নদীভাঙনে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে সহস্রাধিক পরিবার

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৩, ০৪:১২ পিএম

ছবি: মেহেদী হাসান মারুফ (শ্যামনগর) সাতক্ষীরা

ছবি: মেহেদী হাসান মারুফ (শ্যামনগর) সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবন উপকূলীয় দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরায় ভোর রাতে খোলপেটুয়া নদীর ভয়াবহ নদী ভাঙনে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে গাবুরার সহস্রাধিক পরিবার। মুহূর্তের মধ্যে ২০০ মিটার নদীচর ভেঙে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দৃষ্টিনন্দনের দক্ষিণ অংশের রাস্তায় লেগেছে গভীর ভাঙন। এছাড়া ঝুঁকির মুখে পড়েছে আইলা পরবর্তী পানীয় জলের সংকট নিরসনে সরকারি অর্থে সৃষ্ট দৃষ্টিনন্দন খাবার পানির পুকুরও। আতঙ্কিত ও দিশেহারা এলাকাবাসী চাইছেন অতিদ্রুত সরকারি সাহায্য।
গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান জি এম মাসুদুল আলম জানান, আমি ইতিমধ্যে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি, ২০০ মিটারের বেশি এলাকা জুড়ে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ইতিমধ্য ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন কাজ শুরু করেছেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম আতাউল হক দোলন জানান, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আমাকে জানিয়েছেন আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের শ্যামনগর কার্যালয়ে কর্মকর্তাকে জানিয়েছি তিনি ইতোমধ্যেই ওই এলাকায় পরিদর্শন করেছেন দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো আক্তার হোসেন জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ইতোমধ্যে ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে কাজ শুরু করেছেন। ভাঙন রোধে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল প্রকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
[caption id="attachment_417797" align="alignnone" width="1443"]
স্থানীয় সমাজকর্মী মনির হোসেন জানান, ২০০৯ সালে আইলায় সমগ্র গাবুরাসহ বিভিন্ন অঞ্চল প্লাবিত হলে সরকারি দৃষ্টিনন্দন প্রকল্পটি অক্ষত ছিলো। কিন্তু রবিবার (২৬ মার্চ) ভোর রাত থেকে ভয়াবহ নদী ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। নদী ভাঙনে প্রকল্পটি মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। এতে করে ২০০৩ সালে সরকারি অর্থে নির্মিত প্রকল্পটি বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। বিগত ২০১৯ সাল থেকে একাধিকবার নদী ভাঙন হলেও সরকারিভাবে তেমন কোন বাঁধ নির্মাণ সহায়তা দেয়া হয়নি। ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জি এম মাসুদুল আলম জরুরি সহায়তার জন্য বিভিন্ন মহলে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। অনেকে অভিযোগ করেন পানি উন্নয়নের বোর্ড বাহিরে নদীচরের স্থাপনা হওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ড দায়িত্ব নিতে চান না এড়িয়ে যান বিভিন্নভাবে। চেয়ারম্যান মহোদয়, স্থানীয় গ্রামবাসী ও মসজিদ মাদ্রাসার অর্থে গ্রামবাসীর আগে বাঁধ নির্মাণ করলেও এবার বড় ধরণের সহায়তা দরকার। সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন ১২ নং গাবুরার ৯ নং সোরা গ্রামের খোলপেটুয়া নদী অববাহিকায় অবস্থিত সরকারি দৃষ্টিনন্দন প্রকল্প। বর্তমানে প্রকল্পের সীমানা রাস্তার ভিতরে তিনধারে খাল, ফসলী জমি, শতাধিক নারকেল গাছসহ নানা জাতের বৃক্ষ, গাবুরার বৃহত্তম খাবার পানির পুকুর, সাইক্লোন শেল্টার কাম প্রাইমারী স্কুল, জামে মসজিদ, হাফিজিয়া মাদ্রাসা, মহিলা হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও সরকারি কবরস্থান রয়েছে।
২০০৩ সালে দৃষ্টিনন্দন ইকোপার্কের আদলে সরকারিভাবে নদীরচরে তৈরি হয় এই স্থাপনা। গ্রামের মানুষের সর্ববৃহৎ সমস্যা খাবার পানির সমস্যা সমাধানকল্পে জনদাবির প্রেক্ষিতে দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা তৈরি হয়। ২০০৯ সালে গাবুরা প্লাবিত হলেও দৃষ্টিনন্দন অক্ষত থাকে। হাজার হাজার বিপন্ন পরিবার এখানে খাবার পানির পুকুরের পানি পান করেছে।