সুন্দরগঞ্জে তীব্র গরমে বাড়ছে শিশু রোগীর চাপ, সংকট ওষুধের

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ মে ২০২৪, ০৬:৩৪ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে তীব্র গরমের কারণে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাপ বাড়ছে শিশু রোগীর। ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিনেই চার থেকে পাঁচজন শিশু রোগী ভর্তি হচ্ছে। ফলে চিকিৎসক ও নার্সরা চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন।
এছাড়া ভর্তি থাকা রোগীর পাশাপাশি বহির বিভাগে গরমজনিত কারণে নতুন নতুন রোগীর চাপ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন তিন থেকে চারজন ডাক্তার বহির বিভাগে তিন থেকে চারশো রোগীকে সেবা প্রদান করছেন। তার পরেও চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীর স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রচণ্ড গরমে স্বাভাবিক জনজীবনে নেমে এসেছে চরম ভোগান্তি।
এদিকে গত ১৪/১৫ দিন যাবত তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪২ সেলসিয়াসে ডিগ্রি ওঠানামা করছে। ফলে বিভিন্ন বয়সী রোগীর পাশাপাশি শিশুরা জ্বর, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চিকিৎসা নিতে ভিড় করছে। এদের মধ্যে কেউ ভর্তি হচ্ছে, কেউ আবার চিকিৎসা নিয়ে বাসায় চলে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে একসঙ্গে এতো শিশু রোগীকে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্মরত ডাক্তার ও নার্সদের।
বিষয়টি নিয়ে এক শিশু রোগীর বাবা আল-আমিন বলেন, প্রচণ্ড গরমে গতকাল (সোমবার ১ মে) আমার মেয়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে আমি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। এখানে এসে দেখি শিশু রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। ডাক্তার ও নার্সরা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে কিন্তু সব ওষুধ হাসপাতালের বাইরে থেকে আনতে হচ্ছে। নার্সদের কাছে ওষুধ চাইলে ওষুধ নেই ও সংকট বলে ওষুধের টোকেন দিয়ে কিনে আনতে বলছে। বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে কিনে আনতেছি। তবে এতো বড় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিদ্যুৎ চলে গেলে জেনারেটর বা এর বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় গরমে রোগী ও স্বজনদের হাঁসফাঁস অবস্থা। রাতে বিদ্যুৎ না থাকাতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভূতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
এক নবজাতক শিশুকে টিকা দিতে আসা মা শারমিন আক্তার বলেন, শিশুর টিকা দিতে আসতেছি বেশ কয়েকদিন ধরে। এসে শুধু ঘুরেই যাচ্ছি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। কারণ টিকা নাকি শেষ হয়ে গেছে। কখন আসবে তাও জানেন না হাসপাতালে কর্মরতরা।
বিষয়টি নিয়ে টিকাপ্রদানকারি নার্স জানান, প্রায় ১ মাস যাবত ডিপিটি, পিসিভি ও বিওপিভি টিকার সংকট দেখা দিয়েছে। এমতাবস্থায় টিকা না থাকলে আমাদের কিছু করার নাই।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. তারিকুল ইসলাম জানান, সারা দেশের মতো সুন্দরগঞ্জেও দাবদাহ বেশি হচ্ছে। ফলে রোগীর সংখ্যা আগের চেয়ে একটু বেশি। তবে এখনো হিট স্ট্রোকে কেউ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়নি। তবে গরমের কারণে শিশু ও বৃদ্ধরাই বেশি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রেজয়ানুর রহমান জানান, প্রচণ্ড গরমের কারণে শিশু ও বয়স্করা বেশি অসুস্থ হচ্ছেন, ফলে রোগীর চাপ একটু বেশি। ওষুধের বিষয় জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, বছর শেষে কিছু ওষুধ ও শিশুদের টিকার সংকট দেখা দিয়েছে। আমরা বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি। আশাকরি দ্রুত ওধুষ ও টিকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসবে।
এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়্যিদ মুহাম্মদ আমরুল্লাহ সঙ্গে মোবাইলে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।