসিনা, রেহানা, জয়সহ ১৬০ জনের নামে মামলা

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৮ পিএম

শেখ হাসিনা-সজীব ওয়াজেদ জয়-শেখ রেহানা-ফোরকান আলী। ছবি: সংগৃহীত
বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার খোট্টাপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আবদুল কুদ্দুস তার ছেলে ফোরকান আলী হত্যা মামলার তদন্ত কার্যক্রম স্থগিতের জন্য পুলিশ সুপারের কাছে আবেদন করেছেন। এ নিয়ে আগামী রবিবার (২৪ নভেম্বর) বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (শাজাহানপুর) আমলি আদালতে একটি আবেদন করার পরিকল্পনা রয়েছে তার।
আবদুল কুদ্দুস অভিযোগ করেছেন, তার বা পরিবারের কোনো সদস্য এই হত্যা মামলা দায়ের করেননি। তিনি দাবি করেন, মামলাটি মিথ্যা তথ্য দিয়ে দায়ের করা হয়েছে এবং বাদী ইউনুস আলীসহ মামলার সাক্ষীরা চাঁদাবাজি করছেন। তার মতে, ফোরকান আলী কোনো গুলির আঘাতে মারা যাননি, বরং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়ায় ভীত হয়ে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্ত ছাড়াই পরিবারের সিদ্ধান্তে ফোরকান আলীর দাফন করা হয়।
ফোরকান আলী বগুড়ার খোট্টাপাড়া ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক ছিলেন এবং বেসরকারি সংস্থা টিএমএসএসের একটি কারখানার কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। গত বছরের ৩ ডিসেম্বর সকালে শাজাহানপুরের সাজাপুর এলাকায় বিএনপির অবরোধ সমর্থনে মিছিল বের করা হয়। মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের ধাওয়া দিতে গিয়ে ফোরকান আলী মোটরসাইকেলে পড়ে গিয়ে আহত হন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
১১ মাস পরে, ১ নভেম্বর, বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (শাজাহানপুর) আমলি আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, শেখ রেহানা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি সাজেদুর রহমান, নুরুজ্জামানসহ ১৬০ জনের নাম উল্লেখ এবং আরো ৪০০-৫০০ অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
এ মামলায় অভিযোগ করা হয় যে, ফোরকান আলীকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, যা পরিবার ও মামলার বাদী আবদুল কুদ্দুসের মতে মিথ্যা। তিনি জানান, মামলা দায়েরের সময় পরিবারকে না জানানো হয় এবং বাদী ইউনুস আলী চাঁদাবাজির উদ্দেশ্যে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন।
ফোরকান আলীর ছোট ভাই ওমর ফারুক বলেন, আমাদের পরিবারের কোনো সদস্য এই হত্যা মামলা দায়ের করেননি, বরং ইউনুস আলী আমাদের ভাইয়ের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ছিলেন। তিনি আরো বলেন, যদি ভাইয়ের মৃত্যু হত্যার কারণে হতো, আমরা নিজেদের পক্ষ থেকে মামলা করতাম।
এদিকে, মামলার তদন্ত নিয়ে বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা প্রথম আলোকে জানান, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী তদন্ত কার্যক্রম চলছে। তিনি বলেন, যেহেতু আদালতে মামলা হয়েছে, মামলার পরবর্তী কার্যক্রমও আদালত থেকেই আসবে।
মামলার বাদী ইউনুস আলী জানান, এই মামলা দলীয় সিদ্ধান্তে দায়ের করা হয়েছে এবং পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করেই মামলা দায়ের করা হয়েছে। চাঁদাবাজির অভিযোগ ভিত্তিহীন।
মামলার তদন্ত কার্যক্রম স্থগিত করার আবেদন বগুড়ার পুলিশ সুপারকে দেয়া হলেও শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াদুদ আলম বলেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলবে। যদি আদালত তদন্ত স্থগিতের নির্দেশ দেন, তবে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।