তুমব্রু সীমান্তে আবারও গোলাগুলি, আতঙ্কে স্থানীয়রা

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০৭:২৫ পিএম

ছবি: ভোরের কাগজ
বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের আবারও গোলাগুলি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) ভোর ৫টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত থেমে থেমে দুই পক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময় ঘটেছে। তবে এতে কেউ হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। অন্যান্য দিনের তুললায় উখিয়ার বালুখালী টিভি টাওয়ার, উখিয়ার ঘাট কাস্টমস সংলগ্ন মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতা বেশি ছিল। এ সময় বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাশি করতে দেখা গেছে। সীমান্তে বসবাসকারী লোকজনের মাঝে উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোড়ে মোড়ে অবস্থান করছে।
জানা যায়, মিয়ানমারের আরকানের স্বাধীনতাকামী সংগঠন রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন ও বিচ্ছিন্নতাবাদী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি নিজেদের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রায়ই সময় সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। বুধবার (১৮ জানুয়ারি) ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত গোলাগুলি চলে। উভয় পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন। আরো দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জিরো পয়েন্টে থাকা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অধিকাংশ ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ওখানে বসবাসকারী রোহিঙ্গারা পার্শ্ববর্তী গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন। এখনো কেউ ফিরে যাননি। তারা খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে। বিকালে সন্ত্রাসীদের দেওয়া আগুনে পুড়ে যায় রোহিঙ্গাদের ঝুপড়ি ঘর।
আন্তর্জাতিক রেড ক্রিসেন্ট কমিটির (আইসিআরসি) অফিস সূত্রে জানা যায়, তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখার ক্যাম্পটিতে ৫৩০ ঘর ছিল। সেখানে ৪ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করতেন। তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা দিল হোসেন বলেন, হঠাৎ একদল মুখোশধারী এসে আগুন লাগিয়ে দেয়। এরপর ছেলে মেযে নিয়ে পালিয়ে আসি।
ঘুমধুম ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, শূন্যরেখার পরিস্থিতি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা চরম আতঙ্কে রয়েছে।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, হতাহতের কোনো খবর পাইনি।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমেন শর্মা বলেন, অধিকাংশ রোহিঙ্গার ঝুপড়ি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে। এর মধ্যে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে ৩৩টি ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। অনেকে বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তের শূন্যরেখায় আশ্রয় নিয়ে বসবাস শুরু করেন। তাদের সেখানে সহায়তা করে আসছিল আইসিআরসি।