মাদ্রাসা ছাত্রদের টার্গেট করতো আরিফ

মো. রাজীব চৌধুরী রাজু, নীলফামারী থেকে
প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৪, ০৮:৪২ এএম

ছবি: ভোরের কাগজ
মাদ্রাসা ছাত্রদের টার্গেট করে অপহরণের পর সড়ক দুর্ঘটনার কথা বলে তাদের বাবা-মার কাছ থেকে মুক্তিপন আদায় করতো আরিফুল ইসলাম আরিফ (৩৩) নামে এক অপহরণকারী।
সোমবার (২৪ জুন) দুপুরে পুলিশ সুপারের কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার গোলাম সবুর পিপিএম। অভিযোগের প্রেক্ষিতে অপহরণকারী আরিফকে তার শশুরবাড়ী নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার পূর্ব শিমুলবাড়ী মিরগঞ্জ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে নীলফামারী থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃত আরিফ বগুড়া জেলার আদমদীঘী উপজেলার কুন্দগ্রাম এলাকার মৃত মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে।
পুলিশ সুপার জানান, ‘সিরাজ-উদ-দৌলা শুভ বসুনিয়া নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রের অপরহণের খবর পাওয়ার মাধ্যমে আমরা এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পারি। শুভর বাবা-মায়ের কাছে অপহরণকারী মুক্তিপন বাবদ আরিফ ১২ হাজার ৮০০টাকা আদায় করে। বিষয়টি পুলিশকে জানালে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তদন্তকালে রংপুর রেল স্টেশন এলাকাতেও এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়। সেখানে বিভিন্নভাবে অনুসন্ধান চালিয়ে অপহরণকারীর ছবি আমাদের হাতে আসে। যে ছবিটি হুবহু আরিফের সঙ্গে মিলে যায়। গত রবিবার (২৩ জুন) তার শশুর বাড়ী থেকে আরিফকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে দুটি মোবাইল ও দুটি সিম উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে রংপুরের অপহরণের ঘটনা ও শুভ বসুনিয়াকে অপহরণ করার ঘটনায় সরাসরি যুক্ত ছিলো বলে স্বীকার করে। এভাবে আরিফ তার জীবিকা নির্বাহ করতো। তার সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদের ধরতে আমরা আদালতের কাছে আরিফের রিমান্ড চাইবো।’
আরো পড়ুন: মুন্সীগঞ্জে আ.লীগের দুগ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৬
এসপি গোলাম সবুর বলেন,‘আরিফ মুলত বগুড়া, ঢাকা, গাজীপুর, নারায়নগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার মাদ্রাসা ছাত্রদের টার্গেট করতো যাদের নিজস্ব কোনো মোবাইল ফোন নেই। তাদেরকে অপহরণ করে বাবা-মায়ের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে ফোন করে তাদের সন্তান এক্সিডেন্ট করেছে বলে চিকিৎসার জন্য বিভিন্নভাবে বিকাশ ও নগদে মুক্তিপন আদায় করতো। মুক্তিপন আদায় করে অপহরণকৃত মাদ্রাসা ছাত্রদের ছেড়ে দিয়ে মোবাইল নম্বর বন্ধ করে দিত। তাই আমি বাবা-মায়েদের অনুরোধ করবো এরকম কোনো ফোনকল আপনাদের কাছে আসলে আপনারা সন্তানের সঙ্গে কথা বলতে চাইবেন ও তাৎক্ষনিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিবেন।’
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আমিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সৈয়দপুর সার্কেল) কল্লোল কুমার দত্ত, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ তানভীরুল ইসলাম ও নীলফামারী প্রেসক্লাবের সভাপতি মঞ্জুরুল আলম সিয়ামসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।