রাজধানীতে মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য গ্রেপ্তার

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:২৪ পিএম

মানব পাচার চক্রের সদস্য কল্পনা বেগম। ছবি: ভোরের কাগজ
কৃষি ভিসায় ইটালি পাঠানোর কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে জিম্মি করে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনায় মানব পাচার চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির হাতিরঝিল থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকারীর নাম কল্পনা বেগম (৩৬)। বুধবার (৩০ অক্টোবর) দিবাগত রাত ২টা ৪০ মিনিটে কামরাঙ্গীরচর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
হাতিরঝিল থানা সূত্রে জানা যায়, মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার বাসিন্দা বাদী মো. নুরুল ইসলাম বেপারী গত ২ অক্টোবর হাতিরঝিল থানায় মানব পাচার আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে গ্রেপ্তার কল্পনা বেগম ও তার সহযোগীরা কৃষি ভিসায় ইটালি পাঠানোর কথা বলে নুরুল ইসলামকে প্রলুব্ধ করে। তাদের প্রলোভনে ইটালি যাওয়ার জন্য সম্মত হয়ে বাদী তাদেরকে পাসপোর্ট প্রদান করে। এর কয়েকদিন পর চক্রের সদস্যরা বাদীকে জানায় যে তার ভিসা হয়েছে। তাদের কথা মতো গত বছরের ২০ জুলাই বাদী তাদেরকে ১০ লাখ টাকা প্রদান করে। টাকা পাওয়ার পর মানব পাচার চক্রের সদস্যরা ভিকটিম নুরুল ইসলামকে প্রথমে দুবাই ও পরে লিবিয়া নিয়ে যায়।
আরো পড়ুন: ২৮ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চিঠি
সেখানে মানবপাচারকারী চক্রের সদস্য জামির ও ইসমাইল ভিকটিমকে ইটালি না পাঠিয়ে জিম্মি করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। তারা ভিকটিমের স্ত্রীকে ফোন করে জানায় যে, বাংলাদেশে ফিরে যেতে চাইলে কিংবা ইটালি যেতে চাইলে দেশে থাকা তাদের সদস্য আব্দুল লতিফের কাছে আরো ১৫ লাখ টাকা দিতে হবে। বাধ্য হয়ে ভিকটিমের স্ত্রী জমি বিক্রি করে ১৫ লাখ টাকা দেশে থাকা পাচারকারী চক্রের সদস্যদের বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টে ও বিকাশের মাধ্যমে প্রদান করে। টাকা পাওয়ার পরও তারা ভিকটিমকে দেশে বা ইটালি পাঠায়নি। পরবর্তীতে চলতি বছরের ১১ জুন লিবিয়া পুলিশের সহায়তায় ছাড়া পেয়ে ভিকটিম দেশে ফিরে আসে।
থানা সূত্রে আরো জানা যায়, তদন্তাধীন মামলায় গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় এজাহারনামীয় আসামী কল্পনা বেগমকে বুধবার রাতে কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।