ক্যাবল শ্রমিকদের মিছিলে পুলিশের বাধা

কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ জুন ২০২০, ০৫:০৮ পিএম

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যাওয়ার সময় বাধা প্রদান করে পুলিশ। ছবি: ভোরের কাগজ।

প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করছে শ্রমিকরা। ছবি: ভোরের কাগজ।
নারায়ণগঞ্জের প্যারাডাইস ক্যাবল কারখানার শ্রমিকরা ১৩ মাসের বকেয়া মজুরির দাবিতে রবিবার (২১ জুন) সকাল থেকে শ্রম ভবনের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। লাগাতার অবস্থান থেকে সোমবার (২২ জুন) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে শ্রমিকদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ বাধা প্রদান করে। পুলিশি বাধারমুখে শ্রমিকরা জাতীয় প্রেসক্লাবের অদূরে কদমফুল ফোয়ারার কাছে সড়কে সমাবেশ করে। পরে চার সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি প্রদান করেছে। বিজয়নগরে অবস্থিত শ্রম ভবনে শ্রমিকদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি চলছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে মিছিলের পূর্বে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন প্যারাডাইস ক্যাবল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি শ্রমিকনেতা দেলোয়ার হোসেন। সমাবেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন- গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র’র কার্যকরি সভাপতি কাজী রুহুল আমীন, সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, শ্রমিকনেতা দুলাল সাহা, জাহাঙ্গীর আলম গোলক প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্যারাডাইজ ক্যাবল লি. কারখানাটি গত ৩০ বছরের বেশী সময় ধরে বৈদ্যুতিক তার উৎপাদন করে আসছে। দেশীয় বাজারের পাশাপাশি রপ্তানী করার ক্ষেত্রেও এই কারখানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, এমনকি নারায়ণগঞ্জ জেলায় অবস্থিত শিল্প সমূহের মধ্যে সর্বাধিক ভ্যাট প্রদান করে এসেছে। গত প্রায় এক বছর ধরে কারখানার মালিকপক্ষ উৎপদিত পণ্য বিক্রয়লব্ধ অর্থ পুনর্বিনিয়োগ করছে না। এমনকি তারা বিভিন্ন ব্যাংক হতে ৭০০ কোটি টাকার বেশী ঋণ নেয়া সত্ত্বেও এই লাভজনক কারখানাটির উৎপাদন স্থগিত রেখেছে। কানাডায় মালিকপক্ষ তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করার নামে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করছে বলে তাদের অভিযোগ।
[caption id="attachment_227309" align="aligncenter" width="687"]
মিছিল পূর্ব সমাবেশে বক্তারা বলেন, বহু বছর ধরে এই কারখানায় স্থায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করে বর্তমানে শ্রমিকরা বিনা বেতনে মানবেতর জীবন যাপন করছে। মালিকপক্ষ পরিকল্পিত ভাবে সময়ক্ষেপন করে করে আজ ১৩ মাস ধরে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করছে না। এমনকি পূর্বতন তিন বছরে শ্রমিকদের করা ওভারটাইম এর ভাতা বকেয়া রেখেছে। বিগত তিন বছরের অর্জিত ছুটির টাকা, ঈদ বোনাসসহ অন্যান্য পাওনা বকেয়া রেখেছে।
তারা বলেন, দেশে করোনা মহামারী পরিস্থিতি শুরু হওয়ার বেশ কয়েক মাস আগে থেকে বকেয়া বেতন পরিশোধ এবং কারখানা চালুর দাবিতে শ্রম মন্ত্রনালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে শ্রমিকরা ধর্ণা দিচ্ছে। এমনকি শ্রম প্রতিমন্ত্রী নিজে উদ্যোগী হয়েও মালিকপক্ষকে শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধে বাধ্য করতে পারেনি।
সমাবেশে বক্তারা জানান, গত ২১ এপ্রিল শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মহামারীকালীন সময়ে শ্রমিকদের বেঁচে থাকার জন্য দুই কিস্তিতে দুই মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করার চুক্তি করলেও মালিক পক্ষ পরে আর তাদের কথা রাখেননি।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা তাদের বকেয়া পাওনার বিষয়ে সুষ্ঠু সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত শ্রম ভবনে তাদের লাগাতার অবস্থান চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে।