×

সারাদেশ

শাল্লায় জন্মদিন পালিত হয়নি স্বামী ভাবঘনানন্দের!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২২, ০৯:৩৫ পিএম

শাল্লায় জন্মদিন পালিত হয়নি স্বামী ভাবঘনানন্দের!

স্বামী ভাবঘনানন্দ মহারাজ

   

একেক করে ৯৮টি জন্মদিবস চলে গেছে স্বামী ভাবঘনানন্দ মহারাজের। অথচ তিনি তৎকালীন সুনামগঞ্জ মহকুমার শাল্লা থানার প্রথম উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তি ছিলেন। নিভৃতচারী এই সর্বত্যাগী মহাপুরুষের একবারও জন্মদিন পালিত হয়নি শাল্লা সদর কিংবা জন্মস্থান আঙ্গারোয়া গ্রামে।

কেনো উপেন্দ্র কুমার দাশ (স্বামী) ভাবঘনানন্দের জন্মদিন পালিত হয়নি এমন প্রশ্নে উপজেলা পূজা উদযাপনের সভাপতি অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাশ বলেন, দাঁড়াইন নদীরপাড়ে পূণ্যভূমি জন্মস্থানটি অন্যের দখলে চলে গেছে। তাঁর জন্মস্থানে জন্মদিন পালন করতে না পেরে আমরা লজ্জিত। আমরা চেষ্টা করব স্বামী ভাবঘনানন্দ মহারাজের জন্মস্থানটি উদ্ধার করার। জায়গাটি উদ্ধার করেই তাঁর জন্মতিথি উদযাপন করব। এমন একজন পুণ্যাত্মার জন্মস্থান বিক্রির ঘোর বিরোধিতা করেন তিনি।

খোঁজ নিয়ে যায় ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলের শেষলগ্নে সুনামগঞ্জের শাল্লায় আঙ্গারোয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বেলুড়মঠের ব্রহ্মচর্য ট্রেনিং সেন্টারের প্রশিক্ষক স্বামী ভাবঘনানন্দ। তাঁর পূর্বাশ্রমের নাম উপেন্দ্র কুমার দাশ। তিনি আঙ্গারোয়া গ্রামের বিপিন চন্দ্র দাশের জ্যেষ্ঠপুত্র। মায়ের নাম পুষ্পবালা দাশ। গ্রামটি বর্তমানে উপজেলার ৩নং বাহাড়া ইউপির অন্তর্গত। পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়।

১৯২৪ সালের ২০ অক্টোবরে তৎকালীন সুনামগঞ্জ মহকুমার শাল্লা থানার অন্তর্গত আঙ্গারোয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এই ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার শুরুটা হয় বাহাড়া গ্রামের বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষায়। বাহাড়া গ্রামের ওই পাঠশালায় তাঁর শিক্ষক ছিলেন কৈলাস চন্দ্র দাশ। তখন বাহাড়া গ্রামে একটি বাজার ছিলো। অধুনালুপ্ত বাহাড়া বাজারটি এখন বাজারহাটি নামে পরিচিত। পরে সুনামগঞ্জ জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৪৪সালে মেট্রিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। ১৯৫৪ সালে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সংস্কৃত ভাষায় এমএ পাস করেন উপেন্দ্র কুমার দাশ। পরে তিনি স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বেলুড়মঠে চলে যান চিরদিনের জন্যে। দাঁড়াইন নদীরপাড়ে জন্ম নেওয়া উপেন্দ্র কুমার দাশ আর ফেরেননি নিজ জন্মভূমি শাল্লায়।

জানা যায়, তিনি সুনামগঞ্জ মহকুমার পলাশের জমিদার অমরনাথ রায় চৌধুরীর ছোট ভাই মনমতনাথ রায় চৌধুরীর সুনামগঞ্জের বাসায় থেকে পড়ালেখা করেছেন। মনমতনাথ রায় চৌধুরী ওরফে চারু বাবু তার কন্যাকে উপেন্দ্র কুমার দাশের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। তাঁরা দু'জনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন। কিন্তু প্রপঞ্চময় জগতে আবদ্ধ হননি উপেন্দ্র কুমার দাশ। একই পথানুস্মরণ করেন মনমতনাথ রায় চৌধুরীর কন্যাও। তিনিও চির কুমারী থেকে যান।

এবিষয়ে বেলুড়মঠের সাধারণ সম্পাদক সুবিরানন্দ এ প্রতিবেদককে জানান, স্বামী ভাবঘনানন্দ মহারাজ ১৯৫৬ সালে কোলকাতায় অবস্থিত রামকৃষ্ণ মিশন ইন্সটিটিউট অব কালচারে নবাগত ব্রহ্মচারীরূপে যোগদান করেন। বেলুড়মঠের ষষ্ঠ অধ্যক্ষ স্বামী বিরজানন্দ মহারাজের কাছে দীক্ষা লাভ করার পর ১৯৬৮ সালে দশম অধ্যক্ষ স্বামী বীরেশ্বরানন্দ মহারাজ কর্তৃক সন্ন্যাস ধর্মে দীক্ষিত হন। পরবর্তীতে স্বামী ভাবঘনানন্দ মহারাজ টানা ৩০বছর বেলুড়মঠে অবস্থিত ব্রহ্মচারী প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের আচার্যরূপে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। ২০০২ সালের ২মে কোলকাতা রামকৃষ্ণ মিশন সেবাপ্রতিষ্ঠান হাসপাতালে দেহত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮বছর। স্বামী ভাবঘনানন্দ মহারাজ বেলুড়মঠের অন্যতম একজন শাস্ত্রজ্ঞ সন্ন্যাসী ছিলেন। তাঁর তপস্যাপূত জীবন ছিল প্রেরণাদায়ক। স্বামী ভাবঘনানন্দ মহারাজ তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান বর্তমান বাংলাদেশ সিলেটের আঙ্গারোয়া গ্রামে ২০ অক্টোবর ১৯২৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন বলে জানান তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App