সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী-আইনমন্ত্রীসহ আসামি ১৫৬ জনের মামলা

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:১৯ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নাশকতার অভিযোগে সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এবং সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকসহ ১০৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এ মামলায় অজ্ঞাতনামা আরো ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক ইব্রাহিম আহমেদ ওরফে শাহীন বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। তিনি শহরের কান্দিপাড়ার বাসিন্দা।
মামলায় সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অন্য আসামিরা হলেন-ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রীর সহধর্মিণী এবং মাউশির সাবেক মহাপরিচালক ও ইউনিভার্সিটি অব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ট্রেজারার প্রফেসর ফাহিমা খাতুন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ (বাঞ্ছারামপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ বি তাজুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (আশুগঞ্জ-সরাইল) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাইন উদ্দিন মঈন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ এ.কে একরামুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র হেলাল উদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর সভার সাবেক মেয়র মিসেস নায়ার কবির, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম খোকনকে আসামি করা হয়েছে।
আরো আসামিরা হলেন-জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. ডিউক চৌধুরী, সদস্য ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি হাসান সারোয়ার, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. শাহ আলম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ এইচ মাহবুব আলম, কসবা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রুস্তম খাঁসহ ১০৬ জন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, ছাত্রদলের আহবায়ক বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। মামলায় দুই মন্ত্রী, একাধিক সংসদ সদস্যসহ আওয়ামী লীগের ১০৬ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটি সদর থানায় নথিভুক্ত করা হয়েছে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত জুলাই-আগস্টে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সব স্তরের সমন্বয়কসহ সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলনে প্রত্যক্ষভাবে অংশ নেন ছাত্রদল নেতারা। গত ৪ আগস্ট গভ. মডেল গার্লস হাইস্কুলের সামনে ছাত্রদলের আহ্বায়কের নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। সেসময় মামলার আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা ৪০ থেকে ৫০ জন দা, লাঠি, লোহার রড, কিরিজ, পিস্তল, বল্লম, পেট্রল, কেরোসিন, ককটেল, হাতবোমা নিয়ে মিছিলের চতুর্দিকে ঘেরাও করে। সাবেক গণপূর্ত মন্ত্রী মোকতাদির চৌধুরী, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য একরামুজ্জামান এই নির্দেশ দেন।
আসামিরা আন্দোলনরত কয়েকজন স্কুল-কলেজ ছাত্রীদের চুলের মুঠি ধরে লোহার রড, বাঁশের লাঠি দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। তারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ঘটনাস্থলে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেন। ককটেলের স্প্রিন্টারের আঘাতে ছাত্রদলের আহ্বায়কসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। আসামিরা ঘটনাস্থলে থাকা পাঁচটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে ফেলেন।
পালানোর চেষ্টা করলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাটিতে ফেলে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি, লাথি মারেন আসামিরা। এসময় হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে গুলিও করেন তারা। এতে আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীসহ পথচারী অনেকেই গুলিবিদ্ধ হন।