স্বামীকে ২৯ লাখ টাকাতেও সন্তুষ্ট করতে পারেনি স্ত্রী

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২০, ০৫:০৭ পিএম
১০ বছর বিদেশ থেকে স্বামীকে ২৯ লাখ টাকা দিয়েও খুশি করতে পারেনি স্ত্রী। আরও টাকার জন্য স্ত্রীর উপর নির্যাতন শুরু করে স্বামী। স্বামীর নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে অবশেষে মামলা করেছেন তিনি। ঘটনাটি ঘটেছে হবিগঞ্জর মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের আয়লাবই গ্রামে।
মামলার সুত্রে জানা যায়, উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের আয়লাবই গ্রামের মৃত মস্তু মিয়ার ছেলে মো. মতি মিয়া ধর্মীয় বিধান মতে বিয়ে করেন আয়লাবই গ্রামের মৃত আব্দুল মন্নাফ মিয়ার মেয়ে মোছা. আজিদা বেগম কে। বিয়ের পর ভাল ভাবেই সংসার চলছিল। বিয়ের কিছুদিন পর আজিদা বেগম কে তার স্বামী মতি মিয়া গৃহকর্মীর কাজ দিয়ে দুবাই পাঠিয়ে দেয়। দুবাইয়ে ৫ বছর থেকে আজিদা বেগম দেশে চলে আসেন। দুবাই থাকার
সময় সব টাকা স্বামীর নিকট প্রেরন কর্ দেশে আসার পর তাদের দুটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। ছোট মেয়ের বয়স যখন ৯ মাস তখন তার স্বামী তাকে গৃহকর্মীর কাজ দিয়ে পুনরায় জর্ডান পাঠিয়ে দেয়। সেখানে আজিদা ২ বছর থাকে এবং উপার্জিত টাকা স্বামীর কাছে প্রেরন করে। ২ বছর পর আজিদা দেশে ফিরে আসলে তার স্বামী মতি মিয়া কে গৃহকর্মীর কাজ দিয়ে তাকে আবার কাতার পাঠান। সেখানে আজিদা ৩ বছর যাবত করে উপার্জিত টাকা স্বামীর কাছে প্রেরন করে। ৩ বছর পর আজিদা দেশে ফিরে আসে। দুবাই, জর্ডান, কাতার ৩ দেশ মিলিয়ে প্রায় ১০ বছর আজিদা বেগম বিদেশ গৃহকর্মীর কাজ করে স্বামী কে ২৯ লাখ টাকা দেয়।
কিন্তু তাতে মতি মিয়ার মন ভরে নি। দেশে ফিরে আসার পর আরো টাকা দিবার জন্য মতি মিয়া আজিদার উপর নির্যাতন শুরু করে। এই নিয়ে স্বামীর সঙ্গে আজিদার পারিবারিক বিরোধ দেখা দিলে এলাকার স্থানীয় লোকজন সালিশের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করে দেন।
স্থানীয়দের সিদ্ধান্তমতে স্বামীর বাড়িতে আলাদা গৃহ নির্মান করে ২ মেয়ে কে নিয়ে বসবাস করতে থাকে। তখনো স্বামী মতি মিয়া ২ লাখ টাকা দিতে আজিদা বেগমকে চাপ দিতে থাকে। আজিদা বেগম টাকা দিতে অস্বীকার করলে গত ১০ অক্টোবর সকালে মতি মিয়া ও তার অপর স্ত্রী ছায়েদা বেগম মিলে আজিদা বেগম কে মারপিট করে আহত করে।
এ ঘটনায় আজিদা বেগম গত ১২ অক্টোবর হবিগঞ্জ নারী শিশু নির্যাতন দম ট্রাইব্যুনাল-৩ এ একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে মাধবপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা কে তদন্তক্রমে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন। আজিদা বেগম জানান, ২ মেয়ে কে নিয়ে অনেক কষ্টে দিন যাপন করছেন। মতি মিয়া তাদের কোন খোঁজ-খবর রাখে না। তাদের ভরন পোষন ও দেয় না। এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবু আসাদ ফরিদুল হক জানান, তদন্ত করে বিজ্ঞ আদালত কে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।