- ৪৮ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ১৪৫ ছিনতাইকারী
পুলিশ সদস্য কন্সটেবল মনিরুজ্জামান হত্যাকাণ্ডে ৩ ছিনতাইকারী সরাসরি জড়িত ছিল। তাদেরকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রাব্বি ও লিটন নামের দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও থানা পুলিশ।
এছাড়া কামরুল নামে অপর এক ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) তেজগাঁও বিভাগ। ঈদে একজন সাংবাদিকও ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাতেও জড়িতদের আমরা শনাক্ত করে ফেলেছি।
এ বিষয়ে খুব দ্রুতই আমরা সুসংবাদ দিতে পারব বলে আশা করি। রাজধানীর ফার্মগেটে ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবল মনিরুজ্জামান তালুকদার হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ৩ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তারের বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান-ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন।
সোমবার (৩ জুলাই) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
অতিরিক্ত কমিশনার ড.খ.মহিদ উদ্দিন বলেন, যেকোনো উৎসবকে কেন্দ্র করে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে ডিএমপির। এবারের ঈদ-উল আজহাকে কেন্দ্র করেও রাস্তাঘাট, মার্কেট, শপিংমল ও কুরবানির পশুর হাট কেন্দ্রিক নির্বিঘ্ন নিরাপত্তা ব্যবস্থার আয়োজন করা হয়। তারপরও অ্যাবসোলুট সিকিউরিটি বলতে কোন কিছু নেই।
যদি অ্যাবসোলুট সিকিউরিটি বলতে কিছু থাকতো, তাহলে হয়তো সারা বিশ্বে আলাদা করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রয়োজন হতো না। ঈদের আগে ১ হাজারেরও বেশি ছিনতাইকারীকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে আমরা গ্রেপ্তার করেছি।
এছাড়া গত ৪৮ ঘণ্টায় রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে মোট ১৪৫ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ডিএমপির এ কর্মকর্তা বলেন, এবার ঈদে দুটি বড় ঘটনা সবাইকে নাড়া দিয়েছে। এরমধ্যে একটি ঘটনা হচ্ছে, ঈদের দিন রাতে হাতিরঝিল এলাকায় একজন সাংবাদিক ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে আহত হওয়া। আর অন্য আরেকটি হচ্ছে আমাদের একজন পুলিশ কনস্টেবল ছিনতাইকারীদের হামলায় ফার্মগেট এলাকায় নিহত হয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, এর মধ্যে সাংবাদিককে আহত করার ঘটনায় জড়িত হামলাকারীদের আমরা শনাক্ত করে ফেলেছি। এ বিষয়ে খুব দ্রুতই আমরা সুসংবাদ দিতে পারব বলে আশা করি। কনস্টেবল মনিরুজ্জামানের হত্যাকাণ্ডে জড়িত ৩ ছিনতাইকারীকে গত ৪৮ ঘণ্টায় আমরা গ্রেপ্তার করেছি।
হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটিও আমরা জব্দ করতে সক্ষম হয়েছি। এ ঘটনায় আরো কিছু কাজ আমাদের বাকি রয়েছে। তবে হত্যাকাণ্ডের সরাসরি যারা জড়িত তাদেরকে আমরা গ্রেপ্তার করতে পেরেছি।
মনিরুজ্জামানের হত্যাকাণ্ডের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ডিএমপির এই অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, ঘটনার দিন ভোর রাতে কনস্টেবল মনিরুজ্জামান শেরপুর থেকে বাসে করে ঢাকায় আসে। ছিনতাইয়ের শিকার হওয়ার আগে সে ফার্মগেট ওই ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে ছিল রাস্তা পারাপার হওয়ার জন্য।
এসময় ৩ ছিনতাইকারীদের মধ্যে একজন প্রথমে কনস্টেবল মনিরুজ্জামানের রাস্তা অবরোধ করে তার কাছে মানিব্যাগ চায়। কিন্তু সে মানিব্যাগ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে প্রতিহত করার চেষ্টা করে।

তবে ছিনতাইকারী ৩ জন হওয়ায় তিনি তাদের সঙ্গে পেরে উঠেননি। তখন ছিনতাইকারীরা মনিরুজ্জামানের শরীরে একাধিক জায়গায় আঘাত করে তার মোবাইল ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় তাদের সঙ্গে আরো কেউ জড়িত রয়েছে কিনা সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানান তিনি।
এসময় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার নিহত মনিরুজ্জামানের বিষয়ে বলেন, কনস্টেবল মনিরুজ্জামান প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুদের টাকা নিতেন না। তিনি খুব সৎ ও নিষ্ঠাবান ব্যক্তি ছিলেন। তাকে নিয়ে আমরা গর্ব করি যে বাংলাদেশ পুলিশে এ ধরনের কনস্টেবল আছে। তার বয়স মাত্র ৪০ বছর, এসময় তাকে আমরা হারিয়েছি।