চৌগাছায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ: আহত ৫, পিস্তল-গুলি উদ্ধার

জিয়াউর রহমান রিন্টু , যশোর
প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৫৯ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
যশোরের চৌগাছা উপজেলার বেড়গোবিন্দপুর সরকারি বাওড়ে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে ৫ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে ঘটে এই সংঘর্ষের ঘটনা। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুটি মোটরসাইকেল, এক রাউন্ড গুলি এবং একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করেছে।
গুরুতর আহতদের মধ্যে আছেন- শহিদুল ইসলামের ছেলে উজ্জল আহমেদ (৪০), তাইজুল ইসলামের ছেলে আব্দুস সামাদ (৫৬), এবং যশোর সদর উপজেলার আব্দুলপুর গ্রামের বিএনপি নেতা কালাম হোসেন (৫৭)। বাকি দুজন আহত ব্যক্তি চৌগাছা উপজেলা সরকারি হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছেন। এরমধ্যে, কালাম হোসেনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চৌগাছা উপজেলার বেড়গোবিন্দপুর সরকারি বাওড়টি ১৪৩০ বাংলা সনের ১ বৈশাখ সরকারি ইজারার মাধ্যমে উপজেলা মনমথপুর বেড়গোবিন্দপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির লিমিটেড দ্বারা মাছ চাষ শুরু করা হয়। গত ৫ আগস্টের পর থেকে প্রায় ৫০ দিন ধরে স্থানীয় দুর্বৃত্তরা বাওড়ের মাছ লুট করে। এরপর পৌর যুবদলের আহ্বায়ক সালাহউদ্দীন, চৌগাছা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহিম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদুল ঢালি মাছ বিক্রির মূলধনের ২০ শতাংশ ভাগ দেয়ার শর্তে মাছ চাষ অব্যাহত রাখেন।
সম্প্রতি সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যশোর জেলা বিএনপির নেতা কালাম হোসেনের কাছে বাওড়ের ২০ শতাংশ শেয়ার বিক্রি করা হয়। শুক্রবার, কালাম হোসেনের নেতৃত্বে চৌগাছা উপজেলা বিএনপির এক পক্ষ ২০/২৫ জন সদস্য নিয়ে বাওড়টি থেকে মাছ ধরতে যায়। এসময় সালাহউদ্দীন, আব্দুর রহিম ও জাহিদুল ঢালীর ভাই শাহিনুর ঢালীর লোকজন তাদের বাধা দেয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় চৌগাছা থানা পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দুই পক্ষের লোকজন পালিয়ে যায়। এসময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় এক রাউন্ড গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল ও দুটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা মডেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এদিকে সংঘর্ষের ঘণ্টাখানেক পরে বিএনপি একপক্ষের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা মোহাম্মদপুরের গোবিন্দপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি হামিদ আলীর বাড়িতে হামলা করে। বাড়িতে সমিতির সভাপতি কে না পেয়ে তার স্ত্রী আলিয়া বেগমকে (৬০) মারপিট করে।
এ বিষয়ে চৌগাছা থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, বাওড়ের মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে দুই তিনজনের আহত হওয়ার খবর পেয়েছি, যারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। ঘটনাস্থল থেকে দুটি মোটরসাইকেল ও একরাউন্ড গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় ২১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মারামারির মামলা এবং অজ্ঞতা নামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি অস্ত্র মামলা হয়েছে।