ছাত্রলীগ নেত্রীকে ধর্ষণ, ইতালি পাড়ি দিলেন নেতা

নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৪, ০৯:০৮ পিএম

স্পেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইসমাঈল হোসেন রায়হান।
বিয়ের প্রলোভনে ছাত্রলীগ নেত্রীকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগে আদালতে মামলার পর দেশ ছেড়ে ইতালি পাড়ি জমিয়েছেন স্পেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইসমাঈল হোসেন রায়হান (৩৫)।
রবিবার দুপুরে মামলা দায়েরের খবর প্রকাশ হয়। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পিতাসহ ইতালি পাড়ি দেন এই নেতা।
রবিবার মাদারীপুর জেলা ছাত্রলীগের প্রভাবশালী এক নেত্রী নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক জেলা জজ আবদুর রহিমের আদালতে এ মামলাটি করেন। আদালত ভিকটিমের অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলাটি রেকর্ড করে পিবিআইকে (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।
ছাত্রলীগ নেতা রায়হান নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সিরাজপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদনগর গ্রামের মোল্লাবাড়ির মো. ইউসুফ আলীর ছেলে। ওই মামলায় তিনি ছাড়াও তার পিতা মো. ইউসুফ আলী (৬৫), ভাই বাবু (৩৮) ও খালাতো বোন বেগমগঞ্জ উপজেলার সেতুভাঙ্গা এলাকার ফরাজি বাড়ির মো. সবুজ ফরাজির স্ত্রী কলিকে (৩৫) আসামি করা হয়েছে।
আরো পড়ুন : বিএনপির শীর্ষ নেতারা টাকা পাচার করে সম্পদের পাহাড় গড়েছে : নানক
আদালতে দায়ের করা অভিযোগ ও ভিকটিম ছাত্রলীগ নেত্রীর অভিযোগে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছাত্রলীগ নেত্রী ও ছাত্রলীগ নেতা রায়হানের পরিচয় হয়। এরপর তাদের সম্পর্ক প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। এরই মধ্যে বিয়ের প্রলোভন এবং বিয়ের পর ভিকটিমকে লন্ডন নিয়ে যাওয়ার প্রতারণামূলক কথা বলে তাকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে একাধিক স্থানে নিয়ে কয়েকবার ধর্ষণ এবং ধর্ষণের ভিডিওচিত্র ধারণ করে রাখেন রায়হান।
ওই ভিডিওচিত্র (ধারণকৃত) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে ও এসব আপত্তিকর দৃশ্য ডিলিট করে দেয়ার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে বারবার ধর্ষণ করে। এছাড়া ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবির বিপরীতে ভিকটিম ১০ লাখ টাকা পরিশোধ করার পর আরো ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন রায়হান। দাবিকৃত ওই টাকা রায়হানকে না দিলে ভিকটিম ছাত্রলীগ নেত্রীর সব আপত্তিকর ভিডিও এবং ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে রবিবার লন্ডন চলে যাবে বলে ভিকটিমকে হুমকি দেয়।
গত বৃহস্পতিবার কোনো উপায় না পেয়ে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলা করতে যান ভিকটিম ছাত্রলীগ নেত্রী। কিন্তু পুলিশ মামলা গ্রহণ না করে তাকে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করতে বলে। পরে রবিবার দুপুরে ভিকটিম ছাত্রলীগ নেত্রী নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ আদালতে মামলাটি করেন।
তবে রায়হানের ফেসবুক মেসেঞ্জারে কল দিলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করে বলেন, এটা আমার বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার (ছাত্রলীগ নেত্রী) সঙ্গে পরিচয় হয় এবং তার রেন্ট-এ কারের ব্যবসা থাকায় সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন স্থানে চলাচল করতেন তিনি। ওই পরিচয়ের সুবাদে ভিকটিম তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এতে তিনি রাজি না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে মিথ্যা-বানোয়াট তথ্য উপস্থাপন করে মামলা করেন।
দেশ ত্যাগের বিষয়ে রায়হান বলেন, আমি থাকিই দেশের বাহিরে। আগে থেকেই আমার ফিরত টিকিট করা ছিল। তাই নির্দিষ্ট তারিখেই আমি ও আমার বাবা ইতালিতে এসেছি। এতে পলায়নের কোনো কিছু তো দেখছি না।