চাঁদমারীতে নাসিম ওসমান মসজিদ নিয়ে ডিসির বিতর্কিত ভূমিকায় এলাকায় ক্ষোভ

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ১১:০৪ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে ফতুল্লার পশ্চিম চাঁনমারী এলাকার পতিত সরকারি জমিতে নামাজ আদায়ের অনুমতি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। তার বিতর্কিত ভুমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। তাদের ভাষ্য, এই এলাকার জেলা প্রশাসকের নিজস্ব ২টি মসজিদসহ মোট ছয়টি মসজিদ রয়েছে। এত মসজিত থাকার পর সরকার যেখানে মসজিদটি ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে, সেখানে এমন নির্দেশের তোয়াক্কা না করে জেলা প্রশাসক সেখানে পুনরায় এলাকার ভিতর মানুষের চলাচলের ব্যাঘাত ঘটে এবং মসজিদ বানানোর অনুপযুক্ত জায়গায়, নামাজ আদায়ের কেন অনুমতি দিলেন তা রহস্যজনক।
এখানেই শেষ নয়, ভুক্তভোগিদের অভিযোগ, এ বিষয়ে তারা জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করতে গেলে তিনি নাসিম ওসমানের পক্ষ নিয়ে ধমক দিয়ে বলেন, এত জেনোসাইড’ জেনোসাইড করেন কেন? ভিন্ন মতাবলম্বী কি থাকবে না নাকি? তার এমন মন্তব্যে পর এলাকার মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়।
এ নিয়ে ইতোমধ্যে জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। এলাকাবাসীর পক্ষে নাহিদ ইসলাম নামক ব্যক্তির করা অভিযোগে বলা হয়, আমাদের এলাকাটি চানমাড়ি টেক্সি স্ট্যান্ডের পার্শ্বে অবস্থিত। এখানে চানমাড়ি টেক্সি স্ট্যান্ডে পূর্বেই মহাসড়কের জায়গা দখল করে জোরপূর্বক নির্মিত "নাসিম ওসমান মসজিদটিকে বর্তমান সরকার ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে। ফলে ফকির গার্মেন্টস সড়কের শুরুতে খতিয়ান ১৪৫, সি,এস, এস,এ-৭২, আর,এস-১৩৬ নং দাগের ৩৩ শতাংশ খাস ভূমিতে আমাদের নারায়ণগঞ্জ জেলার বর্তমান জেলা প্রশাসক জুলাই আগস্ট-জেনোসাইডে সরাসরি অংশগ্রহণকারী নাসিম ওসমানের দলীয় লোকজনের সাথে বৈঠক করেন।
প্রকাশ্যে নিরীহ লোকজনকে এত জেনেসাইড, জেনোসাইড করেন কেন? ভিন্ন মতাবলম্বী কি থাকবে না নাকি? এ ধরনের মন্তব্য করার পর হইতে এলাকার মধ্যে বিশাল বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। এলাকার ৩/৪টি গ্রুপ তৈরি হয়ে মারমুখী অবস্থানে সকাল বিকাল মিছিল স্লোগানসহ বর্তমান জেলা প্রশাসকের বিগত সরকার দলীয় লোকজনের প্রতি অতিরিক্ত আনুগত্য জনমনে অশান্তির সৃষ্টি করেছে।
এখানে উল্লেখ্য যে, এই এলাকার জেলা প্রশাসকের নিজস্ব ২টি মসজিদসহ মোট ছয়টি মসজিদ রয়েছে। চানমাড়ী ট্যাক্সী ষ্ট্যান্ডেই নাসিম ওসমান মসজিদ লাগোয়া একটি মডেল মসজিদ নির্মিত হতে যাচ্ছে। শুধু বিগত সরকারের লোকজনের প্রভাব বিস্তারের জন্য নাম পরিবর্তন পূর্বক নতুন নামে মসজিদ নির্মাণ করে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করাই উদ্দেশ্য। ফকির পার্মেন্টস সড়কটি রাজউক প্লানে ৬ মিটার ১৮ ফুট প্রস্থে থাকলেও বিগত সরকার দলীয় লোকজন অবৈধভাবে জায়গা দখল করে দোকান নির্মাণের কারণে প্রন্থে ১০ ফুট অবশিষ্ট রয়েছে।
জায়গাটি মানুষের বাসা বাড়ির মাঝখানে উঠানের মত, যেখানে অগনিত মহিলা ও শিশু যাতায়াত করে। যা পুরুষদের জন্য মসজিদ হওয়ার উপযুক্ত নয়। বিগত সরকারের দলীয় খাস লোক রহমত উল্লাহ্ বোখারী ও সেলিম ওসমানের একান্ত বন্ধু মনিরের নেতৃত্বে তাদের লোকজনকে টুপি পাঞ্জাবি পরিয়ে এলাকার লোকজন বানিয়ে সংকীর্ন প্লেসে নাসিম ওসমান মসজিদের পুনঃ স্থাপন চেয়ে সকাল বিকাল স্লোগান, মিটিং মিছিল করে। এলাকার মসজিদ নির্মাণে বাধাদান কারী নিরীহ লোকজনকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ নির্যাতন, নিপীড়ন চালাচ্ছে। যার ভিডিও ফুটেজ বিদ্যমান আছে।
একজন জেলা প্রশাসক বরাদ্দ ব্যতীত কিভাবে একজন লীজ গ্রহিতা বিদ্যমান থাকা অবস্থায় আগামী শুক্রবার নিজে উপস্থিত থেকে উক্ত প্লেসে জুম্মার নামাজ আদায় করে ভিত্তি প্রস্থর স্থাপনের মৌখিক নির্দেশ দিতে পারে, যা কখনই আইনসংগত নয়। এই ফকির গার্মেন্টস সড়কে গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন ফ্যাক্টরি চলমান আছে। যেখানে এমনিতেই সংকীর্ণ রাস্তার কারণে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। উপরন্তু রাস্তাটি মসজিদ নির্মাণের কারণে আরও সংকীর্ণ হয়ে গেলে ফ্যাক্টরির উৎপাদনসহ মহিলা শিশুদের চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে যাবে।
এমতাবস্থায় অনুরোধ, আমরা এলাকার নিরীহ লোকজন কোনোভাবেই এই বর্তমান জেলা প্রশাসকসহ বিগত সরকারের দলীয় দুস্কৃতিকারীদের সাথে পেরে উঠছি না। যেখানে এলাকায় আরও ছয়টি মসজিদ রাস্তার মোড়ে মোড়ে বিদ্যমান। তাই এই ধরনের খাস ভূমি বরাদ্দ ব্যতিত এবং ব্যক্তির নামে লীজ থাকাবস্থায় জেলা প্রশাসক নিজে শুক্রবার জুম্মার নামাজে উপস্থিত থেকে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের মৌখিক নির্দেশ দিয়ে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে পরিবেশ ভারসাম্যহীন না করার জন্য পদক্ষেপ নিতে মর্জি হয়।