অন্তরঙ্গ অবস্থায় ধরা প্রধান শিক্ষক, ভিডিও ভাইরাল

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৪, ০৯:৪৫ এএম

গোলাম রব্বানী বকুল
গাইবান্ধায় প্রেমিকার সঙ্গে অনৈতিক কাজ করতে গিয়ে গণধোলাইয়ের শিকার হয়েছেন গোলাম রব্বানী বকুল (৫০) নামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক প্রধান শিক্ষক। গোলাম রব্বানী বকুল সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের অবস্থিত তালুক ফলগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
এ ঘটনার ২৮ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। রবিবার (১২ মে) রাতে উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের হুড়াভায়া খাঁ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আজ সকালে সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মিলন কুমার চ্যাটার্জি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গণধোলাইয়ের শিকার গোলাম রব্বানী বকুল ওই ইউনিয়নের আরাজি দহবন্দ গ্রামের নিয়ামতুল্লাহ সরকারের ছেলে ও দহবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম কবির মুকুলের বড় ভাই।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের হুড়াভায়া খাঁ গ্রামের মোস্তাফিজার রহমানের স্ত্রী আলেমা বেগমের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক গোলাম রব্বানী বকুলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর থেকে প্রায় রাতে তিনি ওই নারীর বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন। এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার গভীর রাতেও ওই নারীর সঙ্গে তার বাড়িতে দেখা করতে যান। তাদেরকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখতে পেয়ে ওই নারীর ছেলে গোলাম রব্বানীকে আটক করে স্থানীয়দের খবর দেন। স্থানীয়রা এসে তাকে গণধোলাই দিয়ে বাড়ির পাশে একটি সুপারি গাছে রশি দিয়ে বেঁধে রাখেন। পরে অভিযুক্ত শিক্ষক গোলাম রব্বানীর ছোট ভাই সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কবির মুকুল ও সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল করিম ফুলবাবুসহ তার কয়েকজন আত্মীয় এসে তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফলগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবক অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল পায়তারা করছেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক গোলাম রব্বানী বকুল ও তার ছোট ভাই সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কবির মুকুলের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা কেউ ফোন রিসিভ করেননি।
তবে সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল করিম ফুলবাবু বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি স্থানীয়রা গোলাম রব্বানী বকুলকে সুপারি গাছে বেঁধে রাখা হয়েছে। পরে তার ছোট ভাই গোলাম কবির মুকুল ও ভাতিজারা এসে নিয়ে যায়। তিনি এর আগেও এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে ছিলেন বলে ইউপি সদস্য জানান।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার (প্রাথমিক) মো. আশিকুর রহমান বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তি আমার ক্লাস্টারের আওতাভুক্ত ফলগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তবে আমাদেরকে বিষয়টি এখনো কেউ জানায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দহবন্দ ইউপি চেয়ারম্যান মো. রেজাউল আলম সরকার রেজা বলেন, এক নারীর সঙ্গে অনৈতিক কাজ করার সময় গোলাম রব্বানী বকুলকে স্থানীয়রা গণধোলাই দিয়েছেন বিষয়টি শুনেছি।
সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি মো. মাহবুব আলম বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনো কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।