সবজি চাষে ভ্যান চালক স্বাবলম্বী

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৪:২৬ পিএম


পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সবজি চাষ করে একজন ভ্যান চালক স্বাবলম্বী হয়েছেন। উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের বড়বালিয়াতলী গ্রামের আলী আহম্মেদ এর পুত্র আ. রহমান হাওলাদার ভ্যান চালার পাশাপাশি সবজি চাষ করে এখন পুরোপুরি স্বাবল জীবন কাটাতে সক্ষম হয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালিয়াতলী ইউনিয়নের বড়বালিয়াতলী গ্রামে আ. রহমান হাওলাদার মাত্র ১০ কড়ার এক খণ্ড জমির উপর জরাজির্ণ একটি কুঠিরে ৩ পুত্র ও স্ত্রীসহ মোট ৫ সদস্যের সংসারে বসবাস করেন। কিছুদিন আগেও ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাতে রীতিমত তাকে হিমশিম খেতে হত। বিভিন্ন ধার-দেনা করে ছেলেদের লেখাপড়ার খরচ যোগাতে হতো।
প্রায় ৭ বছর আগে একরাতে স্বামী-স্ত্রী যুক্তি করে ভ্যান চালনার পাশাপাশি বাড়ির আঙ্গিনায় কিছু সিম ও লাউ চাষ শুরু করেন। প্রথম বছর আ. রহমান হাওলাদার ৫০ টাকার বীজ স্থানীয় বাবলাতলা বাজার থেকে ক্রয় করে বাড়ীর আঙ্গিনায় রোপণ করেন। ওই বছরই সিম ও লাউ ৮ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। তারপর আ. রহমান ভ্যান চালনা বাদ দিয়ে বাড়ীর খালী জায়গার ৫ কড়ায় সিম ও ৩ কড়ায় পুকুর খনন করে তার চার পাশে লাউয়ের চাষ করে প্রতি বছর ৫০/৬০ হাজার টাকা আয় করে সংসারে স্বাবলম্বি হতে সক্ষম হন। বর্তমানে তার বড় পুত্র রাসেদুল ইসলাম ধুলাস্যার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেনীতে ও মেঝ পুত্র ইসাদুল ইসলাম বালিয়াতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেনীতে অধ্যায়নরত রয়েছে। তার সংসারে বর্তমানে কোন ধরণের ধারদেনার বোঝা নেই।
আ. রহমান হাওলাদার আরো জানান, তার খামারে শুরু থেকেই কৃষি অফিসের কোন কর্মকর্তার পর্দাপন পড়েনি। তবে তার এ খামারে কোন রুপ পোকার আক্রমন দেখা দিলে তিনি এমাথিরিন ও তাপঘর নামক ঔষধ ছিটিয়ে পোকার আক্রমণ বিনষ্ট করে থাকেন। তিনি কারো সাহায্য না নিয়েই নিজের বুদ্ধিমত্তা দিয়ে এ পর্যন্ত এসেছেন।
তবে আ. রহমানের দাবী সরকারী সহায়তা পেলে তার খামারের আরোও উন্নয়ন করা সম্ভব হতো। এ খামারের আয়ের টাকা দিয়ে ছেলেদের পড়াশুনার খরচ ও সংসার পরিচালনার পরেও তিনি এ বছর ৪০ হাজার টাকায় ২ টি আবাল গরু খরিদ করেছেন। গরু ২টি আগামী বছর কোরবানীর মৌসুমে বাজারে বিক্রি করে অধিক লাভবান হওয়ার আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল মন্নান জানান, গোটা উপজেলার যারা সবজি চাষ করে তাদের অধিকাংশ কৃষকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। যদি তিনি না পেয়ে থাকে তা হলে তাকে খুব শিগ্রই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।