এনায়েতপুর থানায় ১৩ পুলিশ হত্যা মামলায় আ.লীগ নেতাসহ আসামি ৬০০০

কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ আগস্ট ২০২৪, ০৫:১১ পিএম

ছবি: সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ১৩ পুলিশকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে । এবার এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগের নেতার নাম উল্লেখ করে ৬ হাজার জনের বিরুদ্ধে এনায়েতপুর থানায় মামলা করা হয়েছে।
রবিবার (২৫ আগস্ট) এনায়েতপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মালেক বাদী হয়ে রাতে মামলাটি করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) আরিফুর রহমান মন্ডল।
মামলায় এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আহমদ মোস্তফা খান বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী, শাহজাদপুর উপজেলার খুকনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মুল্লুক চাঁন, বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ভূইয়ার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫ থেকে ৬ হাজার জনকে আসামি করে মামলা করা হয়।
আরো পড়ুন: সাবেক স্পিকার শিরীন-বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিসহ ১৭ জনের নামে হত্যা মামলা
মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আহমদ মোস্তফা খান বাচ্চুর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অবৈধ দাবি মেনে না নেয়ায় এনায়েতপুর থানা-পুলিশের ওপর তার ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার এক আসামিকে তার দাবি অনুযায়ী ছেড়ে না দেয়ায় এবং ওইসব আসামির বিরুদ্ধে মামলা নেয়ায় তার নেতৃত্বে ৪৫০ থেকে ৫০০ জন অজ্ঞাত দুষ্কৃতিকারীরা ওই থানা ঘেরাও করে। এ ছাড়া তৎকালীন ওসি আব্দুর রাজ্জাককে অপসারণের দাবি করেন। দাবি মেনে না নেয়ায় তিনি এনায়েতপুর থানা-পুলিশের ক্ষতি করার সুযোগ খুঁজতে থাকেন।
এ পরিস্থিতিতে গত ৪ আগস্ট বেলা ১২টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা এনায়েতপুর থানার সামনে সমবেত হন। এ সময় থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে কথা বলে তারা চলে যান। পরে ৫ থেকে ৬ হাজার দুষ্কৃতিকারীর একটি দল সংঘবদ্ধ হয়ে থানায় হামলা চালায়। হাসুয়া, দা, লোহার রড, লাঠি, পেট্রল বোমা ও অস্ত্র নিয়ে এই হামলা করা হয়। এসময় পুলিশ আত্মরক্ষায় টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে তারা পুলিশের কোয়ার্টার এবং ওসির বাসভবনে আগুন লাগিয়ে দেয়। আগুন দেখে পুলিশ সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে পড়লে দুর্বৃত্তরা থানার ওসিসহ ১৩ জন পুলিশকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। এসময় লুট করা হয় থানার অস্ত্র, থানাসহ পুড়িয়ে দেয়া হয় থানার পরিবহন ও পুলিশ সদস্যদের মোটরসাইকেল।
ঘটনার দিন রাতেই সেনাবাহিনীর একটি দল থানা এলাকায় পৌঁছে নিহত পুলিশ সদস্যদের মরদেহ উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ময়নাতদন্ত করে মৃতদেহ স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করে। এই ঘটনায় এনায়েতপুর থানায় ৪ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।