×

বিএনপি

রাজনীতি

তারেক রহমানের দেশে ফেরায় অন্তরায় কোথায়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

তারেক রহমানের দেশে ফেরায় অন্তরায় কোথায়

তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত

   

আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলো। খালেদা জিয়ার সাজা মওকুফ হলো। বিএনপির বন্দি নেতারাও একে একে জেল থেকে বেরিয়ে এলেন। অথচ দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এখনো দেশে ফেরেননি। বিএনপির নেতাকর্মীদের কাছে যিনি দলের ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি, সেই তারেক রহমানের দেশে না ফেরা নিয়ে দলটির ভেতরে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। মামলা চলমান থাকায় তিনি কি দেশে ফিরতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন? নাকি মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত করবেন অপেক্ষা? ঘুরে ফিরে এসব প্রশ্ন সামনে আসছে।

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দেশে ফেরা প্রশ্নে বিএনপি নেতারা আগে বলতেন, সময় হলেই ফিরবেন তারেক রহমান। তবে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের প্রায় ৩ মাস হতে চললেও সেই সময় কি এখনো হয়নি? সেই প্রশ্ন উঠেছে বিএনপির কর্মীদের মধ্য থেকেই। মামলা প্রত্যাহার করে তাকে কেন দেশে ফেরানো হচ্ছে না, তা নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধও তারা। সব প্রক্রিয়া সেরে শিগগিরই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান- বিএনপি নেতারা এমন কথা বললেও কবে ফিরবেন, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে না।

তারেক রহমান কবে নাগাদ দেশে ফিরছেন?

এই প্রশ্নের সরাসরি উত্তর এড়িয়ে যান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ। ভোরের কাগজকে তিনি বলেন, হ্যাঁ তিনি ফিরবেন; মামলাগুলোর কূল-কিনারা করে তবেই ফিরবেন। বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলাগুলোর মধ্যে যেগুলোর রায়ে তার সাজা হয়েছে; এখন আইনিভাবেই তা কার্যকর থাকা উচিত নয়। অন্তর্বর্তী সরকার এটি দ্রুত নিরসন করবে, এমনটাই প্রত্যাশা।

জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান উত্তরাধিকার সূত্রেই বিএনপিতে আসেন। ২০০১ সালে বিএনপি সরকার গঠনের পর তাকে রাজনীতিতে আনতে দলে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের একটি পদ তৈরি করা হয়েছিল। মা খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে বনানীতে তার দলীয় কার্যালয় হাওয়া ভবনকে কেন্দ্র করে তারেক ক্ষমতার বিকল্প কেন্দ্র গড়ে তোলেন বলে অভিযোগ ওঠে। ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থা জারি করে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের পর দুর্নীতিবিরোধী অভিযানে তারেক রহমান গ্রেপ্তার হন।

আরো পড়ুন: দেশে ফিরলেন মির্জা ফখরুল

মামলার বাধা কোথায় কোথায় : ২০০৭-০৮ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলেই তারেকের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মামলার সংখ্যা আরো বাড়তে থাকে। দেড় দশক আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারেও নিষেধাজ্ঞা ছিল আদালতের; যা শেখ হাসিনা গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর প্রত্যাহার হয়। আওয়ামী লীগ আমলে চারটি মামলায় দণ্ড হয় তারেকের। এর মধ্যে একটি শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলা। ফলে দেশে ফিরলে তার কারাগারে যেতে হতো; সেই বাস্তবতা এখনো রয়েছে।

২০১৩ সালে তারেকের বিরুদ্ধে প্রথম মামলার রায় হয়- মামলাটি ছিল ঘুষ নেয়ার অভিযোগে। ঢাকার জজ মো. মোতাহার হোসেনের দেয়া সেই রায়ে বিতর্কিত ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের সাজা হলেও খালাস পান তারেক। সেই রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে হাইকোর্ট ২০১৬ সালে দেয়া রায়ে তারেককে ৭ বছর কারাদণ্ড এবং ২০ কোটি টাকা জরিমানা করে।

এরপর জিয়া এতিমখানা দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালে তারেকের ১০ বছর কারাদণ্ডের রায় হয়। এই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ারও সাজা হয়েছিল। অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় ২০২৩ সালে আদালত তারেককে ৯ বছরের কারাদণ্ডের রায় দেয়। তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানেরও ৩ বছরের সাজা হয় এই মামলায়।

তারেকের সর্বোচ্চ সাজার রায়টি হয় ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলায়। ২০১৮ সালে দেয়া বিচারিক আদালতের রায়ে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার দায়ে তার এই সাজা হয়। এই সবগুলো মামলায় তারেককে পলাতক দেখিয়ে তার সাজার আদেশ হয়। ফলে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার সুযোগ তার ছিল না। এখন আপিল করতে চাইলে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে তারেক রহমানকে; সে তাকে কারাগারে পাঠানো হতে পারে।

তারেক রহমান এখন দেশে ফিরলে কি তাকে কারাগারে যেতে হবে- এই প্রশ্নে বিএনপির সহআইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ ভোরের কাগজকে বলেন, মামলাগুলো থেকে খালাস বা অব্যাহতি না দিলে দেশে এলে কিছুদিনের জন্য হয়তো তাকে কারাগারে যেতে হতে পারে। তবে সরকার চাইলে সাজাপ্রাপ্ত মামলাগুলো আপিলের শর্তে জামিন পাবেন, এমন কোনো নির্বাহী আদেশ দিতে পারে- তখন দেশে ফিরতে তার কোনো বাধা থাকবে না। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত মিথ্যা মামলাগুলোর দণ্ড স্থগিত করে তাকে দেশে আসার সুযোগ করে দেয়া।

আরো পড়ুন: সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর কার কী লাভ

অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় তারেকের স্ত্রী জোবায়দা রহমানের দণ্ড স¤প্রতি সরকার নিজস্ব ক্ষমতায় স্থগিত করেছে। একইভাবে তারেক রহমানের দণ্ড স্থগিতের সুযোগও রয়েছে। তারেকের আইনজীবী মেজবাহ বলেন, যদি তারেক রহমানের সাজা হওয়া চার মামলার দণ্ড স্থগিত করা হয়, তবে তাকেও কারাগারে যেতে হবে না। তারেকের বিরুদ্ধে মামলা আছে ৮০টি। এর মধ্যে রায় হওয়া চারটিতেই এখন তার কারাগারে যাওয়ার ঝুঁকি আছে। তবে পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে দেশে ফিরলে কারাগারে যেতে হলেও তার কারাবাস যে সীমিত কালের জন্য হবে, তা মাহমুদুর রহমানের ঘটনায় স্পষ্ট। সেক্ষেত্রে তারেকের দেশে ফেরার আইনি বাধা কাটাতে বিএনপি কী করছে- জানতে চাইলে দলটির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, তারেক রহমান আইন ও আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই তার সব মামলা আইনিভাবেই মোকাবিলা করে যথাসময়ে দেশে ফিরবেন তিনি।

পাসপোর্ট জটিলতার কি কারণ 

তারেক রহমান বাংলাদেশের পাসপোর্ট নিয়ে ২০০৮ সালে যুক্তরাজ্যে গেলেও পরে আওয়ামী লীগ সরকার আমলে তার পাসপোর্ট আর নবায়ন হয়নি। তিনি কোন প্রক্রিয়ায় যুক্তরাজ্যে রয়েছেন, সে বিষয়টি কখনো খোলসা করেনি বিএনপি। ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের তৎকালীন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছিলেন, তারেক রহমান ও তার স্ত্রী-মেয়ে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ‘সারেন্ডার’ করেছেন। ব্রিটিশ হোম অফিস বাংলাদেশ হাইকমিশনে সেই পাসপোর্ট পাঠিয়ে দিয়েছে। তখন বিএনপি এর প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছিল, তারেক রহমান যদি পাসপোর্ট ফেরতই দিয়ে থাকে তাহলে তা যেন সরকার দেখায়। তবে সরকারের পক্ষ থেকে তারেক রহমানের পাসপোর্ট দেখানো হয়নি। ফলে তিনি পাসপোর্ট ফেরত দিয়েছেন কিনা, তাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে নবায়ন না হওয়ায় তারেক রহমানের হাতে বাংলাদেশের বৈধ পাসপোর্ট এখন নেই। ফলে তাকে নতুন করে পাসপোর্ট নিতে হবে। আর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তার নতুন পাসপোর্ট পাওয়াও কঠিন হবে না বলেই সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে কোন স্ট্যাটাসে রয়েছেন, তা নিয়ে নানা সময়েই কথা উঠেছিল। ২০১৫ সালে মালয়েশিয়ায় ছোট ভাই কোকোর মৃত্যুর পর কথা ওঠে, শর্ত সাপেক্ষে রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকায় তখন কুয়ালালামপুর যেতে পারেননি তারেক। তারেক যদি যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে থাকেন, তবে তাকে একটি অস্থায়ী ভিসা দেয়া হতে পারে। তা দিয়ে আবার বিদেশ সফর করা যায় না। আবার রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া হলে তার একটি ‘ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ পাওয়ার কথা। সেটা দিয়ে তিনি বিদেশে কিংবা নিজ দায়িত্বে নিজ দেশেও ফিরতে পারেন। তারেক রহমানের ক্ষেত্রে কোনটি ঘটেছে, তা কখনোই স্পষ্ট জানা যায়নি।

আরো পড়ুন: রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ইস্যুতে বিএনপির অবস্থান

২০১৪ ও ২০১৬ সালে তারেক রহমানকে সৌদি আরবে ওমরাহ ও হজ পালনে যেতে দেখা গিয়েছিল। শেষ বার দেশ থেকে খালেদা জিয়াও হজে গিয়েছিলেন। সৌদি আরবে মিলিত হয়েছিলেন দুজন। সেখান থেকে তারেক আবার লন্ডন ফিরে যান। খালেদা জিয়া এক দশক আগে লন্ডনে গেলে সেখানে তারেক রহমানের সঙ্গে তার দেখা হয়েছিল। পাসপোর্টহীন তারেক তখন ব্রিটিশ সরকারের দেয়া ট্রাভেল ডকুমেন্ট নিয়ে বিদেশ গিয়েছিলেন বলে কথা উঠেছিল।

সদ্য ক্ষমতা হারিয়ে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেয়া শেখ হাসিনাকে নয়াদিল্লি সরকার ট্রাভেল ডকুমেন্ট দিচ্ছে বলে আলোচনা রয়েছে। তিনিও এখন পাসপোর্টবিহীন। গত ৫ আগস্ট দেশ ছাড়ার পর অন্তর্বর্তী সরকার তার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করে। পাসপোর্ট না থাকলে ট্রাভেল ডকুমেন্ট নিয়ে দেশে ফেরাও যে বড় জটিলতার কোনো বিষয় নয়, তা বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনের দেশে ফেরাই প্রমাণ করে। ফলে তারেক যদি দেশে ফিরতে চান, তবে পাসপোর্ট এখানে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। ফলে তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয়েও থাকলেও, তার দেশে ফেরায় বাধা নেই। তবে তিনি যদি নিজ দেশে নিরাপদে ফেরেন, তাহলে তার রাজনৈতিক আশ্রয় আর কার্যকর থাকবে না।

জানতে চাইলে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ভোরের কাগজকে বলেন, এখানে দুটো বিষয় আছে- যদি তিনি (তারেক) আইনের সব বিষয় মান্য করেন, তবে আমাদের ‘সিআরপিসির’ মধ্যে রয়েছে তিনি কীভাবে আপিল করতে পারবেন এবং কীভাবে আপিল করে তিনি মুক্ত হতে পারবেন। আর মামলাগুলো যেহেতু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, সে কারণে সরকার যদি ইচ্ছা করে তাহলে তাকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে পারে। অব্যাহতি দিলে তারেক রহমানের দেশে ফিরতে বাধা নেই।

রাজনৈতিক বাধা কি আছে

আওয়ামী লীগ সরকার আমলে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হতো, দেশে ফিরলে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হবেন তারেক রহমান। ফলে তার দেশে ফেরা নিরাপদ নয়। তখন শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতারা বিভিন্ন সময় বলতেন, তারেক রহমান দেশে ফিরলে ‘জেলের ভাত’ খেতে হবে। ফলে ওই সময়ে তারেকের দেশে ফেরার কোনো উদ্যোগ ছিল না। কিন্তু গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় থাকলেও দেড় দশক পর রাজনীতিতে দাপটের সঙ্গে ফিরেছে বিএনপি। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরপরই তাদের আমলে দণ্ডিত খালেদা জিয়াকে সাজা থেকে অব্যাহতি দিয়ে মুক্তি দেয়া হয়। বিএনপির দণ্ডিত অনেক নেতাও মুক্তি পেয়েছেন। এমনকি যে মামলায় তারেকের সঙ্গে দণ্ডিত মামুন, তিনিও এখন মুক্ত। ফলে তারেকের দেশে ফেরার ক্ষেত্রে এই সময়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূলই দেখা যাচ্ছে। এখন বিএনপি কী চায়, তা বড় বিবেচ্য।

আরো পড়ুন: রাষ্ট্রপতি অপসারণ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত বিশেষজ্ঞদের

তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়ে তার মুখ থেকে কখনো কোনো কথা না এলেও বিভিন্ন সময়ে বিএনপি নেতারাই কথা বলেছেন। নেতারা কেউ বলছেন- সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে দেশে ফেরার সময়ের সিদ্ধান্তটা তার নিজস্ব বিষয়। কেউবা আশঙ্কা করেছেন, তারেক রহমান নিজের জীবনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই এই মুহূর্তে দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব করছেন।

বিএনপি কী করছে?

তারেক রহমান ডিসেম্বরে কিংবা জানুয়ারিতে দেশে ফিরতে পারেন, এমন একটি গুঞ্জন চলেছে। বলা হচ্ছে, সেই পথ করতেই জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের অধিকাংশ শীর্ষনেতা সম্প্রতি লন্ডনে ঘুরে এসেছেন। রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান আসাদ এর মধ্যে অন্যতম। তিনি বিএনপির সাবেক মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক। লন্ডনে থাকা এক আইনজীবী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তাকে (তারেক রহমান) ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি চলছে। সব ঠিকঠাক থাকলে ডিসেম্বরেই দেশে ফিরবেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। সরকার চাইলে যে কোনো সময়ই ফিরবেন।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রতিনিয়তই তারেক রহমানের ‘রাজনৈতিক মামলা’ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে আসছে বিএনপি। সরকারের মেয়াদ দুই মাস পূর্ণ হওয়ার পরও এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় ক্ষুব্ধ দলের নেতাকর্মী ও আইনজীবীরা দেশব্যাপী সভা, সমাবেশ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে। কর্মসূচিতে দ্রুত মামলা মামলা প্রত্যাহার না হলে আন্দোলনে রাজপথে নামারও হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন তারা। গত ১৫ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের পক্ষ থেকে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সব মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান সংগঠনটির সভাপতি সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। তিনি বলেন, অবিলম্বে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় আইনজীবী সমাজ আবারো রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে।

দলটির স্থায়ী কমিটির অপর নেতা মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, তিনি প্রস্তুতি নিচ্ছেন; তার মামলাগুলো ক্লিয়ার করা জন্য। আমরা চাই তিনি আইনগতভাবেই শুদ্ধ হয়ে তবেই দেশে ফিরে আসুন। এখানে আমরা চাপ দিলে ‘অ্যাডমিনিস্ট্রিটিভ অর্ডারে’ হয়তো তাকে মুক্তি দিতে পারে; তবে আদালতের মাধ্যমে তিনি মুক্ত হয়ে আসুন সেটাই ভালো হবে। আমাদের প্রত্যাশা তিনি দায়মুক্ত হয়েই দেশে ফিরবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আমলাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজ ও গতিশীল করার সুপারিশ

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ছানোয়ারসহ ৩ নেতা রিমান্ডে

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

অপারেশন ডেভিল হান্ট : সারাদেশে আরো ৫২৯ জন গ্রেপ্তার

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

হত্যা মামলায় মেনন, ইনু,ফারজানা ও শাকিল রিমান্ডে

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App