সিএনএসে জিম্মি সড়ক ও সেতুর বিভিন্ন দপ্তর

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ১০:৩০ এএম

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সদর দপ্তর | ছবি: সংগৃহীত
সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান সিএনএস। পুরো নাম কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম। প্রতিষ্ঠানটি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সেতু কর্তৃপক্ষ, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের টোল আদায়ের দায়িত্ব পালন করেছে। রেলে দীর্ঘদিন টিকিট বিক্রির দায়িত্ব পালন করে প্রতিষ্ঠানটি। এখনও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষে (বিআরটিএ) নানা কাজ করে যাচ্ছে সিএনএস। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় এ প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের দাপটের কারণে বদলি আতঙ্কে থাকতেন কর্মকর্তারা, হয়ে পড়েছিলেন অসহায়। ভেন্ডর হয়েও বিআরটিএতে প্রভাব বিস্তার, কর্মীদের বিরুদ্ধে দালালিতে জড়িয়ে পড়া, চুক্তি অনুযায়ী সময়মতো কাজ না করা এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির নিবন্ধন ও ফিটনেস সনদের কাজে গ্রাহক ভোগান্তি সৃষ্টির অভিযোগ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে।
সাবেক আইনমন্ত্রীর ভাইয়ের প্রতিষ্ঠান এমন বিবেচনায় বিনা দরপত্রে কাজ পেতে সহায়তা করতেন এক শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা। কিছু ক্ষেত্রে দরপত্র এমনভাবে তৈরি করা হতো যেন এ প্রতিষ্ঠানটি কাজ পায়। চুক্তির মেয়াদ শেষে এমনভাবে পুনঃদরপত্র তৈরি করা হয় যেন সিএনএস আবার কাজ পায়। তৎকালীন আইনমন্ত্রীর প্রভাব, আর্থিক অনিয়ম দেখে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও একই পথে হাঁটেন। অনেকে নিজেদের পকেট ভারী করেন।
জানা গেছে, বিআরটিএতে গাড়ির স্বয়ংক্রিয় ফিটনেস পরীক্ষার ভিআইসি (ভেহিক্যাল ইন্সপেক্টর সেন্টার) কাজ করছে সিএনএস। এ ছাড়া আর্কাইভিং, আইএস সেবা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। ১৯৯৮ সালে চালু হয় বঙ্গবন্ধু সেতু। এরপর থেকে অপারেটরের মাধ্যমে টোল আদায় হচ্ছে। নতুন অপারেটর নিয়োগে ২০১৬ সালের ১৬ মার্চ (আগ্রহপত্র) ইওআই আহ্বান করা হয়। এর পর মামলার আশ্রয় নেয় সিএনএস। কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাবের যৌথ মূল্যায়নে দক্ষিণ কোরিয়ার এইচপিসি এবং বাংলাদেশের এসইএল যৌথভাবে (জেভি) সর্বোচ্চ নম্বর পায়। প্রতিষ্ঠানটি আদায়কৃত টোলের সাড়ে ৪ শতাংশ সার্ভিস চার্জ হিসেবে নেওয়ার প্রস্তাব করে। অথচ সিএনএস চেয়েছিল সাড়ে ১২ শতাংশ। কিন্তু কাজ পেতে মামলার পথে হাঁটতে ‘পরিপক্ব’ প্রতিষ্ঠানটি। সব কাজেই তারা এমনটি করে আসে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের ছোট ভাই আরিফুল হকের প্রতিষ্ঠিত এই সিনএনএস আইনমন্ত্রীর পরিচয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রভাব খাটিয়ে গত এক দশকে বিভিন্ন টেন্ডার নিয়েছে। প্রতিটি দরপত্রেই এমন কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে, যার ফলে সিএনএস ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের কাজ পাওয়ার সুযোগ থাকে না। ফলে চড়া দামে তাদের সেবা নিতে হচ্ছে যানবাহনের মালিক ও চালকসহ সেবাগ্রহীতাদের।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিস (বেসিস) জানিয়েছে, বিআরটি-এর এই কাজগুলো করার মতো অনেক যোগ্য প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে আছে। তাদের ১ হাজার ৬০০ সদস্যের প্রায় সবাই এ ধরনের কাজ করার জন্য যোগ্য। তবে অযাচিত শর্তের কারণে অনেকে নিরুৎসাহিত হয়। প্রতিটি দরপত্রেই এমন কিছু শর্তজুড়ে দেওয়া হয়, যার ফলে সিএনএস ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের কাজ পাওয়ার সুযোগ থাকে কম।
সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সিএনএসকে একচেটিয়া কাজ দেওয়ার পেছনে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিআরটি-এর কর্মকর্তাদের একটি অংশ কাজ করে। তারা সিএনএসের অনুকূলে শর্তজুড়ে দেয়। প্রতিবারই কোয়ালিটি ও কস্ট বেজড সার্ভিস (কিউসিবিএস) পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করে। এতে প্রথমেই শর্তের বেড়াজালে ফেলা হয় প্রতিযোগীদের।
গত বছরের ২৫ নভেম্বর একনেকের বৈঠকে কোনো ঠিকাদারকে একসঙ্গে একাধিক প্রকল্পের কাজ না দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু বিআরটিএতে এ নির্দেশনার কোনো প্রতিফলন নেই।
সূত্রমতে, সওজের মেঘনা-গোমতী সেতুতে টোল আদায়ের কাজ করে সিএনএস। প্রায় দুই বছর আগে শেষ হয়ে গেলেও অদ্যাবধি সমাপ্তি সনদ প্রদান করা হয়নি। সিএনএসের সঙ্গে ভৈরব সেতুর টোল অপারেশনের চুক্তির মেয়াদ প্রায় বছর আগে শেষ হয়। সওজ দুই বছর মেয়াদে পুনরায় চুক্তি করলেও কমপ্লেশন সার্টিফিকেট দেওয়া হয়নি। প্রায় একই সময়ে একই ধরনের ঘটনা শহীদ ময়েজউদ্দিন সেতু, ঘোড়াশালের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
কর্মকর্তারা জানান, বিআরটিএতে এম ভি ট্যাক্সের কাজ যখন সিএনএস প্রথমবারের মতো পায়, তখন কোনো শর্ত দেওয়া ছিল না। কারণ তখন প্রতিষ্ঠানটির অভিজ্ঞতাগুলো ছিল না।
প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ
দেশের স্বনামধন্য একটি আইসিটি কোম্পানি ও সফটওয়ার শিল্প সংশ্লিষ্ট সংগঠন বেসিসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে সিএনএস লি: অত্যন্ত সুনামের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। আলোচ্য প্রতিবেদনটি প্রকাশের পূর্বে আমাদের নিকট হতে কোন তথ্য উপাত্ত কিংবা প্রতিবেদনটির বিষয়ে আমাদের কোনরকম বক্তব্য গ্রহণ না করেই একতরফা ঢালাওভাবে ভুল তথ্য পরিবেশনের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানটিকে হেয় প্রতিপন্ন করতে উপরোক্ত প্রতিবেদনটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে প্রকাশ করা হয়েছে বলে আমরা মনে করি এবং এ ধরনের অপসাংবাদিকতার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
প্রতিবেদনে ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত অত্র প্রতিষ্ঠানটিকে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান বলে দাবী করা হয়েছে, যা সব মিথ্যা, বিভ্রান্তিকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। উল্লেখ্য, প্রতিষ্ঠার সময় হতে অদ্যাবধি এই প্রতিষ্ঠানটির মালিকানায় রাজনীতি সংশ্লিষ্ট কোন ব্যক্তি কখনোই শেয়ার হোল্ডার কিংবা পরিচালনা পর্ষদে যুক্ত ছিলেন না, যা রেজিস্ট্রার অফ জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ দপ্তর হতে সহজেই নিরীক্ষা করা যায়।
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমস লি: বাংলাদেশের আইসিটি খাতে সফটওয়্যার নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে বিশ্বের সর্বোচ্চ সনদ CMMi Level 5 অর্জনকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান, যা ১৯৯২ সাল থেকে বিগত ৩২ বছর ধরে দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানে অত্যন্ত সুনামের সাথে সেবা প্রদান করে আসছে। সিএনএস লি: বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অফ সফটওয়্যার এন্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং যার সদস্য নম্বর চার।
২০০২ সালে সিএনএস লি: টেকনিকাল পার্টনার হিসাবে ড্যাফোডিল সফটওয়ার লি: এর সাথে যৌথভাবে কম্পিউটারাইজড সিট রিজার্ভেশন এন্ড টিকিটিং সিস্টেম (সিএসআরটিএস) সংক্রান্ত কাজে বাংলাদেশ রেলওয়ের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। পরবর্তীতে উপরোক্ত কাজের অভিজ্ঞতার আলোকে সিএনএস লি: তার সফটওয়ার ল্যাবে নিজস্ব উদ্ভাবিত টিকিটিং সিস্টেমে দুর্নীতি বিরোধী ফিচার সংযুক্ত করে একটি সেন্ট্রালি কম্পিউটারাইজড সিট রিজার্ভেশন এন্ড টিকিটিং সিস্টেম (সিসিএসআরটিএস) প্রণয়ন করে, যা দিয়ে কেন্দ্রীয়ভাবে টিকিটিং কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়। ২০০৭ সালে তত্বাবধায়ক সরকারে সময়ে উন্মুক্ত দরপত্র প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে উপরোক্ত দুর্নীতি বিরোধী সফটওয়ারের ডেমোনেস্ট্রশন প্রদানের মাধ্যমে একক ভাবে সেন্ট্রালি কম্পিউটারাইজড সিট রিজার্ভেশন এন্ড টিকিটিং সিস্টেম বাস্তবায়ন ও পরিচালনা সংক্রান্ত বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে।
সিএনএস লি: বিগত তত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৮ সালে বিআরটিএ’র উন্মুক্ত দরপত্র প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে স্বনামধন্য দেশী ও বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রতিযোগিতা করে মোটরযানের কর ও ফি আদায়ের জন্য অনলাইন ব্যাংকিং সিস্টেম বাস্তবায়ন ও পরিচালনা সংক্রান্ত বিষয়ে বিআরটিএ’র সাথে পরবর্তীতে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে।
দেশের টোল আদায় খাতে যখন ম্যানুয়াল পদ্ধতি বা সেমি অটোমেটিক ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতি ব্যবহারের কারণে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির ফলে সরকার কয়েক হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হতে বঞ্চিত হতো, তখন সরকারী রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিগত ২০১৩ সালে সিএনএস লি: বিশ্বে সর্বপ্রথম যানবাহনের ডাটাবেইজের সাথে রিয়েল টাইম এপিআই সংযুক্ত করে একটি অত্যাধুনিক টোল আদায় সিস্টেম তৈরি করে। টোল আদায়ে দুর্নীতি প্রতিরোধে এই সিস্টেমে নিজস্ব উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শতভাগ নির্ভুল টোল আদায় করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে ২০১৩ সালে সিএনএস লি: বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের উন্মুক্ত দরপত্র প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে ও বিদেশী প্রতিষ্ঠানের সাথে প্রতিযোগিতা করে ৬ষ্ঠ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর টোল প্লাজায় টোল আদায়ের জন্য বিগত ২০১৪ সালে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এটি প্রথমবারের মত ৬ষ্ঠ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর টোল প্লাজায় ব্যবহার করার ফলে প্রথম দিনেই পূর্বের তুলনায় সরকারের প্রায় দ্বিগুণ রাজস্ব বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়। এরই ধারাবাহিকতায় অন্যান্য টোল প্লাজায় এই সিস্টেমটি বাস্তবায়নের ফলে একইভাবে প্রথম দিন হতেই পূর্বের তুলনায় সরকারের টোল রাজস্ব গড়ে ৫০ শতাংশেরও বেশী বৃদ্ধি পায়।
১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠার পর হতে বিভিন্ন সরকারের সময়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা, মেধা ও কারিগরি উৎকর্ষের মাধ্যমেই এই সকল কাজে সিএনএস লি: নিযুক্ত হয়, তাই নির্দিষ্ট কোন সরকারের আনুকূল্যে কোন কাজ পাওয়ার প্রশ্নই উঠে না।
বিআরটিএ’তে সিএনএস লি: এর কর্মপরিধি সফটওয়ার নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ এবং সরকারের এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক সেবার ক্ষেত্রে চুক্তি অনুযায়ী সকল কাজ সময় মতোই সম্পন্ন করা হয়েছে। বিআরটিএ’র সেবা সংক্রান্ত যে কোন সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র বিআরটিএ’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাই প্রদান করেন, যার সাথে সিএনএস লি: এর কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। তাই এ ব্যাপারে প্রতিবেদকের অভিযোগটি সম্পূর্ণ বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন, যা কোন হীন উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলেই আমরা মনে করি।
সরকারী ক্রয় বিধিমালা ২০০৮ অনুযায়ী শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট সংস্থাই কোন কার্যের বিপরীতে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট শর্ত উল্লেখ করে দরপত্র প্রস্তুত ও আহ্বান করে। এছাড়াও সাবেক আইনমন্ত্রীর ভাই কিংবা কোন আত্মীয় কখনোই সিএনএস লি: এর মালিকানায় ছিল না তাই সাবেক আইনমন্ত্রীর ভাইয়ের প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান এমন বিবেচনায় কিংবা সাবেক আইনমন্ত্রীর প্রভাবে বিনা দরপত্রে কাজ পাওয়া সহ শর্তের বেড়াজালে আবদ্ধ করার বিষয়ে প্রতিবেদকের দাবীটি হাস্যকর, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
প্রতিবেদনে উল্লেখিত যমুনা সেতুর টোল আদায়ের কাজে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের দরপত্রে কোরিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে ও দরপত্রের শর্তানুযায়ী নির্ধারিত দিনে তাদের প্রস্তাবিত রিয়েল টাইম অনলাইন টোল কালেকশান সিস্টেমের ডেমোনেস্ট্রেশন প্রদর্শনে ব্যর্থ হয়। এ বিষয়ে সিপিটিইউ’তে সিএনএস লি: এর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিপিটিইউ’র রিভিউ প্যানেল উক্ত কোরিয়ান প্রতিষ্ঠানটিকে অযোগ্য ঘোষণা করার পরেও হাইকোর্ট হতে সিএনএস লি: এর পক্ষে কোন রায় আসে নাই। সুতরাং এক্ষেত্রেও সাবেক আইনমন্ত্রীর প্রভাবের বিষয়ে প্রতিবেদকের দাবীটি বানোয়াট, অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
মেঘনা গোমতি টোল প্লাজায় বাস্তবায়িত বৃহৎ বুদ্ধিবৃত্তিক ও পেশাদার সফটওয়ারের কাজে সমাপ্তি সনদ প্রাপ্তির প্রক্রিয়া জটিল ও সময়সাপেক্ষ হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ইতিমধ্যেই সেই সমাপ্তি সনদ প্রদান করা হয়েছে সুতরাং এক্ষেত্রেও প্রতিবেদকের দাবীটি মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এ ছাড়াও মোটরযান কর ও ফি আদায়ের সিস্টেম সরবরাহ ও পরিচালনার জন্য ২০০৮ সালে তত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে প্রথমবারের মত দেশে রিয়েলটাইম অনলাইন ফি কালেকশান সিস্টেমের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়। সেই দরপত্রেও পিপিআর ২০০৮ অনুযায়ী কিউসিবিএস পদ্ধতিতে সুনির্দিষ্ট অভিজ্ঞতা সহ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সাথে চুক্তি থাকার শর্ত উল্লেখিত ছিল, তাই ২০০৮ সালে বিআরটিএ কর্তৃক আহুত প্রথমবারের দরপত্রে কোনো শর্ত দেওয়া ছিল না উল্লেখ করে প্রতিবেদকের দেয়া তথ্যটিও সঠিক নয়।
সিএনএস লি: দেশের পাশাপাশি বিদেশেও বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানে বিশ্ব ব্যাংকসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার অর্থায়নে চলমান আইসিটি ও সফটওয়ার ডেভেলপমেন্ট সেক্টরে কাজ করছে। বিগত ৩২ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম ও দক্ষ জনবল সৃষ্টি করে এই অবস্থানে আসা এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দৈনিক ভোরের কাগজের মত পত্রিকায় এ ধরনের বানোয়াট, অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন প্রকাশ করায় সিএনএস লি: সহ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলে আমরা মনে করি। বিদেশী ক্রেতারা এই ধরনের অসত্য ও নেতিবাচক প্রচারণায় বিভ্রান্ত হলে দেশের সফটওয়ার রপ্তানি খাতে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন বাধাগ্রস্ত হবে।
এমতাবস্থায় পাঠকদের সঠিক তথ্য জানাতে আপনার দৈনিকের যে স্থানে সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে ঠিক একই স্থানে এই প্রতিবাদলিপিটি সশরীরে/ই-মেইলে/রেজিঃ ডাকযোগে (যাহা আগে ঘটে) প্রাপ্তির ৩ ক্যালেন্ডার দিবসের মধ্যে যে সকল অসত্য, বানোয়াট, ভিত্তিহীন মানহানিকর তথ্য পরিবেশন এবং অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়েছে সে সংক্রান্ত সকল বিষয়গুলো প্রতিবাদলিপিতে অন্তর্ভুক্ত করে তা ছাপানোর জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি, অন্যথায় আমরা যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য হবো।
লেঃ কর্ণেল মোহাম্মদ তারিকুল হক (অবঃ)
সিনিয়র নির্বাহী পরিচালক