সংবাদ সম্মেলনে ড. তুহিন
নীলফামারীতে নদী রক্ষার পরিবর্তে ধ্বংস করছে, রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান

মো. রাজীব চৌধুরী রাজু, নীলফামারী থেকে
প্রকাশ: ০২ মে ২০২৪, ০৭:৫০ পিএম

ছবি: কুমলাই নদী রক্ষার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন পিপলের পরিচালক ড. তুহিন
‘নদী রক্ষার পরিবর্তে নদী ধ্বংস করতে কাজ করছে নদী রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠান’ এমন মন্তব্য করেন বেসরকারী সংস্থা রিভাইন পিপলের পরিচালক, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. তুহিন।
বৃহস্পতিবার (২ মে) নীলফামারীর কুমলাই নদী থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, নদীর জমি নদীর নামে অন্তর্ভুক্ত করা, নদীর প্রবাহ সচলসহ দশ দফা দাবী আদায়ের লক্ষ্যে বেসরকারী সংস্থা রিভাইন পিপল কর্তৃক নীলফামারী প্রেসক্লাবের কনফারেন্স রুমে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, ‘রংপুর বিভাগের যে নদীগুলো আছে তার মধ্যে সবচেয়ে সংকটে থাকা নদীগুলোর একটি কুমলাই নদী। এ নদীটির ওপর ভয়াবহ নির্যাতন করা হয়েছে। কেবল তাই নয়, নদীটিকে খুন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিজ্ঞ প্রকৌশলীগণ কুমলাই নদীর উৎপত্তিস্থল এবং মিলনস্থল তিস্তা রক্ষা বাধের নামে নির্মমভাবে বন্ধ করেছে। উৎসমুখ বন্ধ হলেও বর্ষায় প্রচুর পানি আসে। শুষ্ক মৌসুমেও ঝিরি ঝিরি পানি প্রবাহিত হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড নদীটি খুন করার জন্য প্রথম অস্ত্র চালালেও নদীটি মিলনস্থল ছোটখাতা থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার উজানে গয়াবাড়ী নামক গ্রামে নতুন একটি প্রবাহ তৈরী করে নেয়। এই প্রবাহটি প্রায় ২৫ কিলোমিটার দুরে ধুম নদীতে মিলিত হয়েছে।’
আরো পড়ুন: সুন্দরগঞ্জে তীব্র গরমে বাড়ছে শিশু রোগীর চাপ, সংকট ওষুধের
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, জেলার ডিমলা উপজেলার পুর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড়সিংহেশ্বর নামক স্থানে উৎপত্তি হয় কুমলাই নদীর। তিস্তা নদীর আন্তশাখা এই নদীর দৈর্ঘ্য ২০ কিলোমিটার। খালিশা চাপানি ও টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে এই নদী। বর্তমানের নদীখেকোদের কারণে নদীটি মরণাপন্ন। বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে নদীটি ভরাট করে। পুকুর ও আবাদী জমিও বানিয়েছেন অনেকে। ২০১৯ সালে দেশের উচ্চ আদালত নদীকে জীবন্ত সত্তা ঘোষণা করে রায় দিয়েছে। এতে নদীকে হত্যা করা ফৌজদারী অপরাধ হিসেবেও গণ্য করা হয়। ২৭০ জন অবৈধ দখলদারের স্থাপনা উচ্ছেদ, সীমানা চিহিৃত করণ, নদীটির পুরোনো প্রবাহপথ সচল করা, নদীর উপর থেকে স্কুল কলেজ সুবিধাজনক স্থানে স্থানান্তর এবং নদীর অবৈধ দখল, খাজনা খারিজ, ক্রয় বিক্রয়, রেকর্ডভুক্ত করার কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণসহ দশ দফা দাবী বাস্তবায়নের আহবান জানানো হয় সংশ্লিষ্ঠদের প্রতি।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন রিভারাইন পিপলের জেলা সমন্বয়কারী আব্দুল ওয়াদুদ। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিতি ছিলেন- নীলফামারী জেলা জজ আদালতের আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম সাগর, নীলফামারী প্রেসক্লাবের সভাপতি এবিএম মঞ্জুরুল আলম সিয়াম, সহ-সভাপতি, আতিয়ার রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান সবুজ, সাধারণ সম্পাদক নুর আলম, প্রথম আলোর নীলফামারী প্রতিনিধি মীর মাহমুদুল হাসান আস্তাক, কালের কণ্ঠের নীলফামারী প্রতিনিধি ভুবন রায় নিখিল, আরটিভির জেলা প্রতিনিধি হাসান রাব্বী প্রধান, নীলফামারী প্রেসক্লাবের দপ্তর সম্পাদক এম.আর. রাজুসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরা।